চেয়ারম্যান চাল উত্তোলন করেছে। কিন্তু কার্ডধারী ভুক্তভোগীদের চাল কার্ডধারী অসহায় দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী অসহায় দরিদ্র নারীরা ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রিয়াজউদ্দিন এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়ে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করার কথা জানান। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে জানিয়েছেন।
ভিজিডির উপকারভোগী মহিলা তালিকায় ৯নং ওয়ার্ডের চককবির পালপাড়া গ্রামের গরীব অসহায় গজেন চন্দ্রের স্ত্রী সুবাসীনি রানী জানান,ভিজিডি চক্রের ২০২১-২০২২ অনলাইন তালিকায় তার নাম থাকলেও একবারেও চাল দেয়া হয়নি তাকে। একইভাবে একই ওয়ার্ডের উপকারভোগী বিউটি রানীর অভিযোগ ভিজিডির চাল প্রতিমাসে দেবার কথা থাকলেও সময়মত চালগুলো তাদেরকে দেয়া হয়না। একই অভিযোগ করেন মিনু রানীসহ ওই ইউনিয়নের ভিজিডি চক্রের তালিকাভূক্ত একাধিক উপকারভোগী। ভিজিডি চক্রে অনলাইন তালিকায় নাম থাকা কয়েকজন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাল বিক্রিরও অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ উঠেছে ভিজিডি চক্রের বেশীরভাগ তালিকাভূক্তরাই চাল পাননা ওই নামের চালগুলো বিক্রির কথাও বলেন ভূক্তভোগীরা। ২০২১-২০২২ অনলাইন তালিকায় নাম থাকা ৪৪০জন উপকারভোগীদের ভিজিডি কার্ড নিয়ে সঠিক তদন্ত করা হলে ৭নং শিবনগর ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডেই সঞ্চয়ের টাকা চেয়ারম্যানের পকেটে রেখে দেয়াসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র ফুটে উঠবে এমন অভিযোগ ভূক্তভোগীদের।
জানা যায়,করোনাকালীন এই মহামারীতে কর্মহীন হয়ে পড়া শিবনগর ইউনিয়নের ভিজিডির উপকারভোগী ৪৪০জনের বিপরিতে মে ও জুন মাসের ২৬.৪০০মে.টন চাল দীর্ঘদিন আগে উত্তোলন করা হলেও ওই চাল উপকারভোগিদের মাঝে বিভিন্ন অজুহাতে সময়মত বিতরণ করেননি চেয়ারম্যান। অপরদিকে উপজেলার অন্য ইউনিয়নগুলোতে মে মাসের ভিজিডির চাল ২৫ মে এবং জুন মাসের ভিজিডির চাল ১৪জুন বিতরণ করা হলেও শুধুমাত্র শিবনগর ইউনিয়নে সময়মত চাল বিতরণ না করায় হতাশ হয়ে পড়েছেন নি¤œ আয়ের ভিজিডি চক্রের ৪৪০জন উপকারভোগী। করোনাকালীন কর্মহীন ভিজিডি চক্রের উপকারভোগীরা সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানের কাছে ধরণা দিয়েও কোন কুল কিনারা না পেয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রীতা মন্ডল জানান,শিবনগর ইউপি চেয়ারম্যান তাদের কোন সরকারী নির্দেশনা মানেন না। ভিজিডির সরকারী চাল উত্তোলনের পর তিনি কোনভাবেই সেগুলো বিতরণ না করে দীর্ঘসময় রাখতে পারেন না। প্রতিজন ভিজিটি উপকারভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা একাউন্টে জমা হবার কথা থাকলেও তিনি (চেয়ারম্যান) তার নিজের কাছে টাকা রেখে দিয়েছেন। এমনকি ভিজিডির উত্তোলনকৃত চাল বিতরণের জন্য ট্যাগ অফিসার নেবার কথা থাকলেও তিনি ট্যাগ অফিসার না নিয়ে ইচ্ছেমত চাল বিতরণ করেন।
এসব বিষয়ে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন,ইউনিয়ন সচিবের সাথে ঝামেলা ও তার ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে ভিজিডির দুমাসের চাল বিতরণে দেরী হওয়ার কথা স্বীকার করেন। ভিজিডি চক্রের উপকারভোগীদের লিখিত অভিযোগ এর বিষয়ে তিনি বলেন,যারা অভিযোগ করেছে তাদের বাদ দিয়ে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ট্যাগ অফিসার নিতে হবে এরকম কোন বাধ্যবাধকতা আছে জানা নেই তার বলেও জানান তিনি।
এবিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন বলেন,ভিজিডি চক্রের ২০২১-২০২২ অনলাইন তালিকাভূক্ত উপকারভোগীদের বাদ দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান তাঁর ইচ্ছেমতো চাল বিতরণ করতে চান,এটি বন্ধ করা হলেই তিনি চাল বিতরণ বন্ধ করে দেন। সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান কোন সরকারী নির্দেশনা মানেননা। তিনি জানান এসব বিষয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।