Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে পরিস্থিতি

রংপুর কোভিড হাসপাতাল হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৬ জুলাই, ২০২১, ১২:০০ এএম

রংপুর বিভাগের প্রতিটি জেলায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। প্রতিদিন করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ইতোমধ্যে রংপুরে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের সব শয্যা ভরে গেছে। বর্তমানে কোন শয্যা খালি না থাকায় ঠাঁই মিলছে না এই হাসপাতালে। বরং ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত রোববার জরুরী ভিত্তিতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় একটি ৫০ শয্যার নতুন একটি ইউনিট চালু করা হয়েছে। সেখানে আইসিইউ সুবিধা নেই। বর্তমানে সেখানেই করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নার্স ও চিকিৎসক স্বল্পতার কারণেও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। তাই ভলান্টিয়ার চিকিৎসক হিসেবে আত্মনিয়োগ করার জন্য তরুন চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এসএম নুরুন্নবী।
জানা গেছে, রংপুর শিশু হাসপাতালের জন্য নির্মিত তিন তলাবিশিষ্ট ১০০ শয্যার হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। শুরুতে ১০টি আইসিইউ বেড নিয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করলেও ২টি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে মাত্র ৮টিতে ভেন্টিলেটর সুবিধা রয়েছে। সবক’টি আইসিইউতে রোগী থাকায় নতুন রোগী আইসিউতে নেয়ার সুযোগ না থাকায় কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার হাসপাতালের মুল ফটকে ‘আইসিইউ বেড খালি নেই’ মর্মে নোটিশ ঝুলিয়ে দেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতল সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মাত্র ২০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে সেখানেও বেড খালি নেই। হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মুমুর্ষ রোগীদের চাপ প্রতিদিন বাড়তে থাকলেও আইসিইউ বেড খালি না থাকায় আইসিইউতে রোগী নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে মুমুর্ষ রোগীরা সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রংপুর বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাসপাতাল হিসেবে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হওয়ায় এখানে প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় শতাধিক রোগী ভর্তি হয়। কিন্তু এত বড় হাসপাতালে মাত্র ২০টি আইসিইউ বেড দিয়ে বিভাগের আট জেলার রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন, শুধুমাত্র রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেই কমপক্ষে ১০০ আইসিইউ বেড দরকার। সেখানে মাত্র ২০টি বেড। এই ২০টি বেডে এত বড় হাসপাতালের মুমুর্ষ রোগীদের মেইনটেইন করা সম্ভব নয়।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় জানিয়েছেন, গত এক সপ্তাহ ধরে রংপুর বিভাগে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে চলেছে। দুদিনেই ডেডিকেটেড হাসপাতালের শয্যা ভরে গেছে। বর্তমানে সেখানে ধারণ ক্ষমতার চেয়েও বেশি রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এভাবে রোগী বাড়লে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে রোগীর শয্যা সঙ্কুলান না হওয়ায় রোববার থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি ইউনিটে ৫০ শয্যার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে আইসিইউ সুবিধা না থাকলেও সেন্ট্রাল অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ইউনিটে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকগন চিকিৎসা সেবা প্রদান করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগের ৮ জেলায় দেড় কোটির বেশি মানুষের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ৪৬টি। এর মধ্যে রংপুর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ১০টি (সচল ৮টি), রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০টি এবং দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬টি।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর দিকেই এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধির কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। বর্তমানে রংপুর ও দিনাজপুর ছাড়া বিভাগে বাকি ৬ জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার কোনো হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই।
এদিকে, করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংশ্ল্ষ্টি চিকিৎসকদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে কারনে স্বেচ্ছাসেবক চিকিৎসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের আহবান জানিয়ে ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন হাসপাতালটির তত্বাবধায়ক এসএম নুরুন্নবী।



 

Show all comments
  • সাইফ আহমেদ ৬ জুলাই, ২০২১, ১:৫২ এএম says : 0
    ভারতের কাছে বাংলাদেশ অনেক কিছু চেয়েছে কিন্তু কিছুই পাইনি ।এইবার বাংলাদেশ কে জা দিয়েছে সরকার সামলাতে পারলেই হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • তানিম আশরাফ ৬ জুলাই, ২০২১, ১:৫৩ এএম says : 0
    দুনিয়ায় যখন মানুষের পাপের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়, তখন আল্লাহর হুকুমে বিভিন্ন ধরনের বিপদ আসে। হে আল্লাহ সকোল বিপদ -আপদ থেকে আমাদের রক্ষা করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • তারেক আজিজ ৬ জুলাই, ২০২১, ১:৫৩ এএম says : 0
    একটা ভাইরাসে কত কোটি মানুষ মারা যেতে পারে! মানুষের মৃত্যু কখনোই বিপর্যয় কারন হতে পারে না, বরংচ এটার ভয়ে সব কিছু ইস্তিমিত করে রাখলে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা থাকবে, ধনি রাষ্ট্র তাদের ক্ষতি পুসিয়ে নিতে পারলেও উন্নয়নশীল ও অউন্নত দেশ গুলো শেষ হয়ে যাবে, তৈরি হবে জাতিগত পার্থক্য।
    Total Reply(0) Reply
  • গাজী ফজলুল করিম ৬ জুলাই, ২০২১, ১:৫৩ এএম says : 0
    Only perfect vaccine r health awareness is the best policy.Not lockdown r shutdown.
    Total Reply(0) Reply
  • তৌহিদুজ জামান ৬ জুলাই, ২০২১, ১:৫৪ এএম says : 0
    মনে হয়না সহসা করোনা হতে বিশ্ববাসী মুক্তি পাচ্ছে,তাই আমাদের এই চিন্তা মাথায় রেখে লকডাউন শাট ডাউন প্রত্যাহার করে কিভাবে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা যায় তার পথ খুঁজে বের করতে হবে এবং তা সম্ভব বিশেষজ্ঞগনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ