Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাতক্ষীরায় স্বামী ও ভগ্নিপতি মিলে নৃংশস খুন

হাত-পা ও মাথা বিচ্ছিন্নকারী নারীর কাটা বাম পা উদ্ধার

সাতক্ষীরা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০২১, ১:৪৫ পিএম

সাতক্ষীরায় ইছামতি নদী থেকে উদ্ধারকৃত হাত-পা ও মাথা বিচ্ছিন্নকারী অজ্ঞাত নারীর পরিচয় মিলেছে। মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে নিহতের একটি কাটা পা সদরের হাড়দ্দহা এলাকায় ইছামতির পাশে মাছের ঘের থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। নারীর উদ্ধারকৃত এই বাম পা-টি ইছামতি নদী থেকে তুলে এনেছিলো একটি কুকুর।
স্বামী ও ভগ্নিপতি মিলে এই নারীকে এমন নৃশংসভাবে খুন করে সীমান্ত নদী ইছামতিতে ফেলে দেওয়া হয় বলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। উদ্ধার হয়েছে রক্তমাখা বোরকা ও চাপাতি রাখার খাপ।
নিহতের নাম মোসলেমা খাতুন (৩৫)। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আলিপুর ঢালীপাড়া গ্রামের জমিরউদ্দিন সরদারের মেয়ে।
নিহতের আপন ফুফাতো ভাই কলেজ ছাত্র আবু ছালেক এই প্রতিবেদককে জানান, তার বোন মোসলেমার ৬/৭ বছর আগে সদর উপজেলার ভোমরা ইউনিয়নের লক্ষ্মীদাঁড়ি গ্রামে মোস্তাকিমের সাথে বিয়ে হয়। সেখানে একটি ছেলে সন্তান হওয়ার পর ছাড়াছাড়ি হয়। এরপর বছর দুই আগে একই ইউনিয়নের হাড়দ্দহা উত্তর পাড়ায় বাবুর আলী বিশ্বাসের ছেলে রফিকুল ইসলামের সাথে মোসলেমার বিয়ে হয়। রফিকুলের আগের স্ত্রী, দুটি মেয়ে ও একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
আবু ছালেক বলেন, বিয়ের পর তাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিলো না। প্রায়ই ঝগড়া চলতো। নির্যাতনও করা হতো তার বোনের ওপর। এক পর্যায়ে স্ত্রীর নামে অল্প জমি লিখে দিয়ে আলাদা জায়গায় বাড়ি করে দেন ফল ব্যবসায়ী স্বামী রফিকুল। সেখানে মাঝে মাঝে যাওয়া-আসা করতেন। এরই মধ্যে গত ৬/৭ মাস আগে মোসলেমা তার স্বামী রফিকুলকে ডিভোর্স দিয়ে বাবার বাড়ি আলিপুরে চলে আসে। এর কিছুদিন পর মোসলেমা সৌদি আরবে যায় কাজ করতে। সৌদি আরবে গেলেও মোসলেমার সাথে রফিকুলের মোবাইলে যোগাযোগ ছিলো। গত ২৫ জুন মোসলেমা সৌদি আরব থেকে ঢাকা এয়ারপোর্টে নামলে রফিকুল ও তার এক ভগ্নিপতি মোসলেমাকে হাড়দ্দহায় নিয়ে আসেন। বিষয়টি জানার পর মোসলেমার বাবা-মা তাকে খুঁজতে হাড়দ্দহায় রফিকুলের বাড়িতে যান। কিন্তু তাকে না পেয়ে তারা ফিরে আসেন। এরপর ২৭ জুন সন্ধ্যায় বোন খাদিজা খাতুনের সাথে মোবাইলে কথা হয় মোসলেমার। মোসলেমা জানায়, সে হাড়দ্দহায় আছে এবং ভালো আছে। এরপর থেকে মোসলেমা নিখোঁজ হয়। একপর্যায়ে ২৮ জুন দুপুরে সীমান্ত নদী ইছামতির ভাতশালা এলাকা থেকে পুলিশ হাত-পা ও মাথা বিচ্ছিন্ন মোসলেমার লাশ উদ্ধার করে । অজ্ঞাত হিসেবে এক নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে এমন খবর পাওয়ার পর আবু ছালেকসহ তার মামা জমিরউদ্দিন ও আত্মীয় স্বজনেরা ওই কাটা লাশের কাছে যান এবং মোসলেমার শরীরের জন্মগত একটি দাগ দেখতে পেয়ে তাকে শনাক্ত করা হয়।
কলেজ ছাত্র আবু ছালেক আরো জানান, রফিকুলের কাছে মোবাইলে নিখোঁজ মোসলেমার সন্ধান নিতে চাইলে রাফিকুল জানিয়েছিলো সে ভালো আছে। তখন মোসলেমার সাথে কথা বলতে চাইলে রফিকুল জানান, একটু পরে কথা বলাবো। এরপর থেকে রফিকুলের মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। এবং সে পলাতক রয়েছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, লাশ শানাক্ত হয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশ সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ