Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফাঁকা নেই আইসিইউ বেড দু’টি ভেন্টিলেটরও অচল

রংপুরে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল

হালিম আনছারী, রংপুর থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০২১, ১২:০১ এএম

রংপুরে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালে আইসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) কোন শয্যা খালি নেই। এ কারণে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের মূল ফটকে নোটিশ ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন। এতে করে সঙ্কটাপন্ন রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন খোদ চিকিৎসকগণ।

জানা গেছে, রংপুর শিশু হাসপাতালের জন্য নির্মিত তিন তলাবিশিষ্ট ১০০ শয্যার এই হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য গত বছরের এপ্রিল মাসে ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতাল হিসেবে চালু করা হয়। শুরুতে ১০টি আইসিইউ বেড নিয়ে ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এ হাসপাতালটি যাত্রা শুরু করলেও বর্তমানে মাত্র ৮টিতে ভেন্টিলেটর সুবিধা রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে এখানে গড়ে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জনের বেশি রোগী ভর্তি হওয়ায় হাসপাতালটিতে শয্যা সঙ্কট দেখা দেয়। বর্তমানে সবক’টি আইসিইউতে রোগী থাকায় নতুন রোগী নেয়ার সুযোগ ফুরিয়ে যায়। আর এ কারণে কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার হাসপাতালের মূল ফটকে ‘আইসিইউ বেড খালি নেই’ মর্মে নোটিশ ঝুঁলিয়ে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত শুক্রবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালটিতে ভেন্টিলেটর সুবিধা সম্বলিত ৮টি আইসিইউ বেডের একটিও ফাঁকা নেই। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৮৫ রোগীর মধ্যে আরও ১৫-২০ জনকে আইসিইউ নেয়া প্রয়োজন হলেও শয্যা না থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা মহামারীর প্রকোপ দিন দিন বাড়তে থাকলেও গত এক বছরে হাসপাতালটিতে কোন আইসিইউ শয্যা বাড়ানো হয়নি। বরং দুটি ভেন্টিলেটর অচল হয়ে পড়ে আছে। ১০০ শয্যার হলে এখানে অক্সিজেন পোর্ট একশ শয্যার নয়। হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্স এবং ডেডিকেটেড ওয়ার্ডবয়সহ ক্লিনারের স্বল্পতা রয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রোগীদের গ্রিন জোন, রেড জোনসহ পৃথক পৃথক জোনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। মুমুর্ষ রোগীদের চিকিৎসার্থে অনতিবিলম্বে হাসপাতালটিতে আরও আইসিইউ বেড বাড়ানো প্রয়োজন।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডেডিকেটেড করোনা আইসোলেশন হাসপাতালের ৮টি আইসিইউ বেড ছাড়াও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও ২০টি আইসিইউ বেড রয়েছে। রোগীর চাপের কারণে সেখানেও বেড খালি নেই। প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় আইসিইউ বেড পেতে রোগীর স্বজনদের বাড়ছেই। দু’টি হাসপাতালে মাত্র ২৮টি আইসিইউ বেড দিয়ে বিভাগের আট জেলার রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চিকিৎসকগণ জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশনের আওতায় বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের টেলিমেডিসেনে বাসায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। অথচ আগে তাদের হাসপাতালেই ভর্তি করা হতো। বর্তমানে ৩০-৩৫ জন চিকিৎসক টেলিমেডিসিন সেবা দিচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভাগের ৮ জেলায় দেড় কোটির বেশি মানুষের জন্য আইসিইউ বেড রয়েছে মাত্র ৪৬টি। এর মধ্যে রংপুর ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে ১০টি (সচল ৮টি), রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০টি এবং দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৬টি।
করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর দিকেই এসব হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা বৃদ্ধির কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা করা হয়নি। বর্তমানে রংপুর ও দিনাজপুর ছাড়া বিভাগে বাকি ছয় জেলা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও জেলার কোনো হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ