Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দরপত্র গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অসন্তোষ নলছিটিতে এডিপির ৫৪ লাখ টাকা ফেরত

ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২১, ১:০৭ পিএম

ঝালকাঠির নলছিটিতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ফেরত গেছে। অভিযোগ রয়েছে, গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় কাজ ভাগ করা হয়েছিল, এতে অসন্তোষ দেখা দিলে দরপত্র বাতিল করে উপজেলা পরিষদ। গত ৩০ জুনের মধ্যে নতুন করে দরপত্র আহ্বান করতে না পারায় এ টাকা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফেরত চলে যায়। ফলে উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে কাঁচা রাস্তায় ইট বিছানো (সেলিং) ও কালভার্ট নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন ঠিকাদাররা, উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয়েছে এলাকাবাসী। তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলছেন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় ত্রæটি থাকায় তা বাতিল করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের জন্য ৫৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকায় ১৪টি গ্রæপে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) দরপত্র আহŸান করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। গত ২৪ মে নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী মীর মো. আকতারুজ্জামান এ দরপত্র আহŸান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন। ৬ জুন অফিস খোলা পর্যন্ত দরপত্র বিক্রি ও ৭ জুন পরদপত্র গ্রহণের সময় নির্ধারণ করা হয়। ওই দিন বিকেলে দরদাতাদের উপস্থিতে বাক্স খোলা হয়। উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম শাহিনের নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্রলী ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা দরদাতাদের সমন্বয়ে গুছ প্রক্রিয়ায় ১৪টি লাইসেন্সে কাজ ভাগ করেন। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা পরিষদের এ সংক্রান্ত গঠিত কমিটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান অসন্তুষ্ঠু হন। এমনকি স্থানীয় সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর কাছেও এ প্রক্রিয়াটি নিয়ে অসন্তোষ দেখা দেয়। নিয়মানুযায়ী ৩০ জুনের মধ্যে এডিপির দরপত্রের কাজ সম্পন্ন করতে হবে। কিন্তু কার্যাদেশ না পাওয়ায় ঠিকাদাররা কেউই কাজ করতে পারেননি। ফলে ফেরত যায় প্রায় ৫৪ লাখ টাকা।
কয়েকজন ঠিকাদার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, উপজেলা পরিষদের সমন্বহীনতার কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি বিধায় কাজও সম্পন্ন হয়নি। উল্টো কোন কারণ ছাড়াই গত ১৩ জুন উপজেলা পরিষদের সভায় দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ১৪ গ্রæপের কাজের সিডিউল কেনার জন্য ঠিকাদারদের গুনতে হয়েছে টাকা। দরপত্র করার পরে ৩০ জুনের মধ্যে পুনরায় দরপত্র আহŸান না করায় প্রায় ৫৪ লাখ টাকা ফেরত চলে গেছে। এতে ক্ষতি হয়েছে উন্নয়ন কাজের। এজন্য উপজেলা পরিষদকে দুষছেন ঠিকাদাররা।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মফিজুল ইসলাম শাহিন বলেন, দরপত্র আহŸান করার পরে সবকিছুই সঠিক প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে। কাজ করার জন্য যে সময় ছিল, তাতে এতো দিনে কাজ হয়ে যেতো। কিন্তু কি কারণে দরপত্র বাতিল করা হয়েছে, তা আমার জানা নেই। বিষয়টি কমিটির সভাপতি ও প্রকৌশলী জানেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী মীর মো. আকতারুজ্জামান বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমার হাতে সভার সিদ্ধান্তের কাগজ নেই। তাই বিস্তারিত বলতে পারবো না।
নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুম্পা সিকদার বলেন, দরপত্র আহŸানের পর পর্যাপ্ত সময় ছিল না কাজ সম্পন্ন করার মতো। এর মধ্যে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রেগুলেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী দরপত্র বাতিল করা হয়েছে। ১৩ জুনের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ের মধ্যে দরপত্র আহŸান করে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব ছিল না।
নলছিটি উপজেলা হিসারক্ষণ কর্মকর্তা উত্তম কুমার মন্ডল বলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা তুলে কাজ সম্পন্ন না করায় অর্থ ফেরত গেছে। এ অর্থ আর কখনো ব্যবহার করা যাবে না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও এ সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় ত্রæটি থাকায় তা বাতিল করা হয়েছে। চলতি অর্থ বছরে নতুন বরাদ্দ আসলে এসব কাজ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ