পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মৌসুমী বায়ু ফের সক্রিয় হয়েছে। জানান দিচ্ছে- ভরা বর্ষা ঋতুর এখন মধ্যভাগ। আষাঢ় মাসের আজ শেষ দিন। পয়লা শ্রাবণ আগামীকাল। গত কয়েকদিনের ‘অকাল’ তাপপ্রবাহ কেটে গেছে। দেশের অনেক এলাকায় মেঘ-বাদলের আবহ তৈরি হয়েছে। যদিও মৌসুমের এ সময়ের স্বাভাবিক হারের তুলনায় বৃষ্টিপাত আপাতত কম। বলা যায় প্রায় থমকে আছে বর্ষণ।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গুঁড়ি গুঁড়ি হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ সময়ে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড উত্তর জনপদের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় ১২৯ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে তেমন বৃষ্টি ঝরেনি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল রাজশাহীতে ৩৫.৭ ও সর্বনিম্ন সন্দ্বীপে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার পারদ সর্বোচ্চ ৩৪.৫ ও সর্বনিম্ন ২৭.৭ ডিগ্রি সে.।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ মুহম্মদ আরিফ হোসেন জানান, রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি, বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে। এরপরের ৫ দিনে আবহাওয়ার উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। আবহাওয়া বিভাগ জানায়, মৌসুমী বায়ুর বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ ভারতের রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, ওডিশা এবং গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে উত্তর-পূর্ব দিকে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয়। তবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে দুর্বল থেকে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
নদীভাঙন অব্যাহত
বর্ষার মৌসুমী বায়ু আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরফলে উজানে ভারতে ও দেশের অভ্যন্তরে অনেক স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। প্রধান নদ-নদীসমূহ, শাখা-প্রশাখা ও উপনদীগুলোতে পানি কোথাও বৃদ্ধি, কোথাও হ্রাস পাচ্ছে। আবার কোথাও পানি স্থিতিশীল বা অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল বুধবার আবারও বৃদ্ধি পায় তিস্তা, সুরমা, কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এর পাশাপাশি উত্তরাঞ্চলে তিস্তা-ধরলা, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদী অববাহিকা থেকে শুরু করে উত্তর-মধ্যাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, মধ্যাঞ্চল হয়ে পদ্মা-মেঘনার ভাটি ও মোহনা পর্যন্ত নদীভাঙন অব্যাহত রয়েছে। নদীভাঙনে দিশেহারা হাজারো পরিবার। বসতঘর, ফল-ফসলি জমি, রাস্তাঘাট, বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজারসহ বিভিন্ন স্থাপনা গিলে খাচ্ছে নদ-নদী।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের ১০৯টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ৩৪টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৭টিতে হ্রাস পায়। ৭টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত থাকে। মঙ্গলবার নদ-নদীর ৪১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৩টিতে হ্রাস পায়। সোমবার ৩৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৭টিতে হ্রাস পায়। রোববার ৪১টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৬৩টিতে হ্রাস পায়।
নদ-নদীসমূহের সর্বশেষ প্রবাহ পরিস্থিতি ও পূর্বাভাসে পাউবো জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টায় তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত পাউবোর তথ্য-উপাত্তে তিস্তা নদী ডালিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
ব্রহ্মপুত্র নদের পানি হ্রাস পাচ্ছে, অন্যদিকে যমুনা নদে পানি স্থিতিশীল রয়েছে। উভয় নদ-নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি স্থিতিশীল রয়েছে। যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। সুরমা ব্যতীত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকায় নদ-নদীসমূহের পানি স্থিতিশীল রয়েছে। যা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ২৪ ঘণ্টায় উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী, কোথাও কোথাও অতি ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে। এরমধ্যে দার্জিলিংয়ে ১০৮, চেরাপুঞ্জিতে ৯১, আইজলে ৬৩, গ্যাংটকে ৫৮, জলপাইগুড়িতে ৪৮, তেজপুরে ৪৪ মিলিমিটারসহ বিভিন্ন স্থানে ভারী বর্ষণ হয়। অন্যদিকে এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন স্থানে মাঝারি থেকে ভারী ও অতি ভারী বর্ষণ হয়েছে। এরমধ্যে সিলেটের লালাখালে ১২৬, জাফলংয়ে ৯৮, ছাতকে ৮৬, শেওলায় ৭৮, সুনামগঞ্জে ৭০, কমলগঞ্জে ৬৩ মি.মি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পাউবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।