পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু কেনাবেচা শুরু হয়েছে সারাদেশেই। করোনা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে পশুর হাট বসলেও সংক্রমণ এড়িয়ে পশু কেনাবেচার জন্য চালু করা হয়েছে ডিজিটাল হাট। অনলাইন মাধ্যমে এক হাজার ৫৬২টির বেশি হাটের আয়োজন করা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে। এসব হাটে ক্রেতারা কোরবানির হাজার হাজার পশু দেখতে পারছেন, ঘরে বসেই করতে পারছেন যাচাই-বাছাই, পশুর বর্ণনা, লালন-পালন পদ্ধতি, বর্তমান অবস্থান, ওজন, দাম ও পছন্দ হলে যোগাযোগের নাম্বারসহ সবই হচ্ছে ভার্চুয়ালি। চাইলে কোন ক্রেতা এসব পশু স্বশরীরে গিয়ে দেখারও সুযোগ দিচ্ছেন খামারি ও কৃষকরা।
প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুয়ায়ি, গত ২ জুলাই থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশের অনলাইন হাট থেকে ইতোমধ্যে এক লাখ ৫৭ হাজার ২৮৯টি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ২৭ হাজার ৫৫২টি গরু ও মহিষ এবং ২৭ হাজার ৭৩৭টি ছাগল ও ভেড়া। এসব পশুর বিক্রি মূল্য ১১শ’ ১৬ কোটি ৮ লাখ ৮৬ হাজার ৩০০ টাকা।
অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ২ জুলাই অনলাইন পশুর হাটের কার্যক্রম শুরু হয়। এবার অনলাইনে মোট এক হাজার ৫৬২টি কোরবানির হাটের আয়োজন করা হয়েছে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে। এর মধ্যে সরকারি উদ্যোগ ৫৩০টি এবং বেসরকারি উদ্যোগ ২১১টি পরিচালিত হচ্ছে। তবে এর বাইরেও অনেকে ব্যক্তি পর্যায়ে অনলাইনে পশু বিক্রি করছেন। অনেক কৃষক ব্যক্তি উদ্যোগে, আবার কেউ কেউ কয়েকজন মিলে একেকটি হাটের আয়োজন করেছেন। খামারিদেরও রয়েছে পৃথক পৃথক অনলাইন পশুর হাট। সরকারি উদ্যোগে রাজধানীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ডিজিটাল পশুর হাট, সারাদেশের জেলা প্রশাসনের উদ্যোগেও শুরু হয়েছে ভার্চুয়াল মাধ্যমে অনলাইন হাট। এসব হাটে এবার সর্বমোট ৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৫০টি কোরবানির পশু বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে।
উদ্যোক্তারা বলছেন, দেশে যেভাবে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে এবার হাটের চেয়ে অনলাইনে পশু কেনাবেচা বেশি হবে। কারণ সাধারণ মানুষ এখন সচেতন হচ্ছে, সরকারও সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা বলেন, করোনার মধ্যে হাটে গিয়ে ভীড় করলে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাবে। এর চেয়ে ঘরে বসে অনলাইনে পশু অর্ডার করলে একদিকে যেমন সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব হবে। অন্যদিকে লাখ লাখ পশুর মধ্য থেকে দেখে-শুনে-যাচাই করে ক্রেতারা কিনতে পারবেন। পাশাপাশি বিক্রেতারা ক্রেতাদের বাড়িতে পর্যন্ত কোরবানির পশু পৌঁছে দিচ্ছেন।
ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে ডিজিটাল হাট বাস্তবায়ন করছে ই-কমার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ ডেইরী ফার্ম এসোসিয়েশন। গত ৭ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত এই হাটে ১৮৯টি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ১৬০টি গরু ও ২৯টি ছাগল-ভেড়া। তবে যেগুলো কেবল অনলাইনে পেমেন্ট হচ্ছে তার তথ্যই ই-ক্যাবের কাছে থাকছে। সরাসরি পেমেন্ট করলে সেটি হিসেবের বাইরে বলেও জানান তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই হাটে রাজধানীর মানুষই পশু কেনে। তাই কোরবানির সাত থেকে তিন দিন আগে সবচেয়ে বেশি পশু বিক্রি হবে। ডিজিটাল হাটে গড়ে ৮৭ হাজার টাকার গরু ও ১২ হাজার ৫০০ টাকার ছাগল বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে করোনা মহামারীতে কোরবানির পশুর হাটের জনসমাগম ঠেকাতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে চালু হওয়া ডিজিটাল হাট সম্প্রসারিত করে এখন দেশব্যাপী করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের যৌথ উদ্যোগে দেশব্যপী এই ডিজিটাল হাট উদ্বোধন করা হবে বলে জানা গেছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা বলেন, গত বছর ৯৪ লাখ ৫০ হাজারের মতো পশু কোরবানি হয়েছে। তার মধ্যে অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার। এবার এখন পর্যন্ত এক লাখ ৫৭ হাজার ২৮৯টি পশু অনলাইনে বিক্রি হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার করোনা পরিস্থিতি খারাপ। তাই অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির সম্ভাবনাও বেশি।
অনলাইনে কোরবানির পশু বিক্রির কার্যক্রম কীভাবে নজরদারি করা হচ্ছে জানতে চাইলে উপপরিচালক (খামার) জিনাত সুলতানা বলেন, ‘খামারিরা আমাদের কাছে আসছেন অথবা খামারিদের নিজস্ব ফেসবুক পেজ, ওয়েবসাইটসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাঁরা পশুর তথ্য আপলোড করছেন। সারা দেশে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন। তাদের মাধ্যমে খামারির আপলোড করা পশুর সুস্থতা, ওজন, দাম নজরদারি করছি। কেউ অসুস্থ পশু বা ভুল তথ্য দিলে তা সরিয়ে দিচ্ছি।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা. দেবাশীষ দাশ বলেন, করোনা আসার পরে অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রি জোরদার হয়েছে। গতবারের তুলনা এ বছর অনলাইনে গবাদিপশু বিক্রির পরিস্থিতি ভালো। গতবারের তুলনায় মানুষ বেশি সচেতনও হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এবার প্রয়োজনের তুলনায় কোরবানির পশু বেশি। ভারত বা অন্য দেশ থেকে পশু আমদানি নিষিদ্ধ রয়েছে। চোরাইপথে যাতে কোরবানির পশু দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়-বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।