Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পল্লী অঞ্চলে মাধ্যমিক শিক্ষার বেহাল দশা

প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নুরুল আলম বাকু : দেশের মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষের বসবাস গ্রামাঞ্চলে। আর গ্রামাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষই দরিদ্র ও অশিক্ষিত। শিক্ষার হার বাড়াতে সরকার যুগোপযোগী নানা পদক্ষেপ নিলেও সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতায় নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও প্রতিকূলতার ফাঁদে পড়ে গ্রামাঞ্চলে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। সরকারি আইন অমান্য ও সংশ্লিষ্টদের লাগামহীন দুর্নীতির কারণে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে মেধাহীন হয়ে পড়ছে এসব শিক্ষার্থী। ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতের চিন্তায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে অভিভাবক মহল। নানাবিধ অনিয়মের ফলে দীর্ঘদিনের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হারাচ্ছে তাদের ঐতিহ্য।
শহরাঞ্চলের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার মান তুলনামূলকভাবে ভালো থাকলেও বর্তমানে নানাবিধ কারণে গ্রামাঞ্চলের মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারণগুলোর মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের ওপর রাজনৈতিক প্রভাবই উল্লেখযোগ্য বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে।
একটি জরিপে দেখা গেছে, গত এক দশকে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে দলীয় বিবেচনায়। সেক্ষেত্রে এসব পদের বিপরীতে প্রার্থীদের মধ্যে অনেকে পরীক্ষায় ভালো ফলাফলকারী, মেধাবী ও উপযুক্ত হওয়া সত্ত্বেও শুধু টাকা ও দলীয় লবিংয়ের অভাবে মনোনীত হতে পারেনি। দলীয় বিবেচনা ও অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষকের বেশির ভাগই শিক্ষক হিসেবে অনুপযুক্ত বলে অভিযোগ অনেকের। দলীয় প্রভাব ও টাকার বিনিময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছে নীতিনৈতিকতার অভাব। ফলে তাদের কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা গৎবাঁধা পুঁথিগত কিছু বিদ্যা ছাড়া মেধা বিকাশে তেমন কিছু অর্জন করতে পারছে না। সংশ্লিষ্টদের নজরদারির অভাবে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ শিক্ষক সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থীদের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের পরিবার থেকে আসা শিক্ষার্থীরা টাকার অভাবে উপযুক্ত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়ে কাক্সিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছার আগেই ঝরে পড়ছে।
এদিকে অর্থের বিনিময়ে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে ও সাজেশন দিয়ে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাস করানোর ব্যবস্থা করছেন। যার ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তকের নির্দিষ্ট কিছু অংশ পড়েই পাস করছে। এতে সব বই ভালোভাবে না পড়িয়ে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জনের সুযোগ থেকে দূরে সরিয়ে রেখে ক্রমান্বয়ে তাদের মেধাহীন করে তোলা হচ্ছে। ভালো রেজাল্ট করে পাস করেও উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় টিকতে না পেরে ফিরছে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। ফলে ওইসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের আশার গুড়ে ছাই পড়ছে। এ ছাড়া দফায় দফায় বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তো আছেই। এর ফলে মেধাবী ছাত্রছাত্রীরা ভালোভাবে পড়ে ভালো রেজাল্ট করেও মানসিকভাবে স্বস্তি পাচ্ছে না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে অশিক্ষিত, স্বল্প শিক্ষিত ও দুর্নীতিবাজ লোকেরাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় তারা দলীয় ছত্রছায়ায় থেকে তাদের ইচ্ছামতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার মান ক্রমেই নি¤œমুখী হচ্ছে।
নিয়মবহির্ভূতভাবে একজন শিক্ষক একই সঙ্গে একাধিক প্রতিষ্ঠানে ও একাধিক পদে চাকরি করার কারণে শিক্ষার্থীরা তাদের কাছ থেকে প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এসব শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান, প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষা বিভাগের অসাধু কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই এসব অনিয়ম করে বলে একাধিক সমর্থিত সূত্রে জানা গেছে। এ ছাড়া বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ভৌত অবকাঠামোর অভাবে প্রয়োজনীয় শ্রেণিকক্ষ, শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষকের অভাব তো রয়েছেই। সম্প্রতি সরকার কমিশন গঠন করে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণাকে সাধুবাদ জানালেও অভিভাবক মহল তেমন একটা আস্থা আনতে পারছে না। কারণ হিসেবে অনেকে জানান, মফস্বলের মাধ্যমিক পর্যায়ের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি স্থানীয় সংসদ সদস্য, তাদের আত্মীয়স্বজনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তাই শেষ পর্যন্ত সরকারের এ ঘোষণা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন অনেকে।
বিভিন্ন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন ও শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম, শিক্ষকদের দলবাজি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে অনৈতিক ও প্রেমঘটিত বিষয়ে উদ্ভূত অস্থির পরিবেশের কারণে লেখাপড়ার পরিবেশ নষ্ট হয়। দেখা যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যালয় ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচন, অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষক নিয়োগ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়কে কেন্দ্র করে অস্থির পরিবেশ বিরাজ করায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পড়াশোনার ভালো পরিবেশ থাকে না।
অভিভাবকমহলের অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষকরা নিজ নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নানাভাবে তাদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করে থাকে। তাদের কাছে প্রাইভেট না পড়লে অনেক সময় প্রকাশ্যেই শিক্ষার্থীদের ফেল করানোর হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটে। ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ এলাকায় ভালো শিক্ষক থাকতেও ৩-৪ কিলোমিটার দূর হলেও নিজ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য হয়।
সরকারিভাবে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের বোর্ডের বই দেওয়া হলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ফরমায়েশ মতো নোটবই, গাইড বইসহ নানারকম বই কিনতে মাধ্যমিক পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে প্রতি বছর অভিভাবকদের খরচ হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। আর ছেলেমেয়েদের জন্য এসব নোটবই ও গাইড বই কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন তাদের অভিভাবকরা।
যখন শিক্ষার্থীদের হাতে বই-খাতা আর কলম থাকার কথা। সহপাঠীদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হওয়ার কথা ক্লাসের পড়া আর বই নিয়ে, ঠিক সেই সময় আদরের সন্তানদের আবদার রক্ষা করতে তাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অডিও ভিডিও ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাসম্বলিত এনড্রয়েড ফোন। ফলে এখন স্কুলপড়–য়া ছেলেমেয়েদের মধ্যে আলাপ হয় মোবাইল ফোন আর ফেসবুক, টুইটারের নানা ছবি, ভিডিও ও লেখা নিয়ে। যা কিনা এসব বয়সী শিক্ষার্থীদের জন্য বিপজ্জনকও বটে। এ ছাড়াও অডিও ভিডিও ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাসম্বলিত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে অশ্লীল ছবি, অডিও ও ভিডিও রেকর্ড আদান-প্রদানের সুযোগ পায়। এতে করে অনেক সময় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে মেয়েদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আপত্তিকর ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। আবার অনেক সময় এ অবাধ মেলামেশা অনৈতিক সম্পর্ক পর্যন্ত গড়িয়ে পড়ছে। ফলে ওখানেই যবনিকাপাত ঘটছে শিক্ষা জীবনের। তাই বর্তমানে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের অডিও ভিডিও ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সুবিধাসম্বলিত মোবাইল ফোন ব্যবহারের বিষয়টি ভেবে দেখার সময় এসেছে বলে অভিমত সচেতন মহলের।
মানুষের মধ্যে শিক্ষা, সচেতনতা, আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের অভাব, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও গ্রাম্য পরিবেশের কারণে মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়–য়া মেয়েদের একটি অংশ কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার আগেই ঝরে পড়ছে শিক্ষাজীবন থেকে। ফলে সংসার জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছে। শিক্ষার অভাবে একজন আদর্শ গৃহিণী হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর শিক্ষিত জাতি গড়তে একজন শিক্ষিত মায়ের ভূমিকা অপরিসীম। সে ক্ষেত্রেও অবদান রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে ঝরে পড়া এসব অশিক্ষিত মায়েরা।
বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবর মাধ্যমে দেখা গেছে, দেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে চোরাচালানিরা দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে স্কুলের শিক্ষার্থী নিষ্পাপ শিশুদের নগদ টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের স্কুলব্যাগে ভরে চোরাচালানকৃত বিভিন্ন ধরনের মাদকসহ নানা প্রকার দ্রব্য বহন করে নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে দেয়ার জন্য বাধ্য করছে। ফলে শিক্ষার্থীরা এসব অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এসব মাদকদ্রব্য নাড়াচাড়া করতে করতে একসময় মনের অজান্তেই আসক্ত হয়ে পড়ছে নানারকম মাদকে। ফলে একদিকে তাদের শিক্ষাজীবন তো শেষ হচ্ছেই সেই সঙ্গে অল্প বয়সেই চোরাচালন, সন্ত্রাসসহ নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে নিপতিত হচ্ছে অন্ধকার জগতে। আবার অনেকে প্রলোভনে পড়ে এসব মাদকদ্রব্য বহন করতে গিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে বিদ্যালয়ের পরিবর্তে তাদের ঠাঁই হচ্ছে অন্ধকার কারাগারে।
প্রতি বছরই দেশ থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেকার যুবক-যুবতী চাকরি করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যায়। কিন্তু তাদের বেশির ভাগেরই সংশ্লিষ্ট কাজের ব্যাপারে কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় লাখ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ গিয়েও দেশের সাধারণ শ্রমিকের মতো হাড়ভাঙা পরিশ্রম করতে হয়। বঞ্চিত হয় ন্যায্য পারিশ্রমিক থেকেও। তাই মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ব্যাপকভাবে কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা করে এ বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব বলে মনে করেন অনেকে।
লাইব্রেরিকে বলা হয় জ্ঞানের জীবন্ত আধার। সব স্কুলেই লাইব্রেরি, বই ও লাইব্রেরিয়ান থাকলেও বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেরই লাইব্রেরির তালা খোলা হয় না দীর্ঘদিন ধরে। উঁইপোকাসহ বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণের ফলে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার মূল্যবান বইপত্র। যার ফলে দরজার তালায় জং ধরে গেছে এমন লাইব্রেরির সংখ্যা অনেক। কোনো সময় এসব লাইব্রেরির কথা উঠলে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা লাইব্রেরিতে সময়োপযোগী শিক্ষামূলক কোনো বইপত্র না থাকায় এগুলো আর ব্যবহার করা হয় না বলে জানান। বর্তমান প্রজন্মের ছেলে-মেয়েরা গল্প-উপন্যাসের বই পড়া তো ভুলেই গেছে। কারণ একদিকে ক্লাস, কোচিং, প্রাইভেট পড়ার চাপ অপরদিকে মোবাইল ফোন। তার মাঝে আবার উপন্যাস পড়ার সময় কই?
মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার সময়টি ছেলেমেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল হওয়ায় ছেলেমেয়েদের জন্য খুই বিপজ্জনক। কারণ এ সময় বুদ্ধিশুদ্ধি একেবারেই কাঁচা থাকে। তাই এ বয়সে ছেলেমেয়েরা মনের অজান্তেই নানা ধরনের অপকর্ম করে বসে। পড়াশোনা করা ছেলেমেয়েরা দিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সঙ্গে কাটায়। তাই এ সময়টিতে ছেলেমেয়েদের অভিভাবকের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদেরও যথেষ্ট খেয়াল রাখার প্রয়োজন।
মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য যে কাজগুলো করা দরকার তা হলো, প্রথমত আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে বিশ্বের মধ্যে উন্নত জাতিতে পরিণত করার স্বার্থে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে স্থানীয় ও জাতীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় দলীয় রাজনৈতিক নেতারা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব খাটিয়ে তাদের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করতে এসব শিক্ষার্থীকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে অনৈতিকভাবে তাদের দিয়ে মিছিল, মিটিং, মানববন্ধন, পোস্টারিং ও হরতাল অবরোধের সময় পিকেটিংয়ের মতো কাজ করিয়ে থাকে, যা কারও কাম্য হওয়া উচিত নয়। তাই অচিরেই এসব বন্ধ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাবী, সৎ চরিত্র ও যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে শিক্ষিত, সৎ, যোগ্য ও জ্ঞানী ব্যক্তিদের মনোনীত করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে এলাকার শিক্ষার পরিবেশ ভালো রাখতে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদেরও তাদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ও নীতিনৈতিকতার দিকে নজর রাখতে হবে।
ষ লেখক : সাংবাদিক



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পল্লী অঞ্চলে মাধ্যমিক শিক্ষার বেহাল দশা
আরও পড়ুন