Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা মহামারীতে দক্ষিণাঞ্চলের শতবর্ষের ভাসমান নৌকার হাট

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২১, ৫:২১ পিএম

করোনা মহামারীর ছোবলে দক্ষিণাঞ্চলের শতবর্ষের পুরনো ভাসমান নৌকার হাটগুলোতে ক্রেতা সংকটে দিশাহারা নির্মাতা সহ বিক্রেতারাও। পিরাজপুরের নেসারাবাদ ও ঝালকাঠির নৌকা শিল্প করোনার প্রভাবে ব্যাপক ভাবে ক্ষতির মুখে। গত বছরে মত এবারের বর্ষা মৌশুমেও নৌকা তৈরীর কারিগর সহ ক্রেতা সংকটে বিপর্যস্ত দক্ষিণাঞ্চলের এ দুটি নৌকার মোকাম। এসব ভাসমান ও মৌসুমী হাটে কারিগড়ের অভাবে নৌকা তৈরি যেমন বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, তেমনি লকডাউনে দূর-দূরান্তের ক্রেতারও আসতে পারছেন না।

খাল-বিল, নদী-নালা বেষ্টিত দক্ষিণাঞ্চল যুড়েই বর্ষা মৌসুমে নৌকার কদর অন্য যেকোন সময়ের তুলনায় অনেক বেশী। বিশেষ করে বর্র্ষার এসময়ে কৃষকরা ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করেই রোপা আমনের চারা সহ নানা কৃষি উপকরন নিয়ে আধা নিমজ্জিত ফসলের জমিতে যায়। এছাড়াও বর্ষার পানিতে প্লাবিত এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে যেতেও অনেক এলাকায়ই এখনো নৌকাই একমাত্র বাহন। আউশ ধান কাটা ছাড়াও ঝালকাঠী ও নেসারাবাদের পানি বেষ্টিত বাগান থেকে পেয়ারা, আমড়া ও সব্জিসহ অন্যান্য ফসল সংগ্রহ এবং বাজারজাত করতেও নৌকার কোন বিকল্প নেই এখনো। ঝালকাঠীর ভিমরুলীতে গত অর্ধ শতাব্দীকাল ধরে নৌকার ওপরই পেয়ারার ভাসমান হাট বসছে। যা দেখতে দেশের বিভন্ন প্রান্ত থেকে প্রতি বছর বর্র্ষা মৌসুমে বিপুল সংখ্যক পর্যটক এলেও গত বছরের মত আবারো কারো দেখা নেই।
এবার মৌসুমের শুরু থেকেই প্রায় স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের নদী-নালা এবং খালবিল গুলো ইতোমধ্যে পানিতে টৈ-টুম্বুর হয়ে গেছে। এতে নৌকা নির্ভর এসব এলাকায় চাহিদা থাকলেও করোনার বিরুপ প্রভাব পরেছে এ শিল্পের ওপর। একদিকে যেমন প্রয়োজনীয় কারিগড় পাওয়া যাচ্ছেনা, অন্যদিকে আর্থিক সংকট সহ করোনার ভয়ে দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতারাও আসছেন না এসব নৌকার হাটে।

একশ বছরের পুরানো ঝালকাঠী-পিরোজপুরের সিমান্তবর্তী আটঘর হাটে এবার আগের বছরের তুলনায় এক-চত’র্থাংশ নৌকাও হাটে আসছে না। ক্রেতাও কম। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কাঠসহ নৌকা তৈরির উপকরনের দাম বাড়লেও বাড়েনি নৌকার দাম। অপরদিকে করেনার কারনে ক্রেতা কম থাকায় চাহিদাও নেই। ফলে এ শিল্পের সংগে জড়িতরা বিপাকে পরেছেন। পিরোজপুরের নেসারাবাদের নৌকার হাটেরও একই চিত্র।

অন্যদিকে ক্রেতার বলছেন, নৌকার দাম আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। তবে বিক্রেতাদের দাবী কাঠ ও লোহা সহ সব উপকরনের মূল্যবৃদ্ধির সাথে কারিগড়দের মজুরীও প্রায় দ্বিগুন বেড়েছে গত তিন বছরে। ফলে নৌকার দাম না বাড়িয়ে উপায় কি ?

এ ব্যাপারে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, স্থানীয় নৌকা শিল্পর ওপর করোনার কিছুটা প্রভাব পড়েছে। তিনি এ শিল্পের সাথে জড়িত ক্ষতিগ্রস্থদের প্রয়োজনীয় সহায়তার বিষয়টি বিবেচনার কথাও জানিয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ