পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট বন্ধ, হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধার, অপরাধ দমন এবং রাজস্ব বাড়াতে দেশে চালু হচ্ছে মোবাইল ফোন নিবন্ধন প্রক্রিয়া ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর)। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। ৩০ জুন পর্যন্ত যেসকল মোবাইল ফোন সেট সক্রিয় ছিল তা স্বয়ংক্রিভাবে এনইআইআরে নিবন্ধিত হয়ে গেছে। ১ জুলাই থেকে যেসব নতুন হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, তার মধ্যে কোনোটি অবৈধ হয়ে থাকলে গ্রাহককে জানিয়ে তিন মাস সময় দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলকভাবে তিন মাস ওই সেট নেটওয়ার্কে সচল রেখে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি। এর ফলে অবৈধ হ্যান্ডসেটের ব্যবহার বন্ধের পাশাপাশি কমবে মোবাইল ফোন চুরি সংক্রান্ত অপরাধ। কারো মোবাইল ফোন চুরি কিংবা হরিয়ে গেলে উদ্ধার করা যাবে সহজেই, দেশীয় মোবাইন ফোন শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে বলেও মনে করছে সংস্থাটি।
গতকাল ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এনইআইআর কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের কমিশনার প্রকৌশলী একেএম শহীদুজ্জামান বলেন, এনআইআর সিস্টেমটি মাল্টিফাংশনাল। মূল সিস্টেমটি ঠিক রেখে সময়ের চাহিদার নিরিখে এর আপডেট করা যাবে।
স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শহিদুল আলম বলেন, বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যত হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে চালু হয়েছে, তার সবই নিবন্ধনে আনা হচ্ছে। ৩০ জুন পর্যন্ত দেশে ১০০ কোটির বেশি হ্যান্ডসেটের আইএমইআই নম্বর নিবন্ধিত হয়েছে, হাতে আরো ১৫ কোটি আইএমইআই নম্বর রয়েছে নিবন্ধনের জন্য। অপারেটরদের ডেটাবেইজে থাকা সব আইএমইআই নম্বর নিবন্ধিত হয়েছে। অনেক হ্যান্ডসেটের দুটি করেও আইএমইআই নম্বর থাকে। এখনো প্রক্রিয়া চলছে। কতগুলো হ্যান্ডসেট নিবন্ধিত হল সেই সংখ্যা কয়েকদিন পর চূড়ান্তভাবে দেওয়া সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, নিবন্ধিত এসব সেট ব্যবহারে পরে আর কোনো সমস্যা হবে না। নতুন সেট নেটওয়ার্কে এলে এবং তার মধ্যে অবৈধ সেট থাকলে তা নিবন্ধন পাবে না। এখন নতুন যেসব মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কে যুক্ত হবে, সেগুলো নেটওয়ার্কে সচল রেখেই এনইআইআর এর মাধ্যমে বৈধতা যাচাই করা হবে। হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা নিবন্ধিত হয়ে যাবে। আর যেসব হ্যান্ডসেটে বৈধ আইএমইআই নম্বর থাকবে না, সেগুলোর গ্রাহককে এসএমএস করে জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর পরীক্ষামূলকভাবে তিন মাস ওই সেট নেটওয়ার্কে সচল রেখে পরে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, এনইআইআর চালুর ফলে টেলিকম খাতে শৃংখলা ফিরে আসবে।
গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান বলেন, টেলিকম খাতের সবাই একসাথে কাজ করে এ প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্যত্তম একটি মাইলস্টোনে পৌছালাম। আগামী তিন মাসে এ প্রক্রিয়া একটি সুন্দর জায়গায় পৌঁছাবে বলে আশা করি।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, এ প্রক্রিয়ায় হ্যান্ডসেট চুরি বা হারিয়ে গেলে খুব সহজেই তা উদ্ধার করা যাবে। চুরি বা হারিয়ে গেলে হ্যান্ডসেটটি কোথায় আছে বা কে ব্যবহার করছে তা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহজেই চিহ্নিত করতে পারবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন বলেন, এনইআইআর চালুর ফলে অবৈধ ও নকল হ্যান্ডসেট আমদানি ও বিক্রি বন্ধ হবে এবং সাইবার অপরাধ কমবে। গ্রামের সাধারণ মানুষও যাতে এনইআইআর সর্ম্পকে অবগত হয় সে লক্ষ্যে ব্যাপক প্রচারণার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার বলেন, অবৈধ সেট বন্ধের প্রক্রিয়া ১ অক্টোবর থেকে পুরোপুরি শুরু হবে। এ প্রক্রিয়ায় গ্রাহকরা যাতে কোনো ধরনের সমস্যায় না পড়েন, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা হবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার দেশের সকল মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীকে নিবন্ধনের আওতায় আনার পাশাপাশি গ্রাহক যাতে কোনভাবে ভোগান্তি বা হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, এনইআইআরের মাধ্যমে ডিজিটাল নিরাপত্তাও নিশ্চিত করা যাবে। এনইআইআর প্রযুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অপরাধ দমন আরো সহজ হবে এবং অবৈধ হ্যান্ডসেট বন্ধের মাধ্যমে রাজস্ব খাতেও সহায়তা হবে।
সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে দেশে গ্রাহকের হাতে থাকা সব চালু হ্যান্ডসেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধন না হয়ে থাকলে তা অবশ্যই নিবন্ধন করতে হবে। গ্রাহকের কাছ থেকে যেন কোনো অভিযোগ না পাই যে তার সেট নিবন্ধন হয়নি। অনেক অভিযোগ পেয়েছি। গ্রাহকরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়।
হ্যান্ডসেট কেনা বা বিক্রির আগে করণীয়: এখন থেকে যে কোন মাধ্যমে (বিক্রয় কেন্দ্র, অনলাইন বিক্রয় কেন্দ্র, ই-কমার্স) মোবাইল হ্যান্ডসেট কেনার আগে হ্যান্ডসেটটির বৈধতা যাচাই করতে হবে। পাশাপাশি মোবাইল ফোন কেনার রশিদ সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। মোবাইল হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে এনইআইআর সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়ে যাবে।
এজন্য মোবাইল ফোনের মেসেজ অপশনে গিয়ে কেওয়াইডি স্পেস ১৫ ডিজিটের আইএমইআই নম্বরটি লিখতে হবে। লেখার পর ১৬০০২ নম্বরে পাঠাতে হবে। ফিরতি মেসেজ মোবাইল হ্যান্ডসেটের বৈধতা সম্পর্কে জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিদেশ থেকে বৈধভাবে কিনে আনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট দেশে চালু করার পর স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নেটওয়ার্কে সচল হবে। এ ধরনের গ্রাহককে দশ দিনের মধ্যে অনলাইনে তথ্য/দলিল দিয়ে নিবন্ধন করার জন্য এসএমএস পাঠানো হবে। দশ দিনের মধ্যে নিবন্ধন হয়ে গেলে ওই হ্যান্ডসেট ‘বৈধ’ বিবেচিত হবে। আর তা না হলে হ্যান্ডসেটটি অবৈধ বিবেচনা করে গ্রাহককে এসএমএস এর মাধ্যমে জানানো হবে। তাদের ক্ষেত্রেও পরীক্ষাকালীন ওই তিন মাস হ্যান্ডসেট নেটওয়ার্কে চালু রেখে পরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিদেশ থেকে আনা বা উপহার পাওয়া হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য এনইআইআর ডট বিটিআরসি ডট গভ ডট বিডি ওয়েবসাইটে গিয়ে গ্রাহককে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। পোর্টালের স্পেশাল রেজিস্ট্রেশন সেকশনে গিয়ে মোবাইল হ্যান্ডসেট এর আইএমইআই নম্বরটি দিতে হবে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এর ছবি/স্ক্যান কপি (যেমন পাসপোর্টের ভিসা/ইমিগ্রেশনের তথ্য, ক্রয় রশিদ ইত্যাদি) আপলোড করে সাবমিট করতে হবে।
হ্যান্ডসেটটি বৈধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিবন্ধিত হবে। বৈধ না হলে এসএমএস এর মাধ্যমে গ্রাহককে জানিয়ে পরীক্ষাকালীন সময়ের জন্য নেটওয়ার্কে যুক্ত রাখা হবে। পরীক্ষামূলক সময় পার হলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।