পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাঁচ প্যাকেট পাটের বীজ ৫০ পয়সা বাড়তি দামে বিক্রি করেছিলেন কুষ্টিয়ার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের কর্মকর্তা ওবায়দুল আলম আকন। প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত হাতিয়ে নিয়েছিলেন মাত্র আড়াই টাকা। এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওবায়দুল আলমের বিরুদ্ধে মামলা হয়। মামলার বিচারও হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তাকে দুই মাসের কারাদন্ড দেন। অর্থদন্ড দেন ১ হাজার টাকা। ফৌজদারি মামলায় দন্ডিত হওয়ায় ওবায়দুল আলম আকনের সরকারি চাকরিটি চলে যায়। ঘটনাটি ঘটে ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনের পতন হলে তিনি চাকরি ফিরে পেতে বিভিন্ন দফতরে ধর্ণা দেন। নানা চেষ্টা-তদবির চালান। কিছুতেই কোনো ফল আসে না। অগত্যা তিনি ২০১২ সালে রিট করেন হাইকোর্টে। ওই রিটের শুনানি নিয়ে সাজার বিষয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১৭ সালের ২০ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ওবায়দুল আলমকে তার উপযুক্ত বা প্রকৃত পদে বহাল করে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়াসহ চাকরিতে পূর্ণ বহালের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ১৯৮২ সালে তৎকালীন সামরিক শাসনামলের সেই অনিয়মের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগে তাকে (বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকন) দুই মাসের দন্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানার আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন আদালত। ২০১৮ সালে ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল আবেদন করে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর। ওই আপিলের শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের আপিল আবেদন খারিজ করেন। ফলে ওই ব্যক্তিকে তার (পাট স¤প্রসারণ সহকারী হিসেবে) উপযুক্ত বা প্রকৃত পদে সব সুযোগ-সুবিধা দেয়াসহ চাকরিতে পুনর্বহাল আদেশ আপিলেও থাকে। তবে ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সরকারের সামরিক শাসনামলে সেই দুই মাসের দন্ড এবং এক হাজার টাকা জরিমানা অবৈধ করে দেয়া রায় আংশিক সংশোধন করা হয়। আপিল বিভাগের ওই রায়ের বিরুদ্ধে রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করে কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর তথা সরকারপক্ষ। ওই রিভিউ আবেদনের ওপর গত ২৪ জুন শুনানি শেষ হয়। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে সরকারপক্ষ। ৩৯ বছরের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগের রিভিউ আদেশ হওয়ার কথা রয়েছে আজ (সোমবার)। গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগীয় ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ তারিখ ধার্য করেন। ওবায়দুল আলমের পক্ষে হাইকোর্টে শুনানি করেন ব্যারিস্টার নাসিমা আক্তার চৌধুরী। আপিল বিভাগে শুনানি করেন এডভোকেট প্রবীর নিয়োগী। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর (সরকার)পক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত এটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
মামলার রেকর্ড থেকে জানা যায়, ১৯৮২ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনামলে সেই অনিয়মের ঘটনায় দায়ের করা অভিযোগে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকনের দুই মাসের কারাদন্ড হয়। এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ওই আদেশের পর তাকে কারাগারে পাঠিয়ে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। আড়াই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার জের তাকে টানতে হচ্ছে ৩৯ বছর।
তথ্যমতে, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকন কৃষ্টিয়ার কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরে পাট স¤প্রসারণ সহকারী হিসেবে চাকরি করতেন। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে ১৯৭৪ সালে চাকরিতে যোগ দেন। এর মধ্যে কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি সরকারের কাছ থেকে পুরষ্কারও লাভ করেন। তবে এর পরই ঘটে বিপত্তি। চাকরির সময় পাঁচ প্যাকেট পাটের বিজ বিক্রিতে (প্যাকেট প্রতি ৫০ পয়সা) আড়াই টাকা অতিরিক্ত নিয়েছেন বলে অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ওবায়দুল আলম আকনের ছেলে মো. সোহেল বলেন, ৩৯ বছর আগে আড়াই টাকা অনিয়মের ঘটনা দিয়ে মামলার শুরু। এখন আপিল বিভাগের রিভিউতে আদেশের অপেক্ষা আমাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।