Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টানা বর্ষণে বীজতলা প্লাবিত

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) থেকে | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০২১, ১২:০২ এএম

আশাশুনি উপজেলায় গত কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে আমন ধানের বীজতলা নিমজ্জিত হওয়ায় কৃষকদের দুশ্চিন্তা রেড়ছে। উপজেলার সকল ইউনিয়নে পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে আছে। একটানা গত কয়েক দিন বৃষ্টিপাত হলে বৃষ্টির পানি ধারণক্ষমতা যেমন উপজেলার বিলগুলোর নেই, তেমনি দ্রুত পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থাও নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলার কাদাকাটি, দরগাপুর, কুল্যা, খাজরা, বুধহাটা ও বড়দল ইউনিয়নে আমন ধানের চাষ বেশি হয়ে থাকে। ধান চাষিরা বৃষ্টির আগমনে বীজতলার কাজ শুরু করেছেন। মৌসুমের শুরুতে বীজতলা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। সাথে সাথে অনেক চিংড়ি ঘেরও জলমগ্ন হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি এই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না করা যায়, তাহলে বীজতলা সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে যাবে। তখন চাষিদের আবার পুনরায় বীজতলা তৈরি করতে হবে।

এ ব্যাপারে চাষি আসাদ, সবুজ ও বাবুসহ কাদাকাটি এলাকার অনেক আমন চাষি জানান, তারা বিভিন্ন জাতের আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছেন। কয়েকদিন ভারী বৃষ্টির কারণে বীজতলা জলমগ্ন হয়।

গত রোববার প্রচুর বৃষ্টির কারণে বীজতলা সম্পূর্ণ তলিয়ে গেছে। এমুহূর্তে যদি পানি নিষ্কাশন করা না যায়, তাহলে তাদের বীজ তলার বহু ক্ষতি হয়ে যাবে। তারা আরো জানায়, বর্তমান পানি নিষ্কাশনের খালগুলো দখলদারদের দখলে চলে গেছে। তারা নেট পাঠা দিয়ে খালের পানি সরবরাহ বাধাগ্রস্থ করে রেখেছে। ফলে পানি নিষ্কাশনে খুবই অসুবিধা হচ্ছে। বিশেষ করে গেটের খালগুলোতে নেটপাটা দিয়ে আটকে রেখে মাছ চাষ করায় সমস্যা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে কাদাকাটি গ্রামের চাষি গোলাম রাব্বি জানান, অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষ ও সরকারি খালগুলো দখলদাররা আটকে রাখার কারণে তাড়াতাড়ি পানি নিষ্কাশন হচ্ছে না। যে কারণে চিংড়ির ঘেরগুলোও হুমকির মুখে পড়েছে। তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ক্ষুদ্রচাষি আছাদ জানান, তিনি আশাশুনি মৎস্য অফিস থেকে ৭২/২৭২০ বীজ ধান পেয়েছেন। সেই বীজ ধান বীজতলা তৈরি করেছেন। কিন্তু এই ভারী বর্ষণের কারণে বীজতলা সম্পূর্ণ পানিতে প্লাবিত হয়েছে। দ্রুত পানি নিষ্কাশিত না হলে তাকে আবার ধান কিনে বীজতলা করতে হবে। ধান কিনে পুনরায় বীজতলা তৈরি করার সামর্থ তার নেই। এ প্রসঙ্গে আশাশুনি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাজিবুল হাসান বলেন, আশাশুনি উপজেলা তথা সাতক্ষীরা জেলায় পানিবদ্ধতার সমস্যা প্রকট। আমরা এদিকে লক্ষ্য রেখে পানিতে ডুবে বেশীদিন থাকতে পারে এমন জাতের ধানবীজ ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ ও সরকারিভাবে সরবরাহ করে থাকি। এবছর উপজেলায় সাড়ে ৯ হাজার থেকে ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। সম্প্রতি অতিবৃষ্টিপাতের ফলে আশাশুনির সকল এলাকায় বীজতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। ১৫ দিন মত পানিতে নিমজ্জিত থাকলেও বীজতলার সমস্যা হবে না। যদি আর বৃষ্টিপাত না হয় এবং দ্রুত পানি সরে যায় তাহলে সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ