রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
বর্ষার বৃষ্টির প্রভাবে নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় মাদারীপুরের ৪টি উপজেলার আড়িয়াল খা, পদ্মা, পালরদী নদীর ভাঙনে বেশ ক্ষতি হয়েছে। নদী ভাঙন অব্যাহত থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও পরিবারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ইউপি ভবন, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, হাট-বাজার, আবাদি জমি, রাস্তা-ঘাট ভেঙে গেছে। এতে মাদারীপুর জেলার ভৌগলিক মানচিত্র ক্রমশ পাল্টে যাচ্ছে। ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু কিছু স্থানে বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফেললেও তা খুবই সামান্য। সরেজমিনে পরিদর্শন করে জেলার এ করুণ চিত্র পাওয়া যায়।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ও ভারী বর্ষনে নদী ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিবচর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। বিশেষ করে নদী তীরবর্তী ইউনিয়ন চরজানাজাত, কাঠালবাড়ি, সন্নাসীরচর, বহেরাতলা, সিরুয়াইল, নিলখি, মাগুরাখণ্ড, কাঁঠালবাড়ি, বন্দরখোলার কাজীরসুরা। এছাড়া বন্দরখোলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক পরিবার বসতভিটা হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে। বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের কমপ্লেক্স ভবন, চরের বাতিখ্যাত বন্দরখোলা ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩তলা ভবন, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক ও কাজিরসুরাহাট পদ্মা নদীতে ইতোমধ্যেই বিলীন গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে পুরো এলাকা।
কালকিনির পালরদী ও আড়িয়াল খা নদী ভাঙনে ক্ষতি হয়েছে ফাসিয়াতলা লঞ্চঘাট, আলিপুর মোল্লারহাট, খাসেরহাট, মিয়ারহাট লঞ্চঘাট, আন্ডারচর লঞ্চঘাট, সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট, রামারপোল মোল্লারহাট, চর হোগলপাতিয়া, স্বস্থাল, খুনেরচর, আউলিয়ারচর, ফাসিয়াতলা পশ্চিমচর, লক্ষ্মীপুর পখিরা, ঝুরগাও, উত্তর রমজানপুর, দক্ষিণ রমজানপুর গ্রাম।
ইতোমধ্যেই নদী গর্ভে আলীনগর ইউনিয়নের চরহোগলপাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাইক্লোন সেন্টার, একটি মসজিদ ও ফসলি জমি। সাম্প্রতিককালে নদীভাঙনে প্রায় কয়েকশ’ পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ওই এলাকার দু’শতাধিক পরিবার।
রাজৈর উপজেলার কুমার নদে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১২ গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার। ইশিবপুর ইউনিয়নের গাংকান্দি শাখারপাড় এলাকার রাস্তাটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। টেকেরহাট-কালিবাড়ী ফিডার সড়কের গোয়ালবাথান এলাকার পাকা রাস্তাটির কিছু অংশ গত কয়েকদিন আগে বিলীন হয়ে গেছে। জমি ও ঘরবাড়ি হারিয়ে ভূমিহীনে পরিনত হচ্ছেন অনেকেই। কেউ কেই অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে বিশ্বাম্বরদী, নিলাম্বরদী, মহেন্দ্রদী, হরিদাসদী, মল্লিককান্দি, গাংকান্দি, শংকরদী, কালিবাড়ী, হরিদাসদী ও চরমস্তফাপুর বাজার এলাকা ব্যাপকভাবে ভাঙছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলার আড়িয়াল খাঁ ও লোয়ার কুমার নদীতে ভাঙনে ঘুনশি, শিরখাড়া, বাহাদুরপুর হবিগঞ্জ, কালিকাপুর, পাঁচখোলা, পাঁচখোলা ইটভাটা, বাহেরচর কাতলা, কাজিরটেক-চরগোবিন্দপুর, মহিষেরচর পুরাতন ফেরিঘাট, চরকুলপদ্বী, পখিরা, গোসাইদিয়া শিরখাড়া, কোর্টবাড়ি শ্রিনদী, উকিলবাড়ি-ঘটমাঝি, কৃষিমার্কেট-মস্তফাপুর, মন্দির-মস্তফাপুর ও শহরের পাঠককান্দি, কুমারটেক-পৌরপেয়ারপুর, পিটিআই চরমুগরিয়া এলাকা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি আড়িয়াল খাঁর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে শহর রক্ষা বাঁধের ৪০ মিটার এবং ওয়াকওয়ে ভেঙে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবেদ আলী বলেন, নদী ভাঙনে জেলার চারটি উপজেলার ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে প্রাপ্ত ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হযেছে।
মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, নদীর ভাঙন প্রতিরোধের জন্য জরুরি ভিত্তিতে পদ্মা ও আড়িয়াল খাঁ নদীতে ২ লাখ ৯৩ হাজার ৫৫৫ বস্তা বালু ভর্তি জিওব্যাগ ফালানো হয়েছে। ৩৪.৪১৭ কি.মি ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।