পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এনবিআরের অধীন দেশের ১২টি ভ্যাট কমিশনারেটের কারো গত জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কুমিল্লার প্রবৃদ্ধি ৩৮ শতাংশ। গত বছরের জুনের তুলনায় এ প্রবৃদ্ধি ৬২ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে ভ্যাট অনলাইন রিটার্ন জমায় টানা দশবার সেরা হয় কুমিল্লা। গেলো বছরের সেপ্টেম্বরে বছরের সেরা মাসিক ১৫৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিও কুমিল্লার।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট কুমিল্লার সাফল্যের গল্পে রয়েছে ভিন্নতা। এ ভিন্নতাকে আশাতীত, নজীরবিহীনও বলা যায়। কারণ অভাবনীয় এসব সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে দেড় শতাধিক কর্মকর্তার রাজস্ব আদায়ে বৈপ্লবিক নানান আনকোরা গল্প।
যেমন একজন রাজস্ব কর্মকর্তা জানতে পারেন বকেয়া টাকা দেয়ার মতো সামর্থ্য ইটভাটা মালিকের নেই। তিনি পরিচিত একজনের কাছে পরবর্তী সিজনের ইট অগ্রিম বিক্রয় করিয়ে দেন। বিক্রিত ৯ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করান। আরেক রাজস্ব কর্মকর্তা মৃত ব্যক্তির স্ত্রীর সাথে দেখা করে সন্তানদের বোঝান। মরহুমের রেখে যাওয়া সাতাশ’ বছরের পুরনো বকেয়া ৯.৫০ লাখ টাকা আদায় করেন। অপেক্ষা ও অনুমতির পর চাঁদপুর জেলখানার জেলারের সাথে সাক্ষাৎ করে ৭ লাখ টাকা বকেয়া আদায়। কুমিল্লায় এমন অসংখ্য চমকপ্রদ গল্পের সাফল্যিক জন্ম হয়েছে এক বছরে।
বছরের শুরুতে এনবিআরের চেয়ারম্যান আবু হেনা রাহমাতুল মুনিম মুজিববর্ষ ও মহামারীতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য আহŸান এবং বছরব্যাপী সার্বক্ষণিক তদারকি অব্যাহত রাখেন। এই অর্থবছরেই কুমিল্লা বিগত সব অর্থবছরের রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় করেছে। করোনার এই ভয়াবহ দিনকালেও কুমিল্লা গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় করেছে ৩১৩৪ কোটি টাকা। এর আগে কুমিল্লা কমিশনারেটের ইতিহাসে এক অর্থবছরে (২০১৮-১৯ অর্থবছর) সর্বোচ্চ রাজস্ব আদায় ছিল ২৯৫৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ে নানামুখী উদ্যোগের ফলে এ অবিশ^াস্য সাফল্য এসেছে বলে মনে করেন কুমিল্লা কমিশনারেটের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ। কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরীর যোগদানের পর সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ও নিবিড় মনিটরিং সার্বিক ব্যবস্থাপনার ফলে রাজস্ব জমা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর জন মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জুন নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩৬৯ কোটির বিপরীতে ৫১০ কোটি টাকা আদায়। সিগারেট ব্যতীত অন্যান্য প্রচেষ্টা খাতে ২০২০ জুলাই থেকে ২০২১-মে পর্যন্ত মাসিক গড় রাজস্ব ৯৮ কোটি টাকা, চলতি বছর জুন মাসে প্রচেষ্টা খাতে ১৪৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২৪০ কোটি টাকা আদায়। অন্যান্য কমিশনারেটগুলো চলতি জুন মাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারেনি।
কুমিল্লা বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছালাউদ্দিন রিপন বলেন, রাজস্ব আদায়ের জন্য বিভাগ হতে একাধিক বিশেষ টিম গঠন করা হয়। রাজস্ব আদায়ের জন্যে প্রত্যন্ত অঞ্চলে যেতে হয়। পর্যান্ত জনবল ও সার্কেল পর্যায়ে গাড়ি না থাকা সত্তে¡ও কর্মকর্তাদের আন্তরিক পরিশ্রমের ফলে এ অর্জন সাধিত।
কুমিল্লা কমিশনারেটের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আবদুল হাকিম বলেন, করোনাকালে কুমিল্লা টিমে বিশেষ তৎপরতা অব্যাহত আছে। সাহস ও উদ্যম নিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ রাজস্ব আদায়ে কাজ করে যাচ্ছেন। যথাযথ রাজস্ব আদায় নিশ্চিতে উদ্যোগী হওয়ায় রাজস্ব আহরণ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
কুমিল্লা কমিশনারেটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী বলেন, মহামারীতে আগের বছরের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখা কঠিন। সেখানে আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬২ শতাংশ। ভয়কে জয় করে অর্জনকে এ পর্যায়ে নেয়া সহজ ছিল না। একটি ব্যতিক্রমী পরিশ্রমী কর্মপ্রবণ উদ্যমী দলের পক্ষে এমন অর্জন সম্ভব। অর্থবছরের প্রথম থেকে দেড়শ’ সদস্যের টিমকে ৪৭টি জুম সভায় প্রশিক্ষিত ও নিবিড় মনিটরিং করা হয়েছে। সার্কেলগুলোর মধ্যে লাল-হলুদ-সবুজের সুস্থ প্রতিযোগিতায় সাফল্যের অন্যতম কারণ। সদস্যরা রাত ১১টা পর্যন্ত মাঠে অফিসে থেকে সাফল্য তালিকার ওপরে আসতে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেছে। সর্বোপরি দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ টিম সদস্যদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও অনলাইন রিটার্ন জমায় উপর্যুপরি সাফল্য এনে দিয়েছে। কমিশনারেটের অধীন ১৬টি সার্কেল ও ছয়টি বিভাগের সবাই আন্তরিক ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।