বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
লকডাউন শিথিল করে বুধবার (১৪ জুলাই) রাত থেকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন সাপেক্ষে গণপরিবহন চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। ঈদ উপলক্ষে গণপরিবহন চালুর এই খবরে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলোতে শুরু হয়েছে পরিবহন সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা। চলছে কাউন্টার ও গাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। গাড়িগুলোর ব্যাটারি ও ইঞ্জিন পরীক্ষা করছেন শ্রমিকরা।
পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদ উপলক্ষে সাত দিন গণপরিবহন চালুর ঘোষণায় পরিবহন শ্রমিক-মালিক সবাই অনেকটা স্বস্তিতে। আগামী সাত দিন গাড়ি চললে পরিবার নিয়ে অনেকটাই ভালোভাবে থাকতে পারবেন তারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুই সিটে একজন করে যাত্রী পরিবহনের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে। এই সাতদিনের পর যেন পরিবহন চলাচল বহাল থাকে এই দাবিও তোলেন তারা।
মঙ্গলবার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রজ্ঞাপন জারির খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা গাবতলী বাস টার্মিনালে এসে জড়ো হচ্ছেন। নিজেদের কাউন্টারগুলো খুলে স্যানিটাইজার, স্যাভলন, ডেটল দিয়ে পরিষ্কার করছেন। ময়লা পরিষ্কার করে আবারও নতুন করে কাজ শুরু করার চেষ্টায় রয়েছেন তারা। সবার মনে যেন এক ধরনের প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
তিশা পরিবহনের কাউন্টার ম্যান বলেন, কাউন্টার ধোয়া-মোছার কাজ করছি। গাড়ি চালানোর পারমিশনে আমরা খুশি। ঈদ উপলক্ষে গাড়ি চলবে। লোকজন বাড়ি যাবে। গাড়ি চালানোর সুযোগ আমাদের জন্য অনেক আনন্দের। ঈদ এবার ভালো কাটবে।
স্টারলাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যান বলেন, পরশু থেকে গাড়ি চলবে। এখানে জীবাণুনাশক দিয়ে সবকিছু পরিষ্কার করছি।
খন্দকার ওমর ফারুক নামে একজন বাস মালিক বলেন, রাস্তায় গাড়ি চললে চালক, সুপারভাইজার, মালিকরা কিছু টাকা পাবে। এটা খুবই অনন্দের খবর তাদের জন্য। আমরা যারা মালিক তাদের অবস্থাও খুবই খারাপ। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, সরকার এই করোনায় সব সেক্টরে প্রনোদনা দিলেও পরিবহন সেক্টরে কিছুই দেয়নি। এতে করে সব মালিকেরই পথে বসার অবস্থা। তিনি বলেন, লকডাউন শিথিল হলে সব ধরনের পরিবহন যেন চলে। যখন পেটে ভাত থাকে না তখন মৃত্যুর ভয় কেউ করে না। প্রত্যেক শ্রমিকের সংসার আছে, বাচ্চা আছে। পরিবহন বন্ধ থাকলে তাদের অনেক কষ্টে দিন অতিবাহিত করতে হয়।
পরিবহন শ্রমিক আতাউর বলেন, বাস চললে আমরা পরিবহন শ্রমিক হিসেবে কিছুটা খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবো। আমরা করোনা দেখে ভয় পাই না। আমরা লকডাউন দেখে ভই পাই, কারণ পেটে ভাত না থাকলে মাথায় কোনও কিছু কাজ করে না। রাস্তায় গণপরিবহন ছাড়া কিন্তু সব ধরনের যানবাহন চলছে এবং সেসব যানবাহনে যাত্রী পরিবহন হচ্ছে, লোকজন বেশি টাকা দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছে। কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। পরিবহন শ্রমিক হিসেবে আমার চাওয়া দূরপাল্লার দূরত্বের গাড়িগুলো যেন চলে।
পরিবহন শ্রমিক আমিনুল ইসলাম বলেন, লকডাউনের মধ্যেই অনেক প্রাইভেট কার, হায়েস মাইক্রোবাস গাদাগাদি করে বিভিন্ন গন্তব্যে দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন করছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হচ্ছে। প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘করোনা কি শুধু গণপরিবহন আর স্কুলে?’
গাবতলীর বিভিন্ন এলাকা এবং বাস টার্মিনালে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণ জনগণ গণপরিবহন চালুর বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। তাদের মধ্যে অনেকটা স্বস্তি বিরাজ করছে।
আমিন বাজারের বাসিন্দা রনি। রাজধানীর মতিঝিলে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। চার বছর ধরে বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত রনি আমিনবাজার থেকে মতিঝিলে অফিস করে আসছিলেন। চলমান লকডাউনকে কেন্দ্র করে অফিস করতে হয়েছে তার। অনেক সময় ভেঙে ভেঙে হেঁটে ও রিকশায় পৌঁছাতে হয়েছে অফিসে। ফলে ভাড়া গুণতে হয়েছে দুই থেকে তিনগুণ। রাজধানীর গাবতলী চেকপোস্টে রনির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গণপরিবহন চালু খবরে তিনি খুবই খুশি। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অফিস করতে তার নানা যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে। তিনি বলেন, গণপরিবহন চালু হচ্ছে, এটা চালু থাকুক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমরা চলাচল করবো। আমাদের কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।