Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থলের অচলবস্থায় রোগীদের প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাচ্ছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ৫:১৯ পিএম

সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলের হৃদরোগ চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ‘কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট’ ও ‘ইন্টেনসিভ কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট’ দুটি বিগত দীর্ঘদিন ধরেই বিকারগ্রস্থ। পূর্ণ দায়িত্বপ্রাপ্ত বিভাগীয় প্রধানের সাথে চিকিৎসা সহায়ক সামগ্রীর অভাবে ইতোমধ্যে মুখ থুবড়ে পড়েছে এ হাসপাতালটির সিসিইউ এবং আইসিসিইউ। এখানের ২০ শয্যার কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে প্রতিনিয়ত ৫০Ñ৬০ জন রোগী চিকিৎসাধীন থাকলেও এখানে নুন্যতম কোন চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জাম নেই। আইসিসি ইউনিটটিতে অনুমোদিত বেড সংখ্যা ১০টিরও কম হলেও সেখানেও প্রতিনিয়ত ২০-২৫ রোগী চিকিৎসাধীন থাকছে।
এক হাজার শয্যার বিশাল এ হাসপাতাল ভবনের তৃতীয় তলায় ২০০২ সালে মেডিসিন ওয়ার্ডের সাথে ২০ শয্যার কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট চালু করা হয়। পরবর্তিতে হাসপাতাল ভবনের পূর্ব পাশে ২০০৫ থেকে ‘০৮ সালে ভিন্ন কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিট ও ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট ভবন নির্মান করা হলেও চালু হয় ২০১২ সালের দিকে। কিন্তু সেখানে অদ্যাবধী প্রয়োজনীয় চিকিৎসক ও নার্স সহ অন্যান্য পদসমুহ সৃষ্টি হয়নি। একজন রেজিষ্ট্রার ও ৩জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে বিপুল সংখ্যক রোগীর সার্বক্ষনিক চিকিৎসা দেয়া দুরুহ বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসকগন। এরপরেও স্থানীয়ভাবে যোড়াতালি দিয়ে ইউনিটটি চালু রাখা হলেও সেখানে এখন সুষ্ঠু চিকিৎসা মেলা দুরের কথা সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ইউনিটটির একমাত্র এওনজিওগ্রাম মেশিনটি বিকল হয়ে পড়ে আছে গত প্রায় ৭ মাস ধরে। দুটি ইউনিটের ৮টি এয়ারকুলারই বিকল আরো প্রায় বছর খানেক আগে থেকে। হসপাতাল কতৃপক্ষ বারবারই এ ব্যাপারে গনপূর্ত বিভাগকে চিঠি লোখা ছাড়াও প্রতিনিয়ত মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছে বলে জানিয়েছেন। ফলে দুঃসহ গরমে হৃদরোগীদের প্রাণবায়ু বেরিয়ে যাবার অবস্থা। সাম্প্রতিককালে এখানে চিকিৎসার জন্য আসা সিংহভাগ রোগীদেরই ঢাকায় পাঠান হচ্চে বল্রে অভিােযগ রয়েছে। এ ব্যাপারে চিকিৎসকগন মুখে কিছু না বললেও মূলত চিকিৎসা সামগ্রীর অভাব সহ অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামাল দিতেই অবস্থাপন্ন রোগীদের প্রাথমিক ঝুকি সামাল দিয়েই ঢাকায় পাঠান হয় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধীক চিকিৎসক।
একাধীক রোগী ও তাদের স্বজনেরা দক্ষিনাঞ্চলে হ্রাদরোগের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল (?) এ হাসপাতালের কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটর ও ইন্টেনসিভ কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে অনেকেই চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে রোববার শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচ এম সাইফুল ইসলামের সাথে টেলিফোনে আলাপ করা হলে তিনি হৃদরোগ ইউনিটরে বিভিন্ন সমস্যার কথা স্বীকার করে বলেন, এসব সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করা হচ্ছে। বিষয়গুলো স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সহ বিভিন্ন পর্যায়ে অবহিত করার কথাও জানান তিনি। এনজিওগ্রাম মেশিন বিকল প্রশ্নেও তিনি বিষয়টি উর্ধতন কত্রপক্ষকে অবহিত করার কথা জানিয়ে যতদ্রত সম্ভব তা মেরামতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান। হৃদরোগ ইউনিটের এয়ারকুলারগুলো সাময়িক মেরামতের কথা জানিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এর স্থায়ী সমাধানের লক্ষে গনপূর্ত বিভাগের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে বলেও জানান পরিচালক।
এ ব্যাপারে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, ঐ ইউনিট দুটির বাতনুকল যন্ত্রসমুহ মেরমতের দায়িত্ব এমুহূর্তে তাদের নয়। হাসপাতাল কতৃপক্ষ তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সম্প্রতি তা মেরামত করেছে বলে তাকে অবহিত করেছে। এরপরেও কোন সমস্যার কথা জানালে তারা সে ব্যাপারে সম্ভব সবকিছু করবেন বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ