পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিনেই অবরুদ্ধ রাজধানী ঢাকা। ঢাকার চারিদিকে সবগুলো মহাসড়কে দিনভর যানজট। রাজধানীতে প্রবেশ ও বের হতে সীমাহীন ভোগান্তি। অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তৃতীয় দিনের মতো ভয়াবহ যানজট। থমকে ছিল ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-আশুলিয়া, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। একমাত্র ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে বাদে সবগুলো মহাসড়কে যানজটে অনেকটা অবরুদ্ধ রাজদানী। অন্যদিকে, ফেরিঘাটগুলোতেও গাড়ির সারি, গাড়ির জট। পারাপারের অপেক্ষায় হাজার হাজার যানবাহন। পুলিশ জানায়, মহাসড়কে কোরবানির গরুবাহী ট্রাক ও ঘরমুখো মানুষের ভিড়ে যানবাহনের চাপে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঈদের আগে এ পরিস্থিতি উন্নতির কোনো আশা দেখছেন না হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা।
আমাদের গজারিয়া (মুন্সিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া অংশে গতকাল ১৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। উপজেলার জামালদী থেকে বাউশিয়া পাখির মোড় পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এমন বড় ধরনের যানজট লাগল। গত মঙ্গলবার সকাল থেকে মহাসড়কে এই যানজট শুরু হয়।
ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ কামাল উদ্দিন জানান, সেতু সংস্কারের কাজ চলায় গজারিয়া অংশে যানজট রয়েছে। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করতে হাইওয়ে পুলিশ সব ধরনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এদিকে, বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথমদিনে রাজধানীতে প্রবেশের তিন পথ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাল সড়কের বিভিন্ন স্থানে তীব্র যানজট দেখা দেয়। এ সময় এ তিন সড়কে প্রায় ১৫ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়। এতে সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রয়েছে কোরবানির পশুবাহী ও যাত্রীবাহী পরিবহন। গতকাল সকাল থেকেই আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের সব স্থানে এমন যানজটের চিত্র দেখা গেছে। ভুক্তভোগিরা জানান, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের রেডিও কলোনি এলাকা থেকে গেন্ডা পর্যন্ত চার কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। আশুলিয়ার নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের চক্রবর্তী থেকে বাইপাইল পর্যন্ত নবীনগরগামী লেনে পাঁচ কিলোমিটার যানজট। এছাড়া আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাল সড়কের বাইপাল থেকে বেরিবাঁধ পর্যন্ত প্রায় আট কিলোমিটার সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় রাজধানী কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দীর্ঘ ৮ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলার বরপা, রূপসী, কাঞ্চন, ভুলতায় সরেজমিনে গিয়ে এ যানজটের চিত্র দেখা যায়। যানজটের কারণে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যানজটের অন্যতম কারণ হিসেবে ঈদকে সামনে রেখে হাইওয়ে পুলিশের চাঁদাবাজি, যত্রতত্র গাড়ি উঠানামা, নিয়ম না নেমে গাড়ি চলাচলসহ রাস্তার পাশে মালবাহী ট্রাক থামিয়ে রাখার কারণে যানজটের সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। গণপরিবহণ গুলোর নিয়ম ভেঙ্গে বেপরোয়া চলাচল, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা কারণে যানজট আটকে রয়েছে। আবার কোন কোন বাসকে সড়কের মাঝেই যাত্রী উঠাতে নামাতে দেখা গেছে।
সিরাজগঞ্জ থেকে সৈয়দ শামীম শিরাজী জানান, সিরাজগঞ্জ বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতুর পশ্চিম অংশের সংযোগ সড়কে ব্যাপক হারে র্দীঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের পোহাতে হচ্ছে । বলাবাহল্য, এই অংশে হরহামেশাই যানজটের সৃষ্টি যেন রেওয়াজের পরিণতি হয়েছে। এ থেকে রেহাই পাওয়ার যেনো কোন পথ নেই। গাড়ির চাপ বৃদ্ধি, মহাসড়কে খানাখন্দ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্রিজে যান চলাচল ব্যাহত হওয়ায় সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কে ধীরগতিতে চলছে যানবাহন। মহাসড়কের কড্ডা ও নলকা ব্রিজের অন্তত ১০ কিলোমিটারব্যাপি সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজটের।
টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা জানান, কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল হওয়ায় যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন মহাসড়কে চলতে শুরু করেছে। গাড়ির চাপ বাড়ায় ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতুপূর্ব মহাসড়কে থেমে থেমে যানজট সৃষ্টি হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার মহাসড়কের করটিয়া থেকে কালিহাতীর এলেঙ্গা পর্যন্ত যানচলাচলে ধীরগতি দেখা যায়। চালকরা বলেছেন, মহাসড়কের করটিয়া থেকে উত্তরবঙ্গমুখী সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। মাঝে মধ্যে যানজট বেড়ে যাচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও ধীরগতিতে যান চলছে। গণপরিবহন চালু হওয়ায় সড়কে যাত্রীদের চলাচল বেড়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, সড়কে স্বাভাবিক গতিতে যানবাহন চলাচল করছে।
মোজাম্মেল হক, গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) থেকে জানান, দেশের দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশ দ্বার খ্যাত গুরুত্বপূর্ণ দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে ঢাকা ফেতর যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়। সরকার ঘোষিত লকডাউন শিথিল হওয়ায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়ছে। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট ব্যবস্থাপক মো. সিহাব উদ্দিন বলেন, এ নৌরুটে বড় রো রো ফেরি চলছে ৮ টি , ইউটিলিটি ছোট ফেরি চলছে ৭ টি। ছোট বড় সব মিলে মোট ১৫ টি ফেরি চলাচল করছে। তবে পশুবাহী ট্রাক গুলো অগ্রঅধিকার বৃত্তিতে পারাপার করছে।
মো. শওকত হোসেন, লৌহজং (মুন্সিগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় ঈদের আগেই রাজধানী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌ-রুটের শিমুলিয়া ঘাটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হলেও চলছে না স্পিডবোট। গতকাল সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে উভয়মুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ দেখা গেছে। অতিরিক্ত চাপের কারণে ঘাটে পণ্যবাহী ট্রাক এবং ব্যক্তিগত ও গণপরিবহনে আসা যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। এদিকে গতকাল সকাল থেকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় ফেরিতে যাত্রীর চাপ ও গাদাগাদি কমে এসেছে। তবে লঞ্চগুলোতে মানা হচ্ছে না নির্দেশিত স্বাস্থ্যবিধি। বিআইডব্লিউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহম্মেদ দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সকাল থেকে শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী চাপ থাকলেও লঞ্চ চলাচল করায় ফেরিতে যাত্রী চাপ কম রয়েছে। তবে যানবাহনের চাপ রয়েছে। ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় ৫ শতাধিক যানবাহন। সকাল থেকে এ রুটে ১১টি ফেরি চলাচল করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।