Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানির পশুর দাম দেড়গুণ, বিক্রী কম সবাই শেষ হাটে দাম কমার প্রতিক্ষায়

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৮ জুলাই, ২০২১, ৫:২৮ পিএম

দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানির গরুর দাম এবার যথেষ্ঠ চড়া হলেও প্রকৃত খামারি ও লালন পালকারীরা এর তেমন কোন সুফল পাচ্ছেন না। তবে কোরবানি দাতাদের এবার যথেষ্ঠ কষ্ট হচ্ছে ওয়াজিব আদায় করতে। গত তিনদিন ধরে বরিশাল সহ দক্ষিরঞ্চলের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা ছাড়াও বিভিন্ন বন্দরে অর্ধ সহশ্রাধীক পশুর হাটে কোরবনির গরু-ছাগলের কোন অভাব না থাকলেও দাম গত বছরের প্রায় দেড়গুন। অথচ পশুর কোন ঘাটতি নেই। এমনকি এবার দক্ষিণাঞ্চলের খামারী ও গৃহস্থদের নিজস্ব গরুর সাহায্যেই কোরবানির পশুর চাহিদা মেটার কথা। উপরন্তু মেহরপুর ও কুষ্টিয়া সহ উত্তরাঞ্চলেরও কোন কেন স্থান থেকে সিমিত কিছু কোরবানির পশু ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে আসছে।
কিন্তু এবার কোরবানির পশুর বাজার যথেষ্ঠ চড়া হলেও বেশীরভাগ খামারি ও গৃহস্থ পর্যায়ের লালনকারীরা আরো ১৫ দিন আগেই পাইকারদের কাছে তা বিক্রী করে দেয়ায় বর্তমান বাড়তি বাজারের সুফল তারা পাচ্ছেন না। এমনকি করোনা মহামারীর লকডাউনের কারনে অনেক খামারী ও গৃহস্থ ক্রেতা সংকটের আশংকায় আগেভাগেই পাইকারদের কাছে অনেকটা কমদামে কোরবানির পশু বিক্রী করেছেন। ফলে বর্তমান চড়া বাজারের সুফল তাদের ভাগ্যে যোটেনি।
গত বছর করোনা সংকটের মধ্যেও দক্ষিনাঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ পশু কোরবানি হয়েছে বলে জানিয়েছে বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। যার প্রায় সিংহভাগই স্থানীয় পশুর দ্বারাই মেটান সম্ভব হয়েছিল। এবারো সে ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল মহল।
প্রনিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেব মতে, এবারের ঈদ উল আজহায় কোরবনীর লক্ষে দক্ষিণাঞ্চলে খামারিগন ১ লাখ ১০ হাজার ষাড়, মহিষ,বাদল ও বাছুর ছাড়াও প্রায় ২৮ হাজার ছাগল ও দেড় সহশ্রাধীক ভেড়া হৃষ্টপুষ্ট করে প্রস্তুত করেছিলেন। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের সাধারন গৃহস্থরা যে আরো যে প্রায় ৩৪ লাখ গবাদি পশু লালন পালন করছেন, তারও একটি বড় অংশে এ অঞ্চলের কোরবানির পশুর চাহিদার প্রায় পুরোটাই মিটবে। গৃহস্থ পর্যায়ে পালন করা ৩৪ লাখ গবাদিপশুর মধ্যে শংকর জাতের গাভীর সংখ্যা প্রায় আড়াই লাখ।
প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক পশু হাটে-বাজারে উঠলেও বিক্রেতারা দাম হাকছেন গতবছরের দেড়গুনেরও বেশী। ফলে কোরবানি দাতারা এবার যথেষ্ঠ বিভ্রান্ত। বরিশাল মহানগরী থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে ঝালকাঠীর সুগন্ধিয়ার হাটে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার গরু-খাশি বিক্রী হয়ে থাকে। সঠিক দামে ও ভালমানের গরুÑখাশির জন্য এ হাটটির সুনাম থাকলেও এবার সেখানে বিভিন্ন এলাকার মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়লেও দাম শুনেই অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। এছাড়া বরিশালের চরমোনাই হাট, বৌশের হাট, গুয়াচিত্রার হাট ও কসবার হাটেরও প্রায় একই চিত্র। ফলে মাঝে মাত্র দুদিন হাতে থাকলেও দক্ষিণাঞ্চলের সিংহভাগ মনুষই এখনো কোরবানির পশু কিনতে পারেন নি।
অনেক ক্রেতাই অপেক্ষায় আছেন দাম কমার। এমনকি অনেকেই মঙ্গলবারের শেষ হাটের প্রতিক্ষায় রয়েছেন। অনেকেরই হিসেব যেহেতু এবার কোরবানির পশুর কোন ঘাটতি নেই, উপরন্তু কোরবানি দাতার সংখ্যাও তেমন বৃদ্ধির সম্ভবনা নেই, সেহেতু গরুÑখাশি বিক্রী করতে হলে দমে ছাড় দিতেই হবে। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পক্ষে অনেক ক্রেতা।
গত দুদিন বেচা কেনা কিছুটা হলেও শণিবারের তুলনায় রোববার বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে গরুর দাম ১০ভাগ পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে। যা অনেকটাই আশার খবর ছিল ক্রেতাদের কাছে। এটা সোমবার থেকে কোরবানির পশুর বাজার যে আরো কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে নামবে, তার ইংগিত বলেও মনে করছেন কেউ কেউ।
অপরদিকে অনলাইনে এবার দক্ষিণাঞ্চলেও কোরবানির পশু বিক্রী শুরু হলেও সোমবার পর্যন্ত এ অঞ্চলে হাজার দুয়েকের বেশী গরু বিক্রী হয়নি। করোনা মহামারি সংকটে পশুর হাটে জনসমাগম কমাতে সরকার এবার অন লাইনে কোরবানির পশু বিক্রীকে উৎসাহিত করছে। এলক্ষে দক্ষিণাঞ্চলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ব্যাপক তৎপর হলেও বিষয়টি নতুন বিধায় এখনো তা অতটা জনপ্রিয়তা অর্জন করেনি বলে মনে করছেন ওয়াকিবাহল মহল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ