পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সরকার কর্তৃক ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীসহ সারাদেশে কাজ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিধিনিষেধ অমান্য করে অকারণে ঘোরাফেরা করায় ৬১৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১৬১ জনকে ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের এডিসি ইফতেখারুল ইসলাম জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ১৬১ জনকে ৫৪ হাজার ৪৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া ডিএমপি ট্রাফিক কর্তৃক ৪৯৬টি গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা করে ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর আগে লকডাউনের প্রথম দিন ৫৫০ ও দ্বিতীয় দিন ৩২০ ও তৃতীয় দিনে ৬২১ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে, গতকাল বিকালে রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান পরিচালনা করে। র্যাব-৩ এর সহযোগিতায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে কাকরাইল মোড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন। এ সময় জাহাঙ্গীর নামে এক রিকশাযাত্রীকে নামানো হয়। তিনি জানান, রোগীর জন্য ওষুধ কিনতে মালিবাগ যাচ্ছেন। ম্যাজিস্ট্রেট প্রেসক্রিপশন দেখতে চাইলে তিনি একটি কাগজ দেখান। যেখানে ওষুধের নাম লেখা থাকলেও নিচে কর্তব্যরত চিকিৎসকের নাম বা সিল-স্বাক্ষর কিছুই নেই। শুধু ‘অর্ডার বাই ডক্টর’ লেখা। যা নার্স লিখে দিয়েছেন বলে জানান তিনি। ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, এটা প্রেসক্রিপশন নয়। ইনভেস্টিগেশন স্লিপ। প্রেসক্রিপশনে যেমনটা থাকে তা এখানে নেই। এটা অবশ্যই ভুয়া। যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া বের হয়েছেন জাহাঙ্গীর নামের ওই যুবক। এজন্য রিকশা থেকে নামিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৩০০ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন।
শুধু জাহাঙ্গীর নয় এমন অনেকেই ঘর থেকে বেড়িয়েছেন যাদের কেউ মাশরুম কিনতে, কেউ আত্মীয়ের বাসায় খাবার দিতে, আবার কেউ যাচ্ছেন বসের বাসায় গৃহস্থালি কাজ করতে। এমন ১৬ জনকে বিকেল সোয়া ৫টা পর্যন্ত করোনার সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধ লঙ্ঘনের কারণে বিভিন্ন মোট ৭ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযান পরিচালনা শেষে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, সরকার যে কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে তা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদী জীবিকা নিশ্চিত করার জন্য। হয়তো লকডাউনের কারণে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু এর দীর্ঘমেয়াদী ফল রয়েছে। ব্যক্তি পরিবার, সমাজ ও দেশকে করোনা থেকে সুরক্ষার দিকটা বিবেচনায় আমরা কঠোরভাবে সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনে চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, এবার সরকারি বিধিনিষেধ পরিপালনে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। একান্তই জরুরি ও অত্যাবশ্যক কারণ ছাড়া বা লকডাউনের বিধিনিষেধের নির্দেশনার আওতার বাইরে যারা রয়েছেন শুধু তারা বের হতে পারছেন। এর বাইরে আমরা চেকপোস্ট বসিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। যাদের কারণ যথোপযুক্ত মনে হচ্ছে না তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু বলেন, এর মধ্যেও আমরা দেখতে পাচ্ছি যে কেউ যাচ্ছেন মাশরুম কিনতে, কেউ আবার যাচ্ছেন ফুটবল খেলার অ্যাঙ্কলেট কিনতে, আবার কাউকে কাউকে বলতে শুনলাম ধোলাইপাড়ে ঘুরতে যাচ্ছেন। যা করোনার কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে পড়ে না। এ জন্য জরিমানা করা হয়েছে। আমরা জরিমানার চেয়ে সচেতনতাকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। তবে নিয়ম না মানলে কঠোর আইন প্রয়োগে পিছুপা হব না। এদিকে, গত শনিবার রাজধানী থেকে আটক ব্যক্তিদের গতকাল আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত ৬৩৬ জনকে জরিমানা করেছেন।
জরিমানার পরিমাণ জনপ্রতি একশ থেকে তিনশ টাকা হলেও আটকদের স্বজনদের অভিযোগ, তাদের কাছ থেকে আইনজীবী পরিচয়ে ছয়শ থেকে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হয়েছে, এমনকি অনেকের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্তও নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত টাকা না দেয়ায় অনেককে আটক করে রাখারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঢাকা আইনজীবী সমিতির লাইব্রেরি সম্পাদক শারমিন সুলতানা হ্যাপি বলেন, কঠোর বিধিনিষেধ চলায় অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হচ্ছেন। এরপর তাদের আদালতে পাঠানো হচ্ছে। আদালত তাদের ক্ষেত্রবিশেষ একশ থেকে তিনশ টাকা পর্যন্ত জরিমানা করেন। কিন্তু এখানে আইনজীবী পরিচয় দিয়ে কিছু অসাধু লোক আটকদের স্বজনদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। আমরা অসাধু লোকজনদের আটক করে সতর্ক করছি। অসাধু লোকজনদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।