Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁঁকিতে ৫৯ জেলা

সিআরআইডিএর গবেষণা প্রতিবেদন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০২১, ১২:০০ এএম

ভারতসহ সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসে মৃত্যু ও সংক্রমণ কমছে। আর এমন অবস্থায় বাংলাদেশের চিত্র ঠিক বিপরীত। দেশে হু হু করে বাড়ছে অদৃশ্য এই ভাইরাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। করোনার সামাজিক সংক্রমণ ঠেকাতে আগামীকাল সোমবার থেকে লকডাউন ঘোষণা করেছে।

সারাদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের অবিশ্বাস্য ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। দেশে মোট ৬৪ জেলার ৫৯টিই অতি উচ্চ ঝুঁঁকিতে রয়েছে বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশন (সিআরআইডিএ)। গতকাল শনিবার প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. শাহরিয়ার রোজেন বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

গবেষণা প্রতিবেদনের চিত্র তুলে ধরে সিআরআইডিএ জানায়, গত ১৪ থেকে ২০ জুনের সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের ৪০টি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁঁকিতে রয়েছে বলে অভিমত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তবে ২০ জুনের পর সংক্রমণের মাত্রা আরো অনেক বেড়ে গেছে।

সর্বশেষ গত এক সপ্তাহের (১৮ থেকে ২৪ জুন) তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, দেশের ৫৯টি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁঁকিতে রয়েছে (সপ্তাহিক শনাক্তের হার ১০ শতাংশের বেশি)। এর মধ্যে ৩৯টি জেলায় সংক্রমণের হার ভয়াবহ পর্যায়ের (সপ্তাহিক শনাক্তের হার ২০ শতাংশের বেশি)। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে মৃত্যুহার বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। জুনের ১৮ তারিখে দৈনিক মৃত্যু ছিল ৫৪, যা ৭ দিনের ব্যবধানে বেড়ে ১০৮ হয়েছে।

সংক্রমণ বাড়ার কারণ জানিয়ে বলা হয়, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের (ভারতীয়) প্রভাবে বাংলাদেশে সংক্রমণ হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্টগুলোর মধ্যে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টটিই সবচেয়ে বেশি সংক্রামক। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট (ভারতীয়) অধিক সংক্রমণক্ষম যুক্তরাজ্যের ভ্যারিয়েন্ট থেকেও কমপক্ষে ৪০ শতাংশ বেশি সংক্রামক এবং হাসপাতালে ভর্তির ঝুঁঁকি দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়। যার কারণে রাজশাহী ও খুলনা জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে তিল ধরণের ঠাঁই নেই। রোগীরা মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

এসব প্রসঙ্গে ডা. শাহরিয়ার রোজেন বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে এখন আর কেবল সরকারের পক্ষ থেকে লকডাউন বা শাটডাউন দিয়ে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। বরং সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে জনসাধারণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে, টিকা দিতে হবে।

মাস্ক পরা, হাত ধোয়া, জনসমাগম এড়ানো এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে। এসব বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা সহজ। বিজ্ঞানসম্মত উপায়গুলো শত বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর হয়েছিল এবং করোনার সব বিপজ্জনক ভ্যারিয়েন্টকে এসব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

বিশ্লেষণ ও লেখচিত্র প্রস্তুত করেছেন সেন্টার ফর রিসার্চ, ইনোভেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অ্যাকশনের এপিডেমিওলজি বিভাগের ডা. কে এম তৌহিদুর রহমান, ডা. আয়শা আকতার, ডা. শাহরিয়ার রোজেন, ডা. নওরিন আহমেদ, ডা. নাজিফ মাহবুব, ডা. মামুনূর রহমান। স্বাস্থ্য অধিদফতর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মেথডোলজি ব্যবহার করে ৭ দিনের গড় শনাক্তের হারকে সূচক হিসেবে ব্যবহার করে তথ্যচিত্রটি প্রস্তুত করা হয়েছে।



 

Show all comments
  • mohammed Sohel Raiyan ২৭ জুন, ২০২১, ৭:২৯ এএম says : 0
    এই ধরনের লকডাউনের কোনো মানেই হয়না। এই সিদ্ধান্ত মাত্র সরকারের সাধারণ মানুষের উপর জুলুম করা। যেখানে ব্যাংক ও গার্মেন্স খুলা থাকবে কিন্তু অন্য সকল মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার করবে ................ কি ধরনের সিস্টেম এটা। শুধু সাধারণ মানুষকে মেরে ..................... টিকিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত এটা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ