পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাওয়ায় রাজধানীকে নিরাপদ রাখতে এর আশপাশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সরকারের দূরপাল্লার বাস ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশনায় বন্ধ রাখা হয়েছে রাজধানীর বাস কাউন্টারগুলো। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে বন্ধ হয়েছে সারাদেশের ট্রেন চলাচল। হঠাৎ লকডাউন ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। অনেকে না জেনে ঢাকার পথে রওনা করে পড়েছেন মহাবিপদে। আবার কেউ কেউ ঢাকার বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা করে বিপদে পড়েছেন। ঢাকার প্রবেশ মুখে সাভারের আমিনবাজার, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসকের শিমরাইল, টঙ্গী এলাকায় হাজার হাজার মানুষকে পায়ে হেঁটে চলাচল করতে দেখা গেছে। লকডাউনের মধ্যেও মহাসড়কে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি, প্রাইভেটকার, দূরপাল্লার পরিবহন বাস, ট্রাক চলতে দেখা গেছে।
লকডাউনের খবর পেয়ে রাতেই রাঙ্গামাটির কাপ্তাই থেকে ঢাকায় চলে এসেছিলেন জয়নাল আবেদীন নামে এক যাত্রী। ভেবেছিলেন কোনও না কোনওভাবে পৌঁছে যাবেন গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ীতে। গতকাল ভোর থেকে গাবতলী বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন তিনি। জয়নালের মতো অনেকেই অপেক্ষায় করছেন, সবার গন্তব্য দেশের বিভিন্ন জেলায়। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার বাস কাউন্টারগুলো প্রায় ফাঁকা পড়ে আছে। অনেক কাউন্টার বন্ধ। কাউন্টারগুলোর সামনেই অলস সময় পার করছেন যাত্রীরা। কাউন্টার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা অগ্রীম টিকিট কিনেছিলেন তাদের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর এখন আসেছেন, তাদের জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ। তারপরও অনেকেই অপেক্ষা করছেন কোনওভাবে যদি গন্তব্যে যাওয়া যায়। দূরপাল্লার বাস চলাচল না করায় হতাশ জয়নাল আবেদীন বলেন, যাওয়াটা খুব জরুরি। রাতেই চলে এসেছি। ভেবেছিলাম লকডাউন শুরুর আগেই যদি ঢাকা পার হতে পারি, সম্ভব হয়নি। আটকে গেছি, এখন কী করবো বুঝতে পারছি না। বাস বন্ধের খবর জেনে কিংবা না জেনে অনেকেই কাউন্টারের সামনে এসে অপেক্ষা করছেন কোনও না কোনওভাবে গন্তব্যে যাওয়ার আশায়। কাউন্টার বন্ধ রাখলেও সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে একধরনের অনিশ্চয়তার ভাবনা কাজ করছে, কিছুটা আতঙ্কিতও তারা। গাবতলী টার্মিনালের সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার মাইনুল হোসেন বলেন, সরকারের নির্দেশনায় দূরপাল্লার যানবাহন বন্ধ রয়েছে। করোনা সংক্রমণের কারণে বেশ কয়েকবার যান চলাচল বন্ধ ছিল। তখন আমরা লোকসানের মুখে ছিলাম। এবারও বন্ধ। কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে সবার মধ্যে। শ্যামলী পরিবহনের ম্যানেজার আলমগীর হোসেন বলেন, সকাল থেকে আমাদের দূরপাল্লার পরিবহন বন্ধ রয়েছে। যারা অগ্রিম টিকেট নিয়েছিলেন তাদের গতকাল ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকেই এসেছেন টিকিট নেওয়ার জন্য, আমরা তাদের ফিরিয়ে দিচ্ছি। তারপরও অনেকেই অপেক্ষা করছেন গন্তব্যে যাওয়ার আশায়। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম ইনকিলাবকে বলেন, দূরপাল্লার বাস হঠাৎ করে বন্ধ করায় যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েছে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাস বন্ধ কিন্তু মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে গাদাগাদি করে যাত্রী যাচ্ছে। বরং দূরপাল্লার বাসে এক আসন খালি রেখে যাত্রী যেতো। তাতে করোনার সংক্রমণের ঝুঁকি কম ছিল। এখন যা হচ্ছে তাতে করোনার ঝুঁকি বাড়তেই থাকবে।
আমাদের দাউদকান্দি (কুমিল্লা) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি অংশে ঢাকাগামী লেনে তীব্র যানজট দেখা দেয়। রাজধানী ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন রাখতে আশপাশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করায় রাজধানীতে গণপরিবহন প্রবেশ করতে না দেওয়ায় এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে।
গতকাল সকাল থেকে লকডাউন কার্যকর রাখতে হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কের দাউদকান্দি বলদাখাল এলাকায় তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে। গণপরিবহন থেকে শুরু করে যাত্রীবাহী কোনো যানবাহনই ঢাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। যানবাহন না পেয়ে অফিসগামী মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। আর যানজটটি দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে পুটিয়া পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটারে পৌঁছেছে। দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে যাত্রী ও চালকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেককে আবার হেঁটে গন্তব্য যেতে দেখা গেছে। দাউদকান্দি হাইওয়ে পুলিশের ওসি জহুরুল হক জানান, রাজধানীর পাশের সাত জেলায় লকডাউন ঘোষণা করায় আমরা মহসড়কের দাউদকান্দি বলদাখাল এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়েছি। যাতে করে গণপরিবহন মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা জেলায় ঢুকতে না পারে। এ ছাড়া ভোরে টোলপ্লাজা এলাকায় একটি বাস দুর্ঘটনার কারণে কিছুটা যানজটের সৃষ্টি হয়। আমাদের মুন্সিগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা জানান, লকডাউনের কারণে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে সব ধরনের লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এ রুটে ফেরি চলাচল করছে। অনেকে জেনে আবার অনেকে না জেনে ঘাটে এসে বিপাকে পড়ছেন। মাওয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির বলেন, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার রুটে মঙ্গলবার সকাল থেকে ১৪টি ফেরি চলছে। সকল ধরনের লঞ্চ, স্পিডবোট, ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঘাটে যাত্রীর চাপ নেই।
অন্যদিকে, গাজীপুরে লকডাউনের প্রথম দিন গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ এবং ঢাকা-ট্ঙ্গাাইল মহাসড়কে দূরপাল্লা ও আঞ্চলিক সড়কে যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের তৎপরতায় বন্ধ হয়ে যায় এসব যানবাহন। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কর্মস্থলমুখী মানুষ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।