পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রশাসনের সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের জন্য দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা গত ২০২০-২১ অর্থবছরে বরাদ্দ দিয়েছিল সরকার। যা এর আগের অর্থবছরের তুলনায় যা ৭০ কোটি টাকা বেশি। কিন্তু করোনা মহামারিই সরকার ও জনগণের প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা বাঁচিয়ে দিয়েছে। কিন্তু গত বছরের জানুয়ারির শুরুতে মহামারির জন্য আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়ে যাওয়ায় মিটিং, সেমিনার, প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার মতো বৈশ্বিক ইভেন্টগুলো স্থগিত হয়ে যায়। এ কারণে এই খাতে বরাদ্দ ২ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ করা সম্ভব হয়নি। তার আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরেও প্রায় ৫০০ কোটি টাকা বেঁচে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। এছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গাড়ি কেনার জন্য বরাদ্দ খরচ ৫০ শতাংশে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারি কর্মকর্তাদের ঘন ঘন বিদেশযাত্রা বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
বিদেশ ভ্রমণের খরচ দেয়া হয় রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট থেকে। সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে বিদেশ ভ্রমণের ঝোঁক অব্যাহতভাবে বাড়তে থাকার দরুন প্রতি বছর এই খরচ বেড়েই চলেছিল। কিন্তু গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো কোডিভ রোগী শনাক্ত হয়। পরে করোনা মহামারি এটাকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে এসেছিল। মাঝপথে আবার করোনার থাবা সারাবিশ্বে। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে ভ্রমণ খাতে বরাদ্দ অর্থের ৫০ শতাংশ বাতিলের পাশাপাশি সব রুটিন ট্যুর বাতিলের অনুরোধ জানায়। এ পরিপত্রে বলা হয়, কেবলমাত্র জরুরি প্রয়োজন ও অনিবার্য পরিস্থিতিতে এই অর্থ খরচ করা যাবে। মহামারির কারণে মিতব্যায়িতার আরেকটি উদ্যোগের অংশ হিসেবে একই দিনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরেকটি পরিপত্রে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গাড়ি কেনার জন্য বরাদ্দ খরচ ৫০ শতাংশে নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও প্রকল্পের কর্মকর্তার প্রতি বছর নানা প্রশিক্ষণ, মিটিং ও সেমিনারে অংশ নেওয়ার জন্য বিদেশে যান। বিদেশ ভ্রমণের ব্যাপারে মন্ত্রীদেরও ঝোঁক দেখা যায়। কিছু ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ তৈরি করে সেখানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তাদের যুক্ত করে থাকে। প্রকল্পের জন্য যাদের আসলে কিছুই করার থাকে না। সরকারি কর্মকর্তাদের এমন ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণের প্রবণতা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। জনগণের পয়সায় এমন অনেক ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো ফলাফল আসে না। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এমন ঘন ঘন বিদেশযাত্রার বিরুদ্ধে সংসদে এ নিয়ে কথা বলেছেন। করোনাভাইরাস মহামারি গত বছরের পুরো সময় জুড়ে এই ধরনের ভ্রমণ খরচের লাগাম টানতে সক্ষম হয়েছিল। গত বছরের জানুয়ারিতেই সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের মাত্রা কমতে আসা শুরু হয়। গত বছর মার্চে দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর তা কার্যত বন্ধই হয়ে যায়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাবে এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেয়ার পরে সকল মন্ত্রলালয়ের সচিবকে
বিদেশ ভ্রমণ বন্ধ করতে বলা হয়েছে। দু-একজন মন্ত্রী বাদে এ সময়ের মধ্যে এই খাতে আর কারও তেমন কোনো ব্যয় হচ্ছে না। সাধারণত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব পর্যায় পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের ফাইলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী সই করেন। এই পদমর্যাদার ওপরের কারও ফাইলে প্রধানমন্ত্রীর সই দরকার হয়। তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনও দু-একবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তুফা কামাল তিন বার দেশের বাইরে সফর করেছেন। তা কিন্তু এর সব খরচ নিজেই বহন করেছেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনাভাইরাস পরীক্ষা ও কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকার অতিরিক্ত খরচের জন্য কর্মকর্তারা এখন আর বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আগ্রহী হচ্ছেন না। তিনি আরো বলেন, যদিও এলডিসি থেকে উত্তরণের পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরে কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারি কর্মকর্তাদের দেশের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন আছে। যাতে করে তারা সেখানকার ভালো চর্চাগুলোর বিষয়ে জ্ঞানার্জন করতে পারে।
পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট বাস্তবায়নের ওপর তৈরি এক প্রতিবেদনেও বিদেশ ভ্রমণের জন্য বরাদ্দের বিষয়টি আলোচিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ, পরিকল্পনা বিভাগ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিভাগ বিদেশ ভ্রমণের বরাদ্দের চাইতে কম খরচ করেছে। জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের সভায় উপস্থাপিত ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দেশের বাইরে পূর্ব নির্ধারিত প্রশিক্ষণ, কর্মশালা ও সেমিনার বাতিল হওয়ার বিষয়টি খরচ কম হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
গত বছর অর্থনৈতিক বিভাগের একটি পরিপত্র অনুসারে জাতীয় সংসদের স্পিকার, মন্ত্রী, সচিব, সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশি মিশনগুলোতে কর্মরত রাষ্ট্রদূতরা তাদের বিশেষ স্ট্যাটাস অনুযায়ী হোটেল খরচ হিসেবে দৈনিক ২৩০ থেকে ৫৬০ ডলার পর্যন্ত ভাতা পান। এ ছাড়া খাবার, বকশিশ ও যাতায়াতের জন্য তাদের দৈনিক ৮৭ থেকে ১২৭ ডলার পর্যন্ত ভাতা দেওয়া হয়। এদিকে জেনারেল বা সাধারণ স্ট্যাটাসের আওতাধীন কর্মকর্তাদের হোটেল খরচের জন্য বরাদ্দ থাকে ১১৬ ডলার থেকে ২৮০ ডলার। অন্যান্য খরচ নির্বাহের জন্য তাদের ৬৪ ডলার থেকে ১০১ ডলার করে দেওয়া হয়। মন্ত্রীরা বিনোদনের জন্য ৭০০ ডলার এবং প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীরা ৬০০ ডলার করে খরচ করতে পারেন। অন্যদিকে কেবিনেট সচিব, মূখ্যসচিব, জ্যেষ্ঠ সচিব, সচিব ও সম পদমর্যাদার সামরিক কর্মকর্তাদের এ বাবদ ৫০০ ডলার পর্যন্ত খরচের অনুমোদন আছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।