পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কঠোর বিধিনিষেধে ফের বদলে গেছে রাজধানীর চেহারা। সড়কে বেড়েছে ব্যক্তিগত পরিবহন আর ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেল, রাজপথ দখল করেছে রিকশা। তবে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে গুণতে হচ্ছে জরিমানা। তারপরও বিপুল সংখ্যক মানুষ নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। এদিকে, কঠোর লকডাউন এবং সরকারি নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গা থেকে ৭০৮ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপি। ডিএমপির ৫১টি থানায় পৃথক অভিযান চালিয়ে গতকাল কঠোর লকডাউনের ১১তম দিনে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ডিএমপির গণমাধ্যম শাখার এডিসি ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৮৪ জনকে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৮০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ ২৪৪ গাড়িকে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা করেছে। এছাড়াও লকডাউনের আদেশ অমান্য করে অযথা অযৌক্তিক কারণে বাইরে বের হওয়ার অভিযোগে গত ১০ দিনের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় ৬ হাজার ৫৬০ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে যখন কঠোর বিধিনিষেধের বেড়াজালে গোটা দেশ তখন বদলে গেছে রাজধানীর চিত্র। সড়কে গণপরিবহন না থাকলেও বেড়েছে ব্যক্তিগত যানবাহন। মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহন চলছে দেদারসে। রাজধানীর প্রবেশ পথগুলোয় চেকপোস্ট বসিয়েও ঠেকানো যাচ্ছে না অকারণে যাতায়াত। বেশিরভাগ মানুষ দিচ্ছেন নানা ধরনের অজুহাত। যারা সঠিক তথ্য দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা জানান আইনিশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
রাজধানীর উত্তরা জোনের অতিরিক্ত উপ কমিশনার তাপস কুমার দাশ বলেন, কে কোথায় যাবেন তা জানার চেষ্টা করছি। বেশির ভাগ মানুষ যৌক্তিক কারণে বের হয়ে এসেছেন। আর যে সব ক্ষেত্রে মনে হচ্ছে অযৌক্তিক কারণ আছে তাদের আমরা আইনের আওতায় নিয়ে এসেছি।
করোনা নিয়ন্ত্রণে শুধু মহাসড়ক নয় আবাসিক এলাকা, বাজার ও গলিতে তৎপর পুলিশ ও সেনাসদস্যরা। ১১ সিগন্যাল ব্যাটালিয়নের উপঅধিনায়ক মেজর নার্গিস বলেন, জনগণের বাইরে আসার প্রবণতা একটু বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন বলেন, অলিগলিসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আমরা টহল দেই। আইনশৃখলার অবনতি হলে জরিমানার আওতায় আনা হচ্ছে।
ভাংগা (ফরিদপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বোরবার ভাংগা উপজেলা প্রশাসন কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় মোড়ে মোড়ে চেক পোস্ট ও টহল অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু মানুষ বিনা কারণেই বাইরে বের হচ্ছে ও জরিমানার শিকার হচ্ছে। এরপরও এখানে সংক্রমনের উর্ধগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ করা হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা সংবাদদাতা জানান, রোববার চুয়াডাঙ্গায় কঠোর অবস্থানে ছিল প্রশাসন। চুয়াডাঙ্গার সড়কগুলোতে ছিলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারি। সকাল থেকে জেলার প্রবেশ পথগুলোতে চেকপোস্ট বসিয়ে তদারকি করেছে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। লকডাউনকৃত এলাকাগুলোতে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছেন ১৩ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অপ্রয়োজনে বাইরে আসা ও স্বাস্থ্যবিধি অমান্যকারীদের জরিমানা করছে ভ্রাম্যমান আদালত।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফিরোজ হোসেন জানান, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ৯টি ভ্রাম্যমান আদালতে ৩৭টি মামলায় ৪৫ জনকে ৪১ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও ৫ জনকে ৭ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। লকডাউন বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিয়মিত টহল অব্যাহত রেখেছে ৪ প্লাটুন সেনাবাহিনী, ৩ প্লাটুন বিজিবিসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
এস এম সুলতান খান চুনারুঘাট থেকে জানান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলা সেনাবাহিনী লকডাউন পরিস্থিতিতে টহল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। করোনাভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে চলমান লকডাউনে মাঠ পর্যায়ে সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সরাসরি পরিদর্শন করেছেন তিনি। টহলের পাশাপাশি সেনাবাহিনী করোনাভাইরাস মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত দুঃস্থ পরিবারগুলোর মধ্যে নিজস্ব তহবিল থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে।
ফরিদপুর জেলাসংবাদাতা জানান, কঠোর বিধি-নিষেধ পালনে আইন শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ফরিদপুর জেলা সদরে কোতয়ালী থানা ও অন্যান্য ৮টি থানা এলাকায় মোট ১২টি চেকপোস্ট ও ২৯ টি মোবাইল টিম গঠনের মাধ্যমে নিরলসভাবে ফরিদপুর জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। ফরিদপুর জেলা পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিজিবি এবং বাংলাদেশ আনসারের সদস্যবৃন্দ মোতায়েন রয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে প্রচারণা চালিয়েছে সেনাবাহিনী। ক্যাপ্টেন মো. মাহীর মাহবুরের নেতৃত্বে গতকাল দিনব্যাপী সেনাবাহিনীর ৬৬ পদাতিক ডিভিশনের ৩২ ফিল্ড রেজিমেন্টের আর্টিলারীর সদস্যরা প্রচারণা চালায়।
এস. কে সাত্তার ঝিনাইগাতী (শেরপুর) থেকে জানান, লকডাউনে ঝিনাইগাতীতে চলছে চোর-পুলিশ খেলা। বাইরে থেকে দোকান বন্ধ থাকলেও ভেতরে ক্রেতাভর্তি। এক জন দোকানের বাইরে টুল পেতে বসে থাকছেন। হাপ সার্টার খোলা। পুলিশ দেখলেই টোলে বসা কর্মচারীর টপাটপ সার্টার বন্ধ করে দিচ্ছে। আবার পুলিশ চলে গেলেই সার্টার অধ্যেক খোলা, চলছে কেনাবেচা। এ দৃশ্য শুধু ঝিনাইগাতী উপজেলা শহরের তা নয়। গোটা উপজেলা হাট-বাজারের বাস্তব অবস্থা এটি।
নাম প্রকাশ না করার শর্ত বেধেঁ দিয়ে স্বচেতন মহলের লোকজন বলেন- ঝিনাইগাতী এমনিতেই সীমান্তবর্তী উপজেলা। তার এমন অবস্থা চলতে থাকলে করোনা ঝুঁকি আরো বেড়ে যেতে পারে। তাই সবারই সচেতন হওয়া দরকার। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ( ইউএনও ) ফারুক আল মাসুদ বলেন-আমরা রাত দিন কাজ করে যাচ্ছি। কেউ যদি এমন করে নিজের-এলাকার-দেশ ও জাতির সর্বনাশ করে, তা হলে তাকে ছাড়া হবে না।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি জানান, কলাপাড়ার কুয়াকাটা পৌর এলাকায় বসেছে জমজমাট পশুর হাট। পৌর সদরের ৭ নং ওয়ার্ডের মাহবুবুর রহমান সড়কে শনিবার এ হাট বসিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। লকডাউনের মধ্যে এক কিলোমিটার দীর্ঘ এ পশুর হাটে হাজারো ক্রেতা বিক্রেতা পশু বেচা কেনা করতে আসলেও কারও স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। কাধে কাধঁ মিলিয়ে চলাফেরা করছে। বেশিরভাগ ক্রেতা বিক্রেতাদের মুখে ছিল না মাস্ক। ছিলো না কোন সামাজিক দূরত্ব। এ নিয়ে এলাকার সচেতন মহলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাজার কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো রকম পদক্ষেপ না নেয়ায় হাট বন্ধ রাখা সম্ভব হয়নি।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরশহরে রোববার লকডাউন উপেক্ষা করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখায় ৬ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মালিককে ৩৮‘শ টাকা জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট ও ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু।
মুন্সীগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, মুন্সীগঞ্জে গতকাল রোববার যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় দোকান পাট খোলা ছিল। চেকপোস্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিস্ক্রিয় দেখা যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।