পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড (পিএলএফএসএল) বিলুপ্ত ঘোষণা নয়- বরং প্রতিষ্ঠানটিকে নতুন করে পরিচালনার জন্য বোর্ড গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিষ্ঠানটিকে বিলুপ্তির পরিবর্তে পুনরুজ্জীবিতকরণ প্রক্রিয়া হিসেবে আদালত এ সিদ্ধান্ত দিলেন। পরিচালনা বোর্ডে কে কে থাকছেন- সেটি জানা যাবে হাইকোর্টের লিখিত আদেশে। গতকাল সোমবার বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে ২০১ আমানতকারীর আবেদনের শুনানি গ্রহণ করেন আদালত। শুনানিকালে প্রশান্ত হালদার ওরফে পি কে হালদারের দুর্নীতি,অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটিকে বিলুপ্ত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানায়। আমানতকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার তানজীব-উল আলম। পিপলস লিজিং কোম্পানি অবসায়নের লক্ষ্যে নিয়োজিত সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) মো. আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট মেজবাহুর রহমান। আবেদনের পক্ষে এহসানুল করিম শুনানিতে বলেন, আইন অনুযায়ী আর্থিক প্রতিষ্ঠান অবসায়নের কোনো বিধান নেই। তবে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো একীভূত করে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পুনর্গঠনের একটি পরিকল্পনা বাংলাদেশ ব্যাংক নিতে পারে। পিএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব হলে আমানতকারীদের ক্ষতির বোঝা আরো বাড়বে। পরে আদেশ সম্পর্কে এহসানুল করিম সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আদালত পিপলস লিজিংকে অবসায়ন না করার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। একে পুনরুজ্জীবিত করতে একটি বোর্ড গঠন করে দিবেন। সে বোর্ড কার নেতৃত্বে হবে, কে কে থাকবেন তা পরে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন আদালত। গত ২১ জানুয়ারি পিএলএফএসএল থেকে ৫ লাখ টাকার বেশি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়েছেন, এমন ২৮৬ জন ঋণ গ্রহীতাকে তলব করেন হাইকোর্ট। সাময়িক অবসায়ক আসাদুজ্জামান খানের দেয়া তালিকা দেখার পর ওই দিন এ আদেশ দেন আদালত। ওই দিনের আদেশে আদালত ২৮৬ জনকে দুই ভাগে হাজির হতে দিন নির্ধারণ করে দেন। তাদের মধ্যে ১২২ ঋণ খেলাপি নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির হননি।
এদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম, দুর্নীতি বন্ধে সমন্বিতভাবে কিভাবে কাজ করা যায়, সে বিষয়ে গত ৯ মার্চ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) চেয়ারম্যানের বক্তব্য শ্রবণ করেন আদালত। তাদের বক্তব্যের পর তলবে হাজির না হওয়া ১২২ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ওই আদেশে বলা হয়, পরবর্তী আদেশ না হওয়া পর্যন্ত তারা যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সতর্ক এবং সজাগ থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়।
এদিকে পিএলএফএসএল’র সাময়িক অবসায়ক মো. আসাদুজ্জামানকে ওই ১২২ ব্যক্তি বা সত্তার বর্তমান ঠিকানা সরবরাহ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। পাশাপাশি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং রাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিতে বলা হয় তাকে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২৪ নভেম্বর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পিপলস লিজিংকে অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। সেই থেকে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছ থেকে মেয়াদি আমানত ও বিভিন্ন ব্যাংক-আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা ধার করে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির আমানত ছিল ২ হাজার ৩৬ কোটি টাকা। ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৩১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৭৪৮ কোটি টাকা। খেলাপি ঋণের হার ৬৬ শতাংশ।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে লোকসান দেয় প্রতিষ্ঠানটি। খেলাপি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা আদায় করতে না পারায় আমানতকারীদের টাকাও ফেরত দিতে পারেনি তারা। ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই পিপলস লিজিং অবসায়নের জন্য আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই দিনই মামলার শুনানি শেষে অবসায়নের পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।