Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রাজধানীসহ সারা দেশেই বেড়েছে মানুষ-যানবাহন চলাচল

লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন

ইনকিলাব রিপোর্ট | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

করোনা সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধের ৬ষ্ঠ দিনে রাজধানী ঢাকার সড়কগুলোতে যানবাহন চলাচল বেড়েছে। এ অবস্থায় কোথাও ঢিলেঢালা আবার কোথাও কড়াকড়ি বিধিনিষেধ পালন হতে দেখা গেছে। কোনো কোনো সড়কে আবার যানবাহনের লম্বা যানজটও তৈরি হয়েছে। একই অবস্থা ছিল ঢাকার বাইরেও। গতকাল রাজধানীতে লকডাউন না মানায় গ্রেফতার করা হয়েছে ৪৬৭ জনকে। আড়াই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে ৩০৫ জনকে। ১০৮৭টি গাড়ির বিরুদ্ধে জরিমানা করা হয়েছে প্রায় ২৬ লাখ টাকা। পুলিশের পাশাপাশি সারা দেশে ৪১৫ জনকে দুই লাখ ৩৭ হাজার টাকা জরিমানা করেছে র‌্যাব। সারা দেশে ৫০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা এই অর্থদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়াও লকডাউন বাস্তবায়নে সারা দেশেই কাজ করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এখন বিশেষ পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। যারা জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হচ্ছেন, তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ করছি। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ করছি। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে যারা বাইরে বের হচ্ছেন তাদের অনেকেই সঠিকভাবে মাস্ক পরিধান করছেন না। সচেতনতার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

তিনি বলেন, পাড়া-মহল্লায় টহল পরিচালনার সময় দেখেছি, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। বিভিন্ন স্টলে-দোকানে গণজমায়েত দেখা গেছে। সবার প্রতি অনুরোধ পরিবারের কথা বিবেচনা করে হলেও এই কটা দিন করোনার ঝুঁকিপূর্ণ সময় ঘরে থাকুন। অন্যথায় আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেব।

এদিকে রাজধানীতে বেশিরভাগ মানুষই অকারণে বিভিন্ন অযুহাত দিয়ে ঘুরাফেরা করতে দেখা গেছে। তাদের মধ্যে শাহবাগ মোড়ে খায়রুল হুদা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে র‌্যাব। পরে তার কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়াও লালবাগ ও রমনা এলাকায় বিধিনিষেধ ভেঙে কঠোর লকডাউনের মধ্যে অকারণে বাইরে বের হওয়ায় ১৪৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। লালবাগ বিভাগের ডিসি মো. জসীম উদ্দীন মোল্লা ও রমনা বিভাগের ডিসি মো. সাজ্জাদুর রহমান বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনে লালবাগ ও রমনা বিভাগের বিভিন্ন পয়েন্ট এলাকায় সকাল থেকেই দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশ সদস্যরা। এসব এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে একাধিক চেকপোস্ট। এসব চেকপোস্টে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট থানার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন। জরুরি প্রয়োজনে যারা সড়কে বেরিয়েছেন তাদের পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়। কঠোর লকডাউনের মধ্যেও যথাযথ কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হওয়ায় লালবাগ বিভাগ থেকে ১০৫ জনকে এবং রমনা বিভাগ থেকে ৪২ জনকে আটক করা হয়। এছাড়া রাস্তায় টিভি নাটকের শুটিং করায় ইউনিটের ১২ জনকে আটক করে খিলগাঁও থানা পুলিশ। এরপর মুচলেকা রেখে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়। খিলগাঁও থানার ওসি ফারুকুল আলম বলেন, শুটিং চলাকালীন আশপাশে অনেক লোকজন হয়েছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। অনুমতির কোনো কাগজপত্র তারা দেখাতে পারেনি। পরে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দিয়েছি।

চার বাহিনীর চেকপোস্টে আড়াই ঘণ্টায় ফাঁকা শাহবাগ : বারডেম হাসপাতালের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছে র‌্যাব। তার সামনেই পূবালী ব্যাংকের নিচে চেকপোস্ট স্থাপন করে তল্লাশি করতে দেখা যায় সেনাবাহিনীকে। আধা ঘণ্টা চেকপোস্ট পরিচালনা শেষে তারা চলে গেলে সেখানে আসে বিজিবি। তারাও আধা ঘণ্টা চেকপোস্ট পরিচালনা শেষে চলে যায়। এ সময় দুই বাহিনীই বিভিন্নজনকে জিজ্ঞাসাবাদ ও গাড়ি আটকে ঘর থেকে বের হওয়ার কারণ জানতে চায়। যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া বের হওয়া বেশ কয়েকজনকে জরিমানা করেন ঢাকা জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট। এদিকে, মৎস্যভবন থেকে শাহবাগ মোড়ে আসার মুখে ফুলের মার্কেটের সামনে পৃথক চেকপোস্ট পরিচালনা করছে রমনা বিভাগ পুলিশ। চার বাহিনীর চেকপোস্টে আড়াই ঘণ্টায় ফাঁকা হয়ে যায় পুরো শাহবাগ। ১৩ জনকে জরিমানা করা হয় ৭ হাজার ১০০ টাকা।

শাহবাগে সেনাবাহিনীর দলটির নেতৃত্বে ছিলেন মেজর হাসান চৌধুরী বলেন, আমরা প্রত্যেকটি গাড়ি থামিয়ে বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করেছি। যারা সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি, তাদেরকে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হয়। এছাড়া যারা মাস্ক ছাড়া বা থুতনিতে মাস্ক নামিয়ে চলছেন তাদের সতর্ক ও সচেতন করা হয় বলেও জানান মেজর হাসান।

মঙ্গলবার রাজধানীর চাঁনখারপুল, গুলিস্তান ও পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর পল্টন মোড়ে পুলিশের চেকিংয়ে গাড়ির লম্বা সারি পড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সবাইকে জিজ্ঞাসা করছেন কেন ঘর থেকে বের হয়েছেন? সবারই প্রায় একইরকম উত্তর জরুরি প্রয়োজনে কেউ বা ব্যাংকে আবার কেউ বা অসুস্থ হাসপাতালে যাচ্ছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, মানুষ ঘরে থাকতে চাইছে না। তারা কারণ ছাড়াই বের হচ্ছেন। আবার জিজ্ঞাসা করলে কেউ কেউ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর তেড়ে যাচ্ছেন। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি এমন যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মানুষের শত্রুতে পরিণত হয়েছেন।

চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি জানান: পাবনার চাটমোহরে কঠোর লকডাউনের মঙ্গলবার কঠোর অবস্থানে ছিল চাটমোহরের প্রশাসন। লোকজন বাড়ির বাইরে বের না হওয়ায় রাস্তাঘাট ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তবে হাট বাজারে মানুষের ভিড় ছিল। সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন ইসলাম সেনাবাহিনী নিয়ে টহল দেন পৌর সদরসহ বিভিন্ন এলাকায়।

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) সংবাদদাতা জানান: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে করোনা রোগী। প্রতিদিনেই দীর্ঘ হচ্ছে রোগীর তালিকা ইতি মধ্যে মৃত্যুরও খবর পাওয়া গেছে। সূত্র মতে গত ১ মাসে চিলমারী হাসপাতালে ২শ’ ২৯ জনের করোনা টেস্ট হয় এর মধ্যে ৬৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়। ১ জনের মৃত্যু হয় এছাড়াও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে রোগী। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে আতঙ্ক আর ঝুঁকি বাড়তেও শুরু করেছে। সরকারের ঘোষণা কঠোর লকডাউন চললেও তা যেন ঘোষনায় সীমাবন্ধ রয়েছে, চলছে লুকোচুরি খেলা। সাইরেন বাজিয়ে আসে প্রশাসন আর সাথে সাথে বন্ধ হচ্ছে দোকানপাট এবং রাস্তা কিংবা চায়ের দোকানে আড্ডায় থাকা মানুষজন আড়াল হলেও প্রশাসনের গাড়ি যাওয়া মাত্র আবার খোলা হচ্ছে সকল দোকানপাট এবং মেতে উঠছে আড্ডায়। থানাহাট বাজার, জোড়গাছহাট, বালবাড়িহাট, টোলোর মোড়সহ বিভিন্ন হাটবাজারে ঘুরে একই চিত্র লক্ষ করা গেছে মুখে নেই মাস্ক চলছে আড্ডা। শুধু তাই হয় কঠোর লকডাউনের মধ্যেও রবিবার জোড়গাছ হাটে বৃহৎ পশুর হাট লাগলেও অজ্ঞাত কারনে প্রশাসন ছিল নীরব। এদিকে লকডাউনে বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর খেটে খাওয়া মানুষ।

চট্টগ্রাম ব্যুরো : আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থান, মোড়ে মোড়ে চেকপোস্টে তল্লাশির মধ্যেও চট্টগ্রামে লোকজনকে ঘরে আটকে রাখা যাচ্ছে না। নানা অজুহাতে রাস্তায় নামছে মানুষ। উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল নগরীর প্রায় সব সড়কে ছিল যানবাহন আর মানুষের জটলা। কোনো কোনো এলাকায় যানজট দেখা যায়। অলিগলি, হাটবাজারে উপচেপড়া ভিড় লেগেই আছে। চেকপোস্টে তল্লাশির মুখে রাস্তায় নামার নানা কারণ বলছেন লোকজন। তবে লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া খেটে খাওয়া মানুষ চরম দুঃসময় পার করছে। কাজের খোঁজে রাস্তায় নেমেও তারা কোনো কাজ পাচ্ছেন না। সরকারি কোনো সাহায্যও জুটছে না অনেকের ভাগ্যে।

এদিকে কোনো কোনো এলাকায় দোকানপাটও খুলতে শুরু করেছে। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতিদিন মামলা এবং জরিমানা আদায় করছেন। তবুও থামছে না বিধিনিষেধ ভাঙার প্রবণতা। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউন সফলে আরো বেশি কঠোর হওয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অহেতুক রাস্তায় আসলে আটক এবং দোকানপাট খোলা রাখলে তা সিলগালা করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোমিনুর রহমান। সেনাবাহিনী, র‌্যাব ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে। মহানগরী এবং জেলার বিভিন্ন সড়ক মহাসড়কে চলছে তল্লাশি।

স্টাফ রিপোর্টার গাইবান্ধা জানান : কঠোর লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে গাইবান্ধা শহরে সব ধরনের যানবাহন এবং হেঁটে চলা মানুষের সংখ্যা আগের তুলনায় আরো বেড়েই চলছে। শহরের বাইরে এলাকা গাইবান্ধা-বাদিয়াখালি-বোনারপাড়া সড়ক, গাইবান্ধা-নাকাইহাট সড়কে সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোবাইক ও মটরসাইকেল যথারীতি চলাচল করছে। বিশেষ করে দ্রুত গতির মটরসাইকেলের চলাচল বেড়ে যাওয়ায় লকডাউনের এই সময়ে হেঁটে চলাচল করা লোকজন নানা সমস্যায় পড়ছে। এদিকে শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে মানুষ লকডাউন মানছে না। ফলে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা থাকছে।

বিশেষ করে গাইবান্ধা কলেজ রোডের প্রফেসর কলোনী, সুন্দরজান মোড়, তিনগাছের তল, গাইবান্ধা-সাঘাটা সড়কের ইন্দ্রারপাড়, বাংলা বাজার, বোর্ড বাজারসহ সদর উপজেলার চকমামরোজপুর, ভেড়ামারা ব্রিজ সংলগ্ন মোল্লা বাজার, পাঁচজুম্মা, স্কুলের বাজার এলাকাসহ হাট-লক্ষ্মীপুর, দারিয়াপুর বাজারগুলোতে দোকানপাট খোলা ছিল। এদিকে লকডাউন কার্যকরে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, বিজিবি সদস্যদের টহল এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম অব্যাহত ছিল।

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান : মঙ্গলবার সকাল থেকে ঝালকাঠির বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে অসহায়দেরকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে সেনাবাহিনী। লকডাউনে কর্মহীন অসহায় পরিবারের সদস্যদের হাতে চাল, ডাল, তেল, লবণ, আটা তুলে দেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭ পদাতিক ডিভিশন বরিশাল এরিয়ার ২২ ইঞ্জিনিয়ার ব্যাটালিয়নের ক্যাপ্টেন সানজিদা। সেনাবাহিনীর খাদ্য সহায়তা পেয়ে খুশি অসহায় মানুষ।

নোয়াখালী ব্যুরো : কবিরহাট ও চাটখিল উপজেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১৪৭ জন। জানা গেছে, লকডাউনে নোয়াখালীতে সব ধরনের দুরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় সড়কে ছোট যানবাহন, ব্যক্তিগত গাড়ি ও মানুষের উপস্থিতি কিছুটা বেড়েছে। জেলার বিভিন্ন সড়কে কয়েকটি অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করতে দেখা গেছে। জেলা শহর মাইজদী, সোনাপুর, বাণিজ্যিক চৌমুহনীসহ বড় বাজারগুলোর সকল শপিংমল, মার্কেট বন্ধ থাকলেও কিছুসংখ্যক দোকানের সাটার অর্ধেক খোলা রেখে ব্যবসা চালাচ্ছেন ব্যবসায়ী। ভ্রাম্যমাণ আদালত ও প্রশাসনের উপস্থিতিতে দোকান বন্ধ করলেও পরে পুনঃরায় আবার দোকান খুলছেন তারা। মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে পুলিশ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি কাজ করছে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, বিজিবি, আনসারসহ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনী ও স্কাউট সদস্যরা। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট।

জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. খোরশেদ আলম খান জানান, লকডাউন কার্যকর করতে ও জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করতে জেলার বিভিন্ন বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। অভিযানকালে আইন অমান্যকারী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ১১৪টি মামলায় ৮৬ হাজার ৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে আমাদের এ অভিযান অব্যহত থাকবে বলেও জানান তিনি। এছাড়াও লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের বিভিন্ন পয়েন্টে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৪টি চেকপোস্ট বসিয়ে লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে। কঠোর নজরদারির পরেও রাস্তায় মটরসাইকেল, বাটারিচালিত রিকশা ও মানুষের চলাচল বেড়েছে। এদিকে জেলা প্রশাসনের সহায়তায় মাঠে কাজ করছে সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা। এছাড়া র‌্যাব ও আনসার সদস্যরাও মাঠে টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নের্তৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে কাজ করছে। পুরো জেলায় শহর এলাকায় মানুষের চলাচল সীমিত করা হয়েছে। চেকপোস্টে সাধারণ মানুষ বিভিন্ন অজুহাত দেখাচ্ছে। অপরদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও কাঁচাবাজার ছাড়া জেলার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, মার্কেটসহ দোকান-পাট বন্ধ রয়েছে। সড়ক ও মহাসড়কে জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল করছে। এছাড়া বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন।

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিনে টাঙ্গাইলে অভিযান পরিচালনা করে ৭ হাজার ৬শ’ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা খাইরুল ইসলামের নেতৃতে অভিযান পরিচালন করে এ জরিমানা করা হয়। এসময় র‌্যাব-১২ সিপিসি-৩ এর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ৯টি মামলায় ৭ হাজার ৬শ’ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সর্বাত্মক কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।



 

Show all comments
  • Sumona Suma ৭ জুলাই, ২০২১, ১:১৫ এএম says : 0
    আল্লাহ সবাইকে মাফ করে দাও, আর কারো মায়ের কোল খালি করিও না, আর কাউকে এতিম করিও না, সবাইকে তোমার ইবাদত বন্দেগি করার তৌফিক দান করো
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hossain ৭ জুলাই, ২০২১, ১:১৭ এএম says : 0
    সঠিক, লকডাউন ডিলে ডালা চলছে, যত গর্জন, তত বর্ষন নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Ibrahim Bin Ferdous ৭ জুলাই, ২০২১, ১:৩২ এএম says : 0
    আহারের ব্যবস্থা না করলে কখনো বাস্তবায়ন হবে না। আগে জনসাধারণ এর মৌলিক চাহিদা পরিপূর্ণ করুন
    Total Reply(0) Reply
  • MD Yeasin Hossain ৭ জুলাই, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
    কাজ হবে কেমনে?? গরীবের জন্য এক নিয়ম আর বড় লোকের জন্য আরেক নিয়ম
    Total Reply(0) Reply
  • Nahid Hossain ৭ জুলাই, ২০২১, ১:৩৩ এএম says : 0
    কোন বিকল্প ব্যাবস্থা না নিলে মানুষ কে আটকানো যাবে না!
    Total Reply(0) Reply
  • Aslam ৭ জুলাই, ২০২১, ১:৩৪ এএম says : 0
    সুনির্দিষ্ট ও সুপরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা এর অভাবে যেমন এ দেশে কত নগর গড়ে উঠেছে যার কূফল নগরবাসী তথা রাষ্ট্র ভোগ করছে তেমনি বর্তমান সর্বাত্মক লকডাউন এর চলমান কার্যপ্রণালী সুদৃঢ়তার অভাবে যেন দেশবাসী কঠিন পরিস্থিতিতে না পড়তে হয় সে বিষয়ে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ কামনা করছি।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Salim Mia ৭ জুলাই, ২০২১, ১:৩৫ এএম says : 0
    ব্যাংক,বেসরকারী অফিস, গার্মেন্টস কলকারখানা খোলা, ব্যক্তিগত যানবাহন,অটোরিকশা সবাই চলে,তাহলে কিসের লগডাউন,এজন্যই মানুষ মরতেছে ও রোগী ভারতেছে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ