Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বাবার লাশ ২৪ ঘণ্টা উঠোনে পড়ে ছিলো : সন্তানরা ব্যস্ত সম্পত্তি ভাগাভাগিতে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৮ জুলাই, ২০২১, ১:০৭ পিএম

বাবার লাশ খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখে ২৪ ঘন্টা। আর এই ২৪ ঘণ্টা সম্পত্তি ভাগাভাগিতে ব্যস্ত থাকে ৫ সন্তান।

জানা যায়, ইয়াছিন মোল্লা (৮৫) মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় তার মৃত্যু হলেও বুধবার দুপুর ১টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানেই পড়ে থাকে লাশ। জানা যায়, বাবার লাশ খোলা আকাশের নিচে দীর্ঘ ২৩ ঘণ্টা ফেলে রেখে পাঁচ সন্তান সম্পত্তির ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সালিশে ব্যস্ত থাকে। পরে পুলিশ এসে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়।

রাজবাড়ীর জেলা গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দক্ষিণ পাঁচুরিয়ার অম্বলপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

একপর্যায়ে সালিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বৃদ্ধের লাশ দাফনের সিদ্ধান্ত হলেও পরে পুলিশ এসে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ নিয়ে যায়।

মৃত ইয়াছিন মোল্লার সন্তানদের এমন কার্যকলাপে হতবাক স্থানীয় বাসিন্দারা।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইয়াছিন মোল্লার পাঁচ সন্তানের মধ্যে বাবলু মোল্লা, ফুলবড়, রাবেয়া ও মমতাজের সঙ্গে ছোট ছেলে রহমান মোল্লার দীর্ঘ দিন ধরেই জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। আর সেই কারণেই বাবাকে দাফন না করেই ২৩ ঘণ্টা খোলা আকাশের নিচে রেখে চলে জমি ভাগাভাগি।

পরে দেবগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলামের হস্তক্ষেপে লাশ দাফনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে স্থানীয়দের খবরে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জিডি মূলে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়।

মৃত ইয়াছিন মোল্লার পাঁচ সন্তানের মধ্যে চারজন- বাবলু মোল্লা, ফুলবড়, রাবেয়া ও মমতাজ অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের বাবা ছোট ভাই রহমান মোল্লার কাছে থাকার সুযোগে তাকে ফুসলিয়ে তার সব সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নেন। এ নিয়ে রাজবাড়ী কোর্টে আমরা একটা মামলাও করি।

রহমান মোল্লা জানান, গত শুক্রবার হঠাৎ করে আমার বাবা অসুস্থ হলে তাকে গোয়ালন্দে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার দেখাই। এ সময় ডাক্তার কিছু টেস্ট ও ওষুধ লিখে দিয়ে বাবাকে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাতে বলেন। আমি সেই মতে বাসায় রেখে চিকিৎসা করাই।

তিনি জানান, মঙ্গলবার বেলা আড়াইটার দিকে বাবা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক উনাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম জানান, যা ঘটেছে তা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ঘটনাস্থলে চলে যাই।

তিনি জানান, সালিশের মাধ্যমে লকডাউনের পরে সমাধানের কথা বলে স্ট্যাম্পে তাদের উভয়পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে মৃত ইয়াছিন মোল্লার দাফনের সিদ্ধান্ত নেই।

তবে এ সময় ঘটনাস্থলে থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে মৃত ব্যক্তির লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায় বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান।

গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করি। জিডি মূলে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ