বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
বরিশাল মহানগরীর হীমনীড়-এর বিরান পুকুরে আবার ফিরছে স্বেতপদ্ম। অর্ধশতাধীক বছরের পুরনো পদ্মপুকুরটি কথিত পরিচ্ছন্ন করার নামে গত বছরের গোড়ার দিকে পদ্মফুলের সব কান্ড ও গাছের মুল কেটে পরিস্কার করা হয়েছিল মাছ চাষের পরিবেশ (?)তৈরীর লক্ষে। এরপর থেকে গত প্রায় দেড় বছর এ পুকুরে আর কোন পদ্মফুল চোখে পড়েনি। হতাশ বরিশালবাশী বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেও কথিত পরিবেশবাদীদের কোন প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায়নি। দেশের দুর দুরান্ত থেকে পদ্মপুকুর দেখতে ছুটে আসা অনেকেই হতাশ হয়ে নিরাশা নিয়ে ফিরেছেন প্রকৃতির এ অপরূপ শোভা দেখতে না পেয়ে। প্রকৃতির এ অপার দান বিনাশ করায় অনেকেই আফসোস করেছেন। বিআইডব্লিউটিএ’র অনেক দায়িত্বশীলরাও বিষয়টি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় ছিলেন। অনেক ধরনের চেষ্টা করেছেন পুকুরে পদ্ম ফিরিয়ে আনতে।
কিন্তু প্রকৃতি বিনাশীদের ঐসব প্রচেষ্টাকে ফিরিয়ে দিয়ে পদ্ম নিজেই ফিরে এসেছে আপন মহিমায় নিজ ঠিকানায়। এবার বর্র্ষা শুরু হতেই পুকুরের তলদেশের গভীরে থেকে যাওয়া মূল থেকে কান্ডে ভর করে একটি দুটি করে পদ্ম পাতা বের হয়ে আসতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে কয়েকটি ফুল ফুটে তার অস্তিত্বের জানান দিতেও শুরু করেছে হীমনীড়-এর পুকুরে।
ফলে অনেকের মনেই স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। নগরবাসীর অনেকেই প্রাচীর ঘেরা হীমনীড়-এর গ্রীল-এর বাইরে দাড়িয়ে ফিরে আসা পদ্ম দেখে চোখ যুড়াচ্ছেন। তাদের অনেকেরই আশা এবার না হোক আগামী বর্ষায় পুরো পুকুর আবার আগের মতই স্বেতপদ্মে ভরে উঠবে। আবার অনেকে এমন মন্তব্যও করছেন যে, ‘ইচ্ছে করলেই প্রকৃতির গলা টিপে তাকে হত্যা করা যায়না। তারই জানান দিল হীম নীড়ের পদ্ম’।
বৃটিসÑভারত যুগে তৎকালীন নৌ ও রেল বানিজ্য প্রতিষ্ঠান, ‘অইজিএন’ ও ‘আরএসএন কোম্পানী’র পূর্ব বাংলার সদর দপ্তর ছিল বরিশালের এই হীম নীড়ে। একতলা চুন-সুরকীর ভবনটিন দক্ষিনÑপশ্চিম কোনে নির্মান করা হয় কাঠের পাটাতনের ওপর টালির ঘর। যা ছিল ঐ কোম্পানীর ম্যনেজারের বাস ভবন। আর এ দুটি ভবনের দক্ষিণ ও পূর্ব পাশে খনন করা হয়েছিল একটি পুকুর। পাকিস্তান সৃষ্টির পরে এখানে বসে ‘পাকিস্তান রিভার স্টিমার্স-পিআরএস’এর নৌ নির্র্মান কারখানার অফিস ও ম্যানেজারের বাস ভবন। ১৯৫৮ সালে ‘পূর্ব পাকিস্তান ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট অথারেটি-ইপিআইডব্লিউটিএ’ গঠনের পরে সরকারী নির্দেশে বরিশালের নৌ কারখানা পিআরএস থেকে কতৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ফলে হীমনীড়ে ম্যানেজারে বাস ভবন আর কাঠের বাড়িটিতে স্থাপন করা হয় পরিদর্শন বাংলো।
১৯৬৪ সালে এখানে কর্মরত একজন ব্যবস্থাপক নানাভাবে চেষ্টা করে হীমনীড় সংলগ্ন পুকুরটিতে সফলভাবে পদ্ম ফুলের আবাদ করতে সক্ষম হন। সে থেকে ২০১৯-এ শেষভাগ পর্যন্ত এ পুকরটি পদ্মফ‘ুুলে ঢেকে ছিল। কিন্তু আগাছা পরিস্কারের নামে পুকুরটির পদ্ম ফুলের বাগানের বিনাশী কর্মকান্ডকে ‘বিবেকহীন’ বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকে। তবে যারা আগাছা পরিস্কারের নামে পুকুরটি সাফ করেছিলেন তারাও তাদের ভুল বুঝতে পেরেছন ইতোমধ্যে। এখন তরাও হীমনীড়ের পদ্মফুলের সেবাযতœ করে তাকে স্বÑমহিমায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছেন ।
এ ব্যাপারে বিঅইডব্লিউটিএ’র বরিশালের নির্র্বাহী প্রকৌশলী জানান, আমরা সার্বক্ষনিকভাবে চেষ্টা করছি পদ্ম পুকুর যেন আবার ফুুলে ফুলে ভরে ওঠে। এ জন্য যা কিছু প্রয়োজন আমরা তার সবই করছি’ বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।