পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শতাধিত মুসলিম শাসক দিল্লি শাসন করেছেন; অথচ দিলীপ কুমার একাই মুম্বাই সিনেমা ইন্ডান্ট্রি শাসন করেছেন যুগের পর যুগ ধরে। পাকিস্তানের পেশোয়ারের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতে এলেন; প্রতিভাগুনে হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করে পৃথিবীর নানান ভাষাভাষী শত কোটি মানুষের হৃদয় জয় করলেন; মুম্বাই সিনেমার বাঘাবাঘা পরিচালককে বস করলেন। এই হলো উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার। তিনি হিন্দি সিনেমায় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতার আসন দখলে রেখেই পৃথিবী থেকে চলে গেলেন। হিন্দি সিনেমার বরপুত্র দিলীপ কুমার পোশাকী নাম হলেও তার আসল নাম মোহাম্মদ ইউসুফ খান। পাকিস্তানের পেশোয়ার থেকে ভারতের মুম্বাইয়ে এসে হিন্দি সিনেমাকে ‘শাসক’ করেছেন। এ যেন তিনি এলেন, জয় করলেন এবং স্থায়ীভাবে রাজা-বাদশার আসন পোক্ত করলেন।
বলিউডের এই কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমার ওরফে মোহাম্মদ ইউসুফ খান আর নেই। পৃথিবীর কোটি কোটি দর্শককে শোক সাগরে ভাসিয়ে তিনি দুনিয়া থেকে চলে গেলেন। গতকাল বুধবার ভারতের স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৭টায় মুম্বাইয়েরে পিডি হিন্দুজা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৮ বছর। দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে ভারতের শুধু মুম্বাইয়ের হিন্দি সিনেমা পাড়াই নয় উপমহাদেশের শোকের ছাড়ায় নেমে এসেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র দমোদর মোদি, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। একজন সিনেমা নায়কের মৃত্যুতে তিন দেশের প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ বিরল ঘটনা। অতীতে আর কোনো অভিনেতার মৃত্যুতে তিন দেশের প্রাধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ করার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়নি। এরা ছাড়াও ভারতের কংগ্রেসের রাহুল গান্ধি, পশ্চিমবঙ্গের মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
বর্ষীয়ান অভিনেতা দিলীপ কুমার শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মৃত্যুর সময়ে স্ত্রী আরেক কিংবদন্তি অভিনেত্রী সায়রা বানু পাশে ছিলেন। গত রোববার একটি টুইট করে দিলীপ কুমারের অসুস্থতার কথা জানানো হয়। স্ত্রী সায়রা বানু টুইটে কিংবদন্তি অভিনেতার জন্য দোয়া করার আহ্বান জানান। চিকিৎসক ডা. নিতীন গোখলের তত্ত্বাবধানে চলতে থাকে তার চিকিৎসা। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার ফুসফুসে পানি জমেছে। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণ তাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয় আইসিইউতে। চিকিৎসকরা জানান, বয়সের কারণে বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক সমস্যা রয়েছে দিলীপ কুমারের। মূলত মে মাসের শুরুতে তাকে দীর্ঘসময় হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। কিংবদন্তি এই অভিনেতার মৃত্যুতে ভারতের চলচ্চিত্র জগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মুম্বাইয়ে হিন্দি সিনেমায় এখন সালমান খান, শাহরুখ খান, আমির খান, সাইফ আলী খানসহ বহু মুসলমান নায়ক-নায়িকা, আভিনেতা অভিনেত্রী, কষ্ঠশিল্পী যে দাপটের সঙ্গে টিকে রয়েছেন তার শেকড় গেড়েছিলেন পাকিস্তান থেকে আসা দিলীপ কুমার।
মুম্বাইয়ের হিন্দি সিনেমার মহানায়ক দিলীপ কুমার ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মোহাম্মদ সারোয়ার খান ছিলেন একজন ব্যবসায়ী। সে সময় অধিকাংশ মুসলিম পরিবারের মতো দিলীপ কুমারের পরিবারও ছিল বেশ রক্ষণশীল। মাত্র ৮ বছর বয়সে ১৯৩০ সালে পরিবারের সঙ্গে ভারতের মুম্বাইতে চলে আসেন দিলীপ কুমার। তার ১০ বছর পর মুম্বাই থেকে পুনেতে যান তিনি। সেখানকার একটি ক্যান্টিনে চাকরি শুরু করেন। ওই সময় ব্যবসা মন্দা হওয়ায় তাদের পরিবারে আর্থিক সঙ্কট দেখা দেয়। পরিবারে অর্থের জোগান দিতে তিনি বেশি বেতনের চাকরি খোঁজা শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে ইউসুফ খান বোম্বে টকিজে যান। তিনি প্রায়ই বোম্বে যেতেন সিনেমার শুটিং দেখতে। তার কলেজের সহপাঠী ছিলেন হিন্দি সিনেমার আরেক ডাকসাইটে নায়ক রাজ কাপুর। কখনো তার সঙ্গেও যেতেন। এভাবে তিনি একদিন চোখে পড়েন বম্বে টকিজের স্বত্বাধিকারী দেবিকা রাণীর। তিনি দিলীপ কুমারের কাছে জানতে চান উর্দু বলতে পারেন কি-না। ইউসুফ খান জানান, পারেন। পরের প্রশ্ন ছিল, তুমি অভিনেতা হতে চাও কি-না। তিনি বলেছিলেন, হ্যাঁ। সুদর্শন চেহারা এবং প্রতিভাবান হওয়ায় ইউসুফ খানকে সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেন দেবিকা রাণী। তখন হিন্দি সিনেমার দর্শক ছিল হিন্দুদের মধ্যে বেশি। দেবিকা রাণী সিনেমায় অভিনয়ের আগে ইউসুফ খান নামটি পরিবর্তনের প্রস্তাব দেন। সিনেমার নায়ক হওয়ার পোকা যার মাথায় কিলবিল করছে, তার নামে কি আসে যায়! ওই সময়ে বোম্বে টকিজে কাজ করতেন হিন্দি কবি নরেন্দ্র শর্মা। তিনি ইউসুফ খানের পরিবর্তে তিনটি নাম প্রস্তাব করেন। এগুলো হলো জাহাঙ্গীর, বাসুদেব ও দিলীপ কুমার। ইউসুফ তৃতীয় নামটি বেছে নেন।
দিলীপ কুমারের চলচ্চিত্র জীবন পথ চলা শুরু হয়। ১৯৪৪ সালে মুক্তি পায় দিলীপ কুমারের প্রথম সিনেমা ‘জোয়ার ভাটা’। প্রথম দিকে তার কয়েকটি সিনেমা তেমন ব্যবসা সফল হয়নি। তবে ১৯৪৭ সালে সাফল্যের দেখা পান। সিনেমাটির নাম ‘জুগনু’। এতে তার নায়িকা ছিলেন আরেক মুসলিম অভিনেত্রী নূরজাহান। এই সিনেমার পর আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রতিভাগুনে নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয় করে নিজেকে অসামান্য উচ্চতায় নিয়ে যান দিলীপ কুমার। ১৯৬০ সালে ভারতের ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসা সফল সিনেমা ‘মুঘল-এ-আজম’ দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ৬ দশকের ক্যারিয়ারে তিনি ৬৩টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলোÑ জোগান, বাবুল, হুলচুল, দিদার, আন, তারানা, দাগ, অমর, দেবদাস, নায়া দউর, পয়গাম, মধুমতি, ইনসানিয়াত, মুঘল-এ-আজম, সওদাগর, কারমা, গঙ্গা-যমুনা, দুনিয়া, বৈরাগ, আদমি ইত্যাদি। অনেক সিনেমায় রোমান্টিক চরিত্রে অনেক অভিনেত্রীর সাথে অভিনয় করেছেন দিলীপ কুমার। অনেকের সাথে তার ঘনিষ্ঠ স¤পর্ক ছিল; কিন্তু সেটি বিয়ে পর্যন্ত গড়ায়নি। সম্ভবত নিজের জীবনের হৃদয় ভাঙ্গার অভিজ্ঞতাই তাকে অনেক চরিত্রে অভিনয় উদ্বুদ্ধ করেছে, যা তাকে ট্রাজেডি কিং হিসেবে পরিচিতি দেয়। অনেক সিনেমায় তিনি মারা গেছেন, এমন চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এমনও দেখা গেছে, তার প্রতি দুটি সিনেমার একটিতে তিনি ট্রাজিক চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এসব সিনেমা তিনি মৃত্যুকে বাস্তব ও গ্রহণযোগ্য করে ফুটিয়ে তুলতে অনবদ্য অভিনয় করেছেন। ওই সময় এক সাক্ষাৎকারে দিলীপ কুমার মিডিয়াকে বলেছিলেন, একটা সময় ছিলো যখন মৃত্যুর দৃশ্য করতে গিয়ে আমি ডিপ্রেসড হয়ে যেতাম। বিষন্নতা কমাতে আমাকে চিকিৎসা নিতে হয়েছিলো। চিকিৎসক আমাকে ট্রাজেডি বাদ দিয়ে কিছু কমেডি সিনেমায় অভিনয়ের পরামর্শ দিয়েছিলেন। লন্ডন থেকে বিষন্নতার চিকিৎসা নিয়ে ফেরার পর আমি কোহিনুর, আজাদ, রাম অর শ্যাম সিনেমায় অভিনয় করেছিলাম যেগুলোতে কিছুটা কমিক উপাদান ছিলো। চরিত্রের সাথে পুরোপুরি একাত্ম হতে দিলীপ কুমার অনেক ধরনের প্রচেষ্টা চালাতেন। কোহিনুর সিনেমায় অভিনয়ের জন্য তিনি উস্তাদ আব্দুল হালিম জাফর খানের কাছ থেকে কয়েক বছর সেতার শিখেছেন। এটা করেছেন তিনি সিনেমার একটি চরিত্রের জন্য, যেখানে একটি গানের সাথে তাকে সেতার বাজাতে হতো। ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, শুধু কিভাবে সেতার ধরতে হয় তা জানতে আমি কয়েক বছর ধরে সেতার বাজানো শিখেছি। দিলীপ কুমার টোঙ্গা (ঘোড়ার গাড়ি) চালনা শিখেছিলেন টোঙ্গা চালকদের কাছ থেকে। এটি তিনি করেছিলেন নয়াদৌড় সিনেমার একটি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। আর এসব কারণেই বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা সত্যজিৎ রায় দিলীপ কুমারকে বলেছিলেন, ‘মেথড অ্যাক্টর’ অর্থাৎ যিনি চরিত্রের সাথে মিশে যান। দিলীপ কুমার লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে দ্বৈত সঙ্গীত গেয়েছেন যা সলিল চৌধুরী লিখেছিলেন হৃষিকেষ মুখার্জির মুসাফির সিনেমার জন্য। তিনি ৭টি সিনেমায় নার্গিসের সাথে জুটি হয়েছিলেন। কোন একক অভিনেত্রীর সঙ্গে এটাই ছিল তার সবচেয়ে বেশি জুটি। কিন্তু মধুবালার সাথে তার জুটি বেশি জনপ্রিয় হয়েছিল এবং তিনিও মধুবালার প্রেমে পড়েছিলেন। আত্মজীবনীতে তিনি স্বীকার করেন যে, অভিনেত্রী ও নারী হিসেবে মধুবালা তাকে আকর্ষণ করেছিল। মধুবালা ছিলেন প্রাণবন্ত। আমার মতো সংকোচবোধ করা কারও সাথে কথা বলতে তার কোনো সমস্যা হতো না। কিন্তু মধুবালার বাবার কারণে তাদের প্রেম বেশিদূর এগোয়নি।
দিলীপ কুমার-মধুবালার স¤পর্ক এতোটাই কঠিন হয়ে পড়ে যে মুঘল-এ-আযম সিনেমায় অভিনয়ের সময় তারা একে অপরের সঙ্গে কথা পর্যন্ত বলতেন না। দীর্ঘদিন পর দিলীপ কুমার সায়েরা বানুকে বিয়ে করেন। দীলিপ কুমারের ফ্যাশন তখন সারা ভারত-পাকিস্তান-বাংলাদেশজুড়ে ক্রেজে পরিণত হয়েছিল। কপালে তার ভি-শেপে একগুচ্ছ চুলের স্টাইল তরুণদের কাছে অসম্ভব জনপ্রিয়তা পায়। দিলীপ কুমারের জীবনী লেখক মেঘনাথ দেশাই লিখেছেন, আমরা তার চুলের স্টাইল, পোশাক, সংলাপ এবং আচরণগুলো অনুকরণ করতাম। পর্দায় তার চরিত্রটা আমরা আত্মস্থ করার চেষ্টা করতাম। তিনি সাদা রং পছন্দ করতেন। প্রায়ই সাদা জামা ও কিছুটা ঢোলা সাদা প্যান্ট পড়তেন। উর্দু কবিতা ও সাহিত্যে ব্যাপক আগ্রহ ছিল তার। খুবই শিক্ষিত মানুষ ছিলেন তিনি, যিনি একই সঙ্গে হিন্দি, উর্দু, ইংরেজি, পাঞ্জাবী ও পশতু ভাষা জানতেন। এমনকি মারাঠি, ভোজপুরি ও পার্সিয়ানও বুঝতেন ও কথা বলতে পারতেন। ১৯৭৬ সালে তিনি সিনেমা থেকে পাঁচ বছরের বিরতি নেন। ১৯৮১ সালে ‘ক্রান্তি’ সিনেমার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে ফিরেন। সর্বশেষ ১৯৯৮ সালে কিলা নামে একটি সিনেমায় অভিনয় করেন তিনি। ১৯৯১ সালে ভারত সরকারের কাছ থেকে পদ্মভূষণ খেতাব লাভ করেন। এর তিন বছর পর তিনি লাভ করেন দাদাসাহেব ফালকে অ্যাওয়ার্ড।
দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে মুম্বাইয়ের সিনেমা পাড়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। করোনার কারণে সবকিছু বন্ধ। তাই নামিদামি নায়ক-নায়িকা, পরিচালকরা ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটারে অমিতাভ বচ্চন লিখেছেন, ‘একটি ইনস্টিটিউশন চলে গেল। যখনই ভারতীয় সিনেমার বিষয়ে লেখা হবে, এটি দিলীপ কুমারের আগে ও দিলীপ কুমারের পরে। তার রুহের মাগফিরাতের জন্য দোয়া কামনা করছি। এই ক্ষতি সহ্য করার জন্য পরিবারের শক্তি কামনা করছি। খুবই কষ্ট পেলাম। অক্ষয় কুমার টুইট করেছেন, ‘বিশ্বের সবার কাছে হয়তো অনেকেই হিরো। কিন্তু আমাদের মতো অভিনেতাদের কাছে তিনি হিরো। দিলীপ কুমার স্যার ভারতীয় সিনেমার একটি যুগ তার সঙ্গে নিয়ে গেলেন। তার পরিবারের জন্য প্রার্থনা রইল’। সানি দেওল টুইটারে লিখেছেন, ‘একটি যুগের সমাপ্তি ঘটল। দিলীপ কুমার সাহেব আপনি সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন’। অজয় দেবগন তার টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘এই কিংবদন্তির সঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি, কিছু খুবই ব্যক্তিগত আর কিছু মঞ্চে। তবুও তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছি না। একটি ইনস্টিটিউশন, একজন কালজয়ী অভিনেতা। খুবই শোকাহত। সায়রাজির জন্য সমবেদনা’। মনোজ বাজপেয়ী টুইটে লিখেছেন, ‘আপনার মতো কেউ নেই। আপনার যাত্রা শুভ হোক মাস্টার। আপনার রুহ শান্তি পাক’।
শেখ হাসিনা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপমহাদেশের কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। গতকাল এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইমরান খান : ইউসুফ খান ওরফে দিলীপ কুমারের ইন্তেকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান জানিয়েছেন, ‘আমি গভীরভাবে শোকাহত। কোনও দিন ভুলব না মরহুমা মাকে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানিয়ে পাকিস্তানের এক ক্যান্সার হাসপাতালের জন্য তিনি যেভাবে ত্রাণ জোগাড় করেছিলেন। গোড়ার দিকে ১০ শতাংশ ত্রাণ জোগাড় করতে গিয়ে বেগ পেতে হয়েছিল। কিন্তু তার সহায়তাতেই পরে পাকিস্তান ও লন্ডন থেকে মোটা অঙ্কের ত্রাণ অনুদান আসে। আমাদের প্রজন্মে ভার্সেটাইল এবং সেরা অভিনেতা বলতে দিলীপ কুমারকেই স্মরণ করা হয়’।
নরেন্দ্র মোদি : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গভীর সমবেদনা জানিয়ে টুইট করে বলেছেন, ‘দিলীপ কুমারজি ভারতীয় চলচ্চিত্র আপনাকে কিংবদন্তি হিসেবেই মনে রাখবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম আপনার অভিনয়ে মুগ্ধ। তার মৃত্যু সাংস্কৃতিক জগতের অপূরণীয় ক্ষতি। পরিবার, আত্মীয়-স্বজনদের প্রতি সমবেদনা রইল’।
মমতার ব্যানার্জি : স্ত্রীয় সায়রা বানু এবং দিলীপ কুমারের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘গভীরভাবে শোকাহত। অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার জন্য আগামী প্রজন্ম মনে রাখবেন তাকে’।
রাহুল গান্ধী : কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী লিখলেন, ‘দিলীপ কুমারজির পরিবার, আত্মীয়-স্বজন এবং অনুরাগীদের প্রতি সমবেদনা রইল। ভারতীয় সিনেমায় তার অসামান্য অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।