Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মগবাজারে বিস্ফোরণে আরো একজনের মৃত্যু

নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১, পরিত্যক্ত সেই ভবনে পঁচা মাংসের দুর্গন্ধ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০২১, ১১:১৬ পিএম

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণে রাসেল (৩৫) নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ জনে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, রাসেলের শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ ও শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। তাকে প্রথমে এইচডিইউতে রাখা হয়েছে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় গত বুধবার তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। তার শরীরে কাটা-ছেড়ার ক্ষতও ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তার মৃত্যু হয়। বর্তমানে ইনস্টিটিউটে কালু নামে একজন ও ঢাকা মেডিক্যালে আরও তিনজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। রাসেলের চাচা মানারুল হক জানান, তার বাবার নাম জসিম উদ্দিন। বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বনগাঁও গ্রামে। থাকতো মগবাজারে। এলাকার একটি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়তো সে। করোনার কারণে দুর্ঘটনার এক সপ্তাহ আগেই সে মগবাজারে বেঙ্গল মিটে সেলসম্যানের চাকরি নেয়।
মগবাজারের পরিত্যক্ত সেই ভবনে পঁচা মাংসের দুর্গন্ধঃ ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার চারদিন কেটে গেছে। তবে এখনো ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির আশপাশে পড়ে আছে ধ্বংসাবশেষ। ইতিমধ্যে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। ভবনটির নিচতলায় বেঙ্গল মিটের যে দোকানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেখান থেকে বেরোচ্ছে মাংস পঁচা দুর্গন্ধ। গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির চারপাশ ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
আশপাশের স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ভবনটির নিচতলায় অবস্থিত শর্মা হাউজ, বেঙ্গল মিট ও গ্র্যান্ড কনফেকশনারীর দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে শর্মা হাউজ এবং গ্র্যান্ড কনফেকশনারী দোকানে শুকনা খাবার বিক্রি করা হতো। তাই পচনশীল খাবার থাকার সম্ভাবনা নেই। বেঙ্গল মিট তাদের দোকানে মাংস হিমায়িত করে রাখত। ভবনটিতে দুর্ঘটনার পর থেকে বেঙ্গল মিট এর দোকানের ভেতরে ধ্বংস হয়ে থাকা ডিপ ফ্রিজ এখনো সরানো হয়নি। সেখান থেকেই পঁচা মাংস দুর্গন্ধ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। বিস্ফোরিত হওয়া ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে সিঙ্গার কোম্পানির অফিস। ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করায়, কোম্পানিতে অফিসের রক্ষিত মালপত্র এখনো বের করতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। মালামাল দেখভালের জন্য রাখা হয়েছে একজন সিকিউরিটি গার্ড। তবে ভবনটি থেকে পঁচা মাংসের দুর্গন্ধ বের হওয়ার কারণে তিনিও দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে থাকতে পারছেন না। পাশের একটি ভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।
সিকিউরিটি গার্ড বাকি বিল্লাহ বলেন, বুধবার রাত দশটা থেকে আমি এই ভবনের দায়িত্বে কাজ করছি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মালামাল দেখভালের জন্য আমাকে সাভার থেকে এখানে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু দুর্গন্ধের কারণে ভবনের সামনে ডিউটি করতে পারছি না। আশেপাশের এলাকার মানুষ বলছেন, ডিপ ফ্রিজে রক্ষিত গোসত পচে এ দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
রমনা মডেল থানার এসআই কামরুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত ভবনটি ও আশপাশের এলাকা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইতোমধ্যে আলামত সংগ্রহ করেছেন। রাস্তায় পড়ে থাকা ধ্বংসাবশেষ সরানো হয়েছে। তবে ভবনের নিচে অবস্থিত দোকানের মালামাল সরানো হয়নি। ফলে বেঙ্গল মিট এর দোকানের ভিতর ধ্বংসাত্বক ফ্রিজে রক্ষিত মাংস পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। উল্লেখ্য গত ২৭ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মগবাজারের সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর ভবনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে গতকাল পর্যন্ত ১১ নিহত এবং ৬০ ব্যক্তি আহত অবস্থায় রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ রয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ