Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

লালপুরে বিষমুক্ত সবজি চাষ

লাভবান হচ্ছেন কৃষক

মো. আশিকুর রহমান টুটুল, লালপুর (নাটোর) থেকে | প্রকাশের সময় : ২৮ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই হলুদ ফাঁদ, ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে সবজির চাষ হচ্ছে নাটোরের লালপুরে। স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ ও বিষমুক্ত হওয়ায় উৎপাদন খরচ কম ও দাম বেশি পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। ফলে বিষমুক্ত সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে এই অঞ্চলের কৃষকদের। এই প্রযুক্তিতে সবজি চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ‘এই উপজেলায় পদ্মার চরাঞ্চলসহ উপজেলার কদিমচিলান ও চংধুপইল ইউনিয়নে ব্যাপকহারে সবজির চাষ হয়। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫০ হেক্টর জমিতে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে বেগুন, পটল, করলা, চালকুমড়ার ঢেঁড়শ, ঝিঙ্গা ও শিম চাষ হয়েছে। আগে সবজি চাষের সময় অনেকে না বুঝেই মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করতেন। এতে খরচ বেশি হওয়ায় এবং স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় বিষমুক্ত সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহী করার উদ্যোগ নেয় স্থানীয় কৃষি বিভাগ।’
গতকাল সরেজমিনে একটি পটল ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, ‘পটল ক্ষেত জুড়ে ঝুলিয়ে রাখা আছে ছোট ছোট প্লাস্টিকের বৈয়াম। কাছে গিয়ে দেখা যায় এগুলি ক্ষতিকর পোকা দমনের ফরোমন ফাঁদ, এই সময় কথা হয় পটল চাষি মামুনের সঙ্গে তিনি বলেন, এবছর তিনি এক বিঘা জমিতে ফরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে পটল চাষ করেছেন। এতে কম খরচে বেশি ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছে। বাজারে বিষমুক্ত পদ্ধতিতে চাষ করা এই পটলের চাহিদা বেশি হওয়ায় দামও বেশি পাওয়া যাচ্ছে। এ পদ্ধতিতে কীটনাশক খরচ কম হওয়ায় উৎপাদন খরচও কম। আমার দেখে পাশের অনেক কৃষকই এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন।
পদ্মার চরের কুমড়া চাষি জুয়েল জানান, ‘বিষমুক্ত সবজি উৎপাদনের লক্ষে হলুদ ফাঁদও ফরোমন ফাঁদসহ অন্যান্য পোকা দমন পদ্ধতিতে চলতি মৌসুমে পদ্মার চরাঞ্চলের ১০ হেক্টর জমিতে চাল কুমড়া চাষ করেন এখানকার কৃষকরা। এসব পদ্ধতিতে ক্ষতিকর পোকা দমন হওয়ার পাশাপাশি বাড়তি খরচ করে কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে না কৃষকদের। ফলে কীটনাশকের ব্যয় সাশ্রয় ও উৎপাদিত সবজি স্বাস্থ্যসম্মত হওয়ায় বাজারে ন্যায্য দাম পাওয়া যাচ্ছে। এতে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন।’
ঝিঙ্গা চাষি আমিরুল বলেন, ‘বিষ প্রয়োগ ছাড়াই আমি ঝিঙাচাষ করছি। এতে কৃষি বিভাগ পোকা দমনের জন্য বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ ব্যবহারসহ আমাদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, ‘চলতি বছর এই উপজেলায় উৎপাদিত সবজির দাম ও চাহিদা বেশি হওয়ায় খুশি কৃষকরা। বিষমুক্ত পদ্ধতিতে সবজি চাষে বাড়তি কীটনাশক খরচ কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ কমেছে। পাশাপাশি উৎপাদিত বিষমুক্ত এসব সবজির চাহিদা বাজারে বেশি থাকায় ও দাম ভালো পাওয়া বিষমুক্ত নিরাপদ সবজি চাষ আগ্রহ বাড়েছে কৃষকদের। কৃষক পর্যায়ে এই পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ