পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কঠোর লকডাউন বাড়বে কি না কিংবা স্বাভাবিকভাবে কোরবানির হাট বসবে কিনা এমন প্রশ্ন ঘুরছে কোরবানি পশু খামরি ও এ সংশ্লিষ্ট মানুষদের মধ্যে। ব্যক্তি বিনিয়োগ, এনজিওর কিস্তি লোনের টাকায় প্রস্তত করা লাখ লাখ কোরবানীর গবাদী পশু নিয়ে চিন্তায় পড়েছে খামার্রি। তারা দাবি করছেন দ্রুত এ ব্যাপারে সরকারি সিদ্ধান্ত জানানো হোক। আমাদের সংবাদদাতারা জানিয়েছেন উত্তরের কোরবানি পশু ও হাটের বর্তমান পরিস্থিতির কথা:
বগুড়া ব্যুরো জানান : বন্যার সময় এগিয়ে আসায় এবং গত বছরের মতো বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব হলে কি হবে সেটা নিয়ে চিন্তিত খামারিরা। রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় এবং বগুড়া জেলা পশু সম্পদ অধিদফতরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে গত কয়েক বছরের মত উত্তরের ১৬ জেলায় এবারও কম বেশি ১৬-১৭ লাখ গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল মিলিয়ে ৫০ লাখেরও বেশি কোরবানীর পশু প্রস্তত আছে ব্যাক্তি ও খামার কেন্দ্রিক প্রতিষ্ঠান সমূহে।
জানা গেছে, বিভিন্ন ঘাত প্রতিঘাত পেরিয়ে ও উত্তরাঞ্চলের সর্বত্রই গত কয়েক বছরে ব্যক্তি ও বিভিন্ন সংস্থার প্রজেক্ট পর্যায়ে গড়ে উঠেছে হাজার হাজার ডেইরী ও পশু খামার। ধারণামতে এই খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ হাজার কোটি টাকার কম নয় বলে দাবি উদ্যোক্তাদের। সরকারি বেসরকারি ব্যাংক, এনজিও ও বৈধ বা অবৈধ হোক বহু অর্থনৈতিক সমিতিগুলো বিনিয়োগ করেছে এই খাতে।
বিশেষ করে বিদেশি অর্থায়নে পদ্মা, যমুনা, তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদী ও নদের চরাঞ্চলে শত শত বাথানের হাজার হাজার গরু, খাসি, মহিষ ও ভেড়াকে কোরবানি উপযোগি করে প্রস্তত করেছে ছোট বড় উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তা ও সফল গবাদী পশুর খামারি সামসুল আবেদনি সবুর বলেন, গত বছর করোনা, দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে দুর্গম এলাকার খামারিরা হাটে এনে গর, ছাগল, ভেড়া স্বাভাবিকভাবে বিক্রি করতে পারেননি। কঠোর লকডাউনের কারণে এবারো যদি কোরবানির জন্য প্রস্তুত পশু বিক্রি না হয় তাহলে এই খাতে বিনিয়োগ করা হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ অর্থলগ্নি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তা সবাই ক্ষতির মুখে পড়বে।
করোনা পরিস্থিতির কারণে ঘোষিত কঠোর লকডাউনের কারণে অঘোষিতভাবে চলা উত্তরাঞ্চলের গ্রাম পর্যায়ের হাট গুলোতে কোরবানীর পশু বেচা বিক্রি জমে ওঠেনি। এর কারণ হাটগুলোতে পশুর আমদানি হলেও ক্রেতারা হাটে আসতে পারছেন না। কঠোর লকডাউন কড়াকড়িভাবে পালনের জন্যই মূলত ক্রেতারা আসতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
লালপুর (নাটোর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান : কোরবানিকে সামনে রেখে ৩২ হাজারের বেশি গবাদি পশু উৎপাদন করেছেন লালপুরের খামারিরা। এসব পশু বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে দফায় দফায় লকডাউনের কারণে কোরবানির এসব পশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। গতবার ঈদে লোকসানের পর ঘুরে দাঁড়াতে চাইলেও সেই আশার গুঁড়েবালি বলেই ধরে নিয়েছেন এখানকার খামারিরা।
লালপুর উপজেলার ৭৭৬ টি ছোট-বড় খামারে দেশী-বিদেশী কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন খামারিরা। করোনার প্রাদুর্ভাব ও লাগাতার বৃষ্টির প্রকপে ক্রেতা না থাকায় ও বাজারে পশুর সঠিক দাম না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের পশু ব্যবসায়ী ও খামারিরা।
লালপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সোয়া ৩২ হাজারের বেশি পশু। এর মধ্যে গরু ১১ হাজার ৭২৮ টি, ছাগল ২০ হাজার ৩৩ টি ও মহিষ ৪৪৫ টি। যা গত বছরের তুলনায় মোট পশুর প্রায় এক হাজার পশু বেশি। আর এসব পশুর অধিকাংশই প্রস্তুত করা হয়েছে বাসা বাড়িতে।
সরেজমিনে উপজেলার বিভন্ন খামার ঘুরে দেখা গেছে, ছোট খামার গুলোতে ৩-৫টি ও বড় খামার গুলোতে ৫-১০টি করে কোরবানি উপযোগী গরু রাখা আছে। বাসা বাড়িতে গরু প্রস্তুত করেছন এমন অনন্ত ১০ জন খামারির সাথে কথ বলে জানা গেছে ক্রেতা সঙ্কটে গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা।
উপজেলার দুড়দুড়িয়ার মাহাবুর রহমান নামের এক একজন খামারি তিনি কোরবানি ঈদ সামনে রেখে দুইটি গরু প্রস্তুত করেছেন। ঈদ ঘনিয়ে আসলেও এখনো গরুর কেনার জন্য তেমন কোন ক্রেতা আসেনি। এবার করোনার কারনে বাজারেও গরুর তেমন চহিদা না থাকায় দাম খুব কম। ২টি গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তিনি।
উপজেলার কাজিপুর এলাকার হেরা এগ্রো এন্ড ফিশারিজ খামারের মালিক আব্দুল মোতালেব রায়হান। তার খামারে কোরবানিতে বিক্রয় উপযোগী গরু রয়েছে ২০টি। প্রায় ৩০ লাখ টাকার গরু বিক্রি নিয়ে দিনরাত দুশ্চিন্তায় ভুগছেন তিনি।
গরু ব্যবসায়ীরা বলেন, গত বছর ও করোনার কারনে গরুর দাম কম ছিলো। তার পরেও যে গরু বিক্রি হয়েছে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় এ বছর একই সাইজের গরু বিক্রয় হচ্ছে ৭০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা। বিভিন্ন পশু হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট সাইজের একটি দেশীয় গরু ৪০-৫০ হাজার টাকা, মধ্যম সাইজের একটি গরু ৫৫-৬৫ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের একটি গরু এক লাখ থেকে ১ লাখ ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ছাগল ছোট সাইজের ৫-৬ হাজার টাকা, মধ্যম ৭-১২ হাজার টাকা এবং বড় সাইজের ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ হাজার টাকায়।
লালপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা সুমারী খাতুন ক্রেতা না থাকা ও দাম কমের কথা স্বীকার করে জানান, এ বছর খামারিরা তাদের পালনকৃত পশু বিক্রয় নিয়ে অনেকটা বিপদে রয়েছেন। পশু বিক্রি করোনা পরিস্থিতির উপর নির্ভর করবে। জেলা থেকে এবছরও অনলাইনে পশু কেনাবেচা করার ব্যবস্থা নিবে। আশা করছি এবছরও তারা লাভবান হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।