পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার সংক্রমণরোধে সারাদেশে কঠোর বিধি-নিধেষ বা লকডাউন চলছে। লকডাউনের অষ্টম দিনে গতকাল ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছিল ভয়াবহ যানজট। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক বকেয়া দাবিতে অবরোধ করেছিল গার্মেণ্টস শ্রমিকরা। এতে করে মহাসড়কের দুই দিকে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। মহাসড়কে আটকা পড়ে হাজার হাজার যানবাহন। প্রায় ৯ ঘণ্টা অচল থাকার পর দুই মহাসড়কে আবার যান চলাচল শুরু হয়। অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে গতকাল বৃহস্পতিবার প্রায় ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। একটি ট্রাক দুর্ঘটনায় পতিত হলে মহাসড়ক আটকে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
নারায়ণগঞ্জ থেকে মোক্তার হোসেন মোল্লা জানান, কোনোরকম সমঝোতা ছাড়াই বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধের ৯ ঘন্টা পর সচল হয় দেশের গুরুত্বপূর্ণ দুটি মহাসড়ক ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-মিলেট মহাসড়ক। যদিও পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিনহা এন্ড ওপেক্স গ্রুপ কর্তৃপক্ষের সাথে ১৩ ও ১৯ জুলাই বেতন-ভাতার সাথে ঈদ বোনাস প্রদান করার আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু শ্রমিকরা তাদের কথা না শুনে মহাসড়ক পূণরায় অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে।
এরআগে, গতকাল সকাল ৭টা থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা -সিলেট মহাসড়কের কাঁচপুরে সিনহা গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ওপেক্স ও সিনহা গার্মেন্টেস’র হাজার হাজার শ্রমিক তাদের ৪ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। এতে মহাসড়কের দুই দিকে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে শিল্প ও থানা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা শ্রমিক প্রতিনিধি ও সিনহা এন্ড ওপেক্স গ্রুপের কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে আগামী ১৩ ও ১৯ জুলাই বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত দেয় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন।
অবরোধের সময় শ্রমিকরা জানায়, সিনহা গার্মেন্টেস এর শ্রমিকদের তিন মাসের এবং ওপেক্স গার্মেন্টেস’র শ্রমিকদের ৪ মাসের বেতনের টাকা বকেয়া করেছে কর্তৃপক্ষ। লকডাউনের কথা বলে তারা প্রতিমাসে সময়ক্ষেপন করছিল।
এদিকে শ্রমিকদের দাবি, প্রতি মাসের ৫ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও ৪ মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও কর্র্তৃপক্ষ বেতন দিচ্ছেনা। সবশেষ গত মাসের ২৮ জুন বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও আজ ৮ জুলাই তা পরিশোধ করা হয়নি।
অপরদিকে, যে সকল শ্রমিকরা বেতন চাইছে তাদেরকে বাধ্যতামুলক দীর্ঘ ছুটি দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। ফলে তারা বেতন ভাতা পরিশোধ ও কর্র্তৃপক্ষের মর্জি মতো শ্রমিক ছাটাই বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে।
তারা জানান, লকডাউনের মধ্যে উর্ধ্বগতির বাজারে বাকী পণ্য নেয়া দোকানদার তাদের বাকী টাকা আর বাড়ির মালিকেরা ঘর ভাড়ার জন্য শ্রমিকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। টাকা না থাকায় তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই আছে। ফলে বাধ্য হয়ে সকাল ৭টা থেকে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে বিক্ষোভ করে রাস্তা বন্ধ করে দেয়।
এদিকে, দুটি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে পণ্যবাহী ট্রাক, লরি ও কাভার্ডভ্যান বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়ে এ সকল যানবাহনে থাকা পরিবহন শ্রমিকরা। নষ্ট হওয়ার উপক্রম কাঁচামাল। এমনকি জরুরী রোগী পরিবহন করা এ্যাম্বুলেন্সে থাকা রোগীদের নিয়েও ভোগান্তিতে পড়েন স্বজনরা।
মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি ও শ্রমিকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) শেখ বিল্লাল হোসেন, সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আতিকুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফা মুন্না, সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাফিজুর রহমান।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাফিজুর রহমান জানান, সিনহা ও ওপেক্স গ্রুপ কর্র্তৃপক্ষ আগামী ১৩ ও ১৯ জুলাই শ্রমিকদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দেয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানতে রাজি হয়নি। পরে পুলিশ হালকা লাঠিচার্জ করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যার যার গন্তব্যে চলে যায়।
অন্যদিকে, ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে বাবলা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৬টার দিকে সেতুর ওপর উত্তরাঞ্চলগামী একটি ট্রাকের চাকা খুলে গেলে ট্রাকটি আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা খায়। ফলে ওই লেনে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে এই যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ট্রাকটি সরিয়ে নেওয়া হলে ফের যান চলাচল শুরু হয়। সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, ভোর ৬টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা উত্তরাঞ্চলগামী একটি ট্রাকের চাকা বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর খুলে যায়। এতে করে আইল্যান্ডের সঙ্গে ধাক্কা খায় ট্রাকটি। এতে ওই লেন দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ রাখা হয় সেতুর টোল আদায়। পরে সেতু থেকে ট্রাকটি সরিয়ে নিলে যান চলাচল শুরু হয়। এ যানজট নিরসনেও কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যায় বলে ভুক্তভোগিরা জানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।