Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৭ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ওয়াসার আদেশ স্থগিত করলেন হাইকোর্ট

সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলায় প্রকৌশলীকে ডিমোশন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

সংবাদমাধ্যমকে তথ্য প্রদান করায় ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হককে পদানতির (ডিমোশন) আদেশ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। এক রিট পিটিশনের শুনানি শেষে গতকাল রোববার বিচারপতি এম.ইনায়েতুর রহিমের ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মোজাম্মেল হকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এসএস আরেফিন জুননুন।

আদেশের বিষয়ে তিনি জানান, গত ৪ জুলাই ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খানের স্বাক্ষরিত চিঠিতে ঢাকা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হককে পদাবনতির সিদ্ধান্ত জানানো হয়। অথচ ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান ছুটিতে দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি কোনো চিঠিতে স্বাক্ষর করতে পারেন না। এ কারণে রিট দায়ের করা হয়। ব্যারিস্টার জুননুন আরও জানান, ২০১৭ সালের জুলাই ও আগস্টে তিনটি জাতীয় দৈনিকে ঢাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, খাল ও জলাবদ্ধতা বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই পত্রিকাগুলোর প্রকাশিত প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার তৎকালীন ড্রেনেজ সার্কেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোজাম্মেল হকের মতামত উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওয়াসার ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে তদন্ত কমিটি গঠন করে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ। সংস্থার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রূহুল আমিনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি গত বছরের ২১ ডিসেম্বর প্রকৌশলী মোজাম্মেল হককে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অভিযোগের বিষয় উদ্ঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট পত্রিকার প্রতিবেদকদের বরাবর ৫ বার চিঠি দেয়া হলেও কোনো সাড়া আসেনি। পরে প্রতিবেদকদের সঙ্গে সশরীরে দেখা করেন তিনি (রূহুল আমিন)। সে সময় তারা (প্রতিবেদকরা) এ বিষয়ে লিখিত বক্তব্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। তবে তারা জানান, প্রতিবেদনে প্রকাশিত মতামত প্রকৌশলী মোজাম্মেল হকের সঙ্গে কথা বলে তুলে ধরা হয়েছে। আর মোবাইল ফোনে তারা (প্রতিবেদকরা) এ মতামত নিয়েছেন তার (প্রকৌশলী মোজাম্মেল হক) কাছ থেকে।

তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশে বলা হয়, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ চাকরি প্রবিধানমালা-২০১০ এর ৩৭(৬) উপধারা মতে, কর্তৃপক্ষের বিষয়াদি সম্পর্কে সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ স্থাপন করে বিবৃতি প্রদান করা আইনত নিষিদ্ধ বিধায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা যুক্তিযুক্ত। ৮ জানুয়ারি ঢাকা ওয়াসার সচিব দ্বিতীয় দফায় প্রকৌশলী মোজাম্মেল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশে বলা হয়, ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন প্রতিধানমালা ২০১০-এর ৩৭-এর ৬ প্রবিধি মতে, ‘কোনো কর্মচারী কর্তৃপক্ষের বিষয়াদি সম্পর্কে সংবাদপত্র বা অন্য কোনো গণমাধ্যমের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না’ মর্মে উল্লেখ রয়েছে। এ বিধান থাকা সত্তে¡ও আপনি সংস্থার একজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হয়েও সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছেন।

এতে কর্তৃপক্ষের সুনাম ও ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এছাড়া এরূপ কার্যকলাপ ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (কর্মকর্তা ও কর্মচারী) চাকরি প্রবিধানমালা-২০১০ এর ৩৮(খ) প্রবিধিমতে অসদাচরণ বলে গণ্য। আপনার এরূপ কার্যকলাপ অফিস শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও গুরুতর শাস্তিযোগ্য অপরাধের শামিল। তার প্রেক্ষিতে আপনি কারণ দর্শানোর জবাব দিয়েছেন, যেটা কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তোষজনক না হওয়ায় আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে। ২০১৭ সালের ১২ নভেম্বর রুজু করা ওই বিভাগীয় মামলা নম্বর ১২/১৭।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাইকোর্ট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ