পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ডেল্টার সামাজিক সংক্রমণ ঠেকাতে প্রথম ঘোষিত লকডাউন ঢিলেঢালা হওয়ায় কঠোর লকডাউন দেয়া হয়। কঠোর লকডাউন শেষ হওয়ার আগেই লকডাউনের সময় আরো ৭ দিন বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু গতকাল লকডাউনের ষষ্ট দিনে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট দেখা গেছে।
গণপরিবহণ বন্ধ অথচ ব্যাক্তিগত গাড়িতে ছয়লাব রাজধানী ঢাকার সড়কগুলো। কেউ কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে রয়েছেন; কেউ বের হলে জরিমানা গুনছেন; আবার কেউ অনায়াসে পথে নামছেন, কাজ করছেন। ব্যাক্তিগত গাড়ি সড়কে দাপিয়ে বেড়ায় কোথাও কোথাও যানজটের সৃষ্টি হয়। লকডাউনে রাজধানীর পথে যদি যানজটের সৃষ্টি হয় তাহলে অন্যেরা কি দোষ করলো? তারা ঘরে বসে থাকবেন কেন? ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ ‘কেউ পথে বের হতে পারবেন; কেউ পারবেন না তা হবে না’। প্রশ্ন হচ্ছে কার স্বার্থে লকডাউনের এই ঢিলেঢালা করা হচ্ছে; দায় কার? করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট নিয়ন্ত্রণে ‘লকডাউন’ কঠোরভাবে পালন করা সময়েল দাবি। করোনা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে অর্থনৈতিকভাবে কঠিক পরিস্থিতির মুখোমুখি পড়বে দেশ। সেকারণে অসুবিধা কষ্ট মেনে নিয়েই লকডাউন কার্যকর করতেই হবে। সরকার করোনা চিকিৎসক, নার্স, গণমাধ্যম কর্মী, নিত্যপণ্যের ট্রাক যাতায়াতসহ কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে লকডাউন ঘোষণা করেছে। এবারের লকডাউনে অন্যান্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে নামনোয় প্রথম তিন দিন লকডাউনে রাস্তায় মানুষ তেমন দেখা যায়নি। যারা অহেতুক বের হয়েছেন তাদের কোথাও জেরার মুখে কোথাও জরিমানার মুখে পড়তে হয়েছে। গতকালও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৪৭ জনের জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে জেল জরিমানার পরও রাস্তায় ব্যাপক ভাবে যানবাহন নেমেছে। রিক্সার পাশাপাশি এখন ঢাকা শহরের রাস্তাগুলো প্রাইভেট কারের দখলে চলে গেছে। তাহলে গণপরিবহণ দোষ করলো কি?
লকডাউনে মার্কেটগুলো বন্ধ রাখা হলেও সীমিত পরিসরে দোকান এবং কাচা বাজার খোলা রাখা হয়েছে। দিনের কোন সময় দোকান খোলা রাখা যাবে তা মন্ত্রিপরিষদের প্রজ্ঞাপনের নির্দেশনায় উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু রাজধানীর বেশির ভাগ কাচা বাজার রাতেও খোলা থাকছে। সেগুলোতে ভীড়। পাড়া মহল্লার দোকান রাত ১১টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। অনুসন্ধান করে জানা যায়, মাঝে মাঝে পুলিশ দোকান বন্ধ করে দিচ্ছেন; পরক্ষণের তা খুলে যাচ্ছে। যাত্রাবাড়ি, শনিরআখড়া, ধোলাইপাড়, ওয়ারী এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আইন শৃংখলা বাহিনীকে ‘উপরি’ দিয়ে দোকান খোলা রাখছেন কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
যাত্রাবাড়ি, উত্তরা, পুরান ঢাকা, গাবতলী এলাকায় গতকাল যানজট দেখা গেছে। কোথাও কোথাও পুলিশের চেকপোষ্টে দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। নানান কাজে মানুষ প্রাইভেট কার নিয়ে বের হয়েছেন। যাত্রাবাড়িতে একজন অভিযোগ করলেন, প্রাইভেট কারগুলো অনায়াতে পুলিশের চোখের সামনে চলাচল করছে; তাদের কিছুই বলছে না; অথচ রিক্সায় গুরুত্বপূর্ণ কাজে বের হয়েছি আমাদের আটকে দিয়েছে। আমারা গরীব প্রাইভেট কার না থাকা কি অপরাধ?
বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীরা জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে রাজধানী ঢাকার প্রতিটি সড়কে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। এ অবস্থায় কোথাও ঢিলেঢালা আবার কোথাও কড়াকড়ি বিধিনিষেধ পালন হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো সড়কে আবার যানবাহনের লম্বা যানজটও তৈরি হয়েছে। সরেজমিনে যায় মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় চেকপোস্ট বসানো হলেও সেগুলোতে দায়িত্বরতদের তৎপরতা তেমন নেই। দুই-তিনটি স্থানে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেলেও বাকি চেকপোস্টে বাধাহীন যান চলাচল করতে দেখা গেছে। মিরপুর বাংলা কলেজের সামনে এবং গাবতলীতে বসানো চেকপোস্টে কড়াকড়ি থাকলেও টেকনিক্যাল মোড, মিরপুর-২ নম্বর, মিরপুর ১০ ও ১২ নম্বরে শিথিলতা দেখা গেছে। মিরপুর ১০ নম্বর মূল পয়েন্টে দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট নূর হোসেন বলেন, ভোর থেকে ডিউটি করছেন। এ কারণে কেউ কেউ ক্লান্ত হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন। রাস্তায় গাড়ি বেড়ে যাওয়ায় সকলকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা সম্ভব হয় না। তবে সড়কে চলাচল করা অধিকাংশ যানবাহন আটকে গাড়ির কাগজপত্র ও বের হওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হচ্ছে।
রাজধানীর বিজয় সরণিতে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। সেখানে দাঁড়িয়ে দেখা গেছে, ৬ জন পুলিশ সদস্য এখানে দায়িত্ব পালন করলেও মাঝে মাঝে দুয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়া হচ্ছে। কী কারণে মানুষ বের হচ্ছে তা তেমন গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে না। কাগজপত্র ঠিক থাকলে যেতে দেয়া হচ্ছে। যাত্রাবাড়িতে দেখা গেল চেকপোষ্টে রিক্সা ও সিএনজির যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অথচ প্রাইভেট কার পাশ দিয়ে দ্রুতবেগে চলে যাচ্ছে। এমন চিত্র রাজধানী ঢাকার সর্বোত্রই চোখে পড়েছে। যারা করোনা লকডাউনের কারণে ঘরে বসে রয়েছেন এমন কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, সরকার প্রথম থেকেই দ্বিমুখি নীতি গ্রহণ করেছে। করোনা থেকে বাঁচতে লকডাউন কঠোর করা উচিত। অথচ ব্যাংক, শেয়ার বাজার, গার্মেন্টস খোলা রেখে অন্য সব বন্ধ করে দিয়েছে। গণপরিবহণ বন্ধ করেছে। কিন্তু যেভাবে মানুষ চলাফেরা করছেন, প্রাইভেট কারে যাতাযাত করে মার্কেটে কেনাকাটা করছেন তাতে কি লকডাউনের সুফল মিলবে?
মালিবাগে মৌচাক মার্কেট, টুইন টাওয়ার, শান্তিনগরে কর্ণফূলী সুপার মার্কেটসহ বড় বড় শপিং মলগুলো বন্ধ। অথচ অলিগলিতে দোকান খোলা। ফকিরের পুলে দোকান খোলা দেখা গেল। এভাবে লকডাউন হলে করোনাভাইরাসের নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
রাজধানীর টোলার বাগে গত বছর লকডাউন কঠোরভাবে কার্যকর করায় সুফল পাওয়া গেছে। অতপর ওয়ারী ও রাজাবাজারে লকডাউন করে করোনা নিয়ন্ত্রণ করা গেছে। সারাদেশেও লকডাউন কার্যকরে সুফল এসেছে। বিদেশের লন্ডন শহরে মাক্স পরতে হবে না এমন সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশ এমনকি আমেরিকা মাস্ক পরার কঠোরতা শীতিল করেছে। কারণ কঠোর লকডাউন কার্যকর হওয়ায় ওই সব দেশে করোনা নিয়ন্ত্রণ হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ বাংলাদেশে কঠোর লকডাউন কার্যকর ছাড়া করোনা নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। কাজেই লকডাউন করোর করতেই হবে। কিন্তু কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে ঢিলেঢালা করা হচ্ছে কার স্বার্থে? সে প্রশ্ন এখন সর্বোত্রই। ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।