রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লালপোল এলাকায় প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে তীব্র যানজট দেখা যায়। এ যানজটের কারণে প্রতিনিয়ত চালক, যাত্রীদের পাশাপাশি পথচারী ও জনসাধারনকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। যানজট সৃষ্টির মূল কারণ হচ্ছে মহাসড়কের দুই পাশে সওজের জায়গা দখল করে হোটেল-রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলা, যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে রাখা, সড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করা, ইউটার্ন দিয়ে গাড়ি পার হওয়া ও উল্টো পথে গাড়ি চলাচল করা ইত্যাদি। গত কয়েকদিনে সরেজমিন পরিদর্শন করে এসব চিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে লালপোল পয়েন্টে মহাসড়কের ওপর তিনস্থরের লম্বা ডিভাইডার ও তিনটি ইউটার্ন পয়েন্ট রয়েছে। সড়কের দু’পাশে রয়েছে ৭ থেকে ৮টি হোটেল রেস্টুরেন্ট ও অসংখ্য ছোট বড় দোকানপাট, মানুষ পারাপারের জন্য রয়েছে একটি ফুটওভার ব্রিজ। লাইফলাইন খ্যাত ফোরলেন মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি চলাচল করে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড়ে আসা পণ্যবাহী মালগাড়ি ট্টাক, কাভার্ডভ্যান ও লরির চাপ বেশি থাকে এই মহাসড়কে। দেখা যায় এসব গাড়ি সড়কের ওপর পার্কিং করে চালক ও হেলপার হোটেলে খাবার খেতে যায়। অন্যদিকে যাত্রীবাহী বাসের ক্ষেত্রে একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। তখন মহাসড়কে চলাচলরত অন্য গাড়িগুলো আটকে গিয়ে মুহূর্তেই যানজট লেগে যায়। শুরু হয় চালক ও যাত্রীদের ভোগান্তি। এদিকে আরেকটি মূল সমস্যা হচ্ছে ওইস্থানে তিনটি ইউটার্ন পয়েন্ট দিয়ে প্রতিদিন ক্রসিং করে ফেনী শহর ও সোনাগাজীগামী ছোটযান সিএনজি চালিত অটোরিকশা, মোটরবাইক, উপকূল, পিকআপ, বাস উল্টো পথে আসা যাওয়ার ফলে মহা যানজটের সৃষ্টি হয়। সবমিলিয়ে বর্তমান সময়ে মহাসড়কের লালপোল পয়েন্ট একটি ভয়ংকর জায়গা। গত শনিবার ভোরে চলন্ত কাভার্ডভ্যান দাঁড়িয়ে থাকা আরেকটি কাভার্ডভ্যানকে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে গাড়ির সামনের অংশ ধুমড়ে মুছড়ে যায়। তখন গাড়িতে থাকা ড্রাইভার ও হেলাপার গুরুতর আহত হয়। তাদেরকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হেলপার মো: ফিরোজের (২০) মৃত্যু হয়। এখানে প্রতিনিয়ত ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা, ঝরছে অনেক মানুষের প্রাণ। অনেকেই আহত হয়ে পঙ্গু জীবন যাপন করছেন।
মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পার্কিং গাড়ির কয়েকজন ড্রাইভার বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে মাল লোড করে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তাদেরকে প্রতিদিন যেতে হয়। প্রতিমধ্যে তারা সড়কের উপর গাড়ি পাকির্ংয়ে রেখে দুপুরের খাবার বা চা-নাস্তা খেতে সড়কের আশপাশে হোটেল গুলোতে যেতে হয়। সড়কে গাড়ি পার্কিংয়ের দায়ে মামলার জট এড়াতে হাইওয়ে পুলিশকে চাঁদা দিতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিশ্চিুক সেখানকার স্থানীয় লোকজন বলেন, মহাসড়কের লালপোল এরিয়ায় অবৈধ দখলদারদের উৎপাত বেড়ে গেছে। স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা ও একটি সিন্ডিকেট চক্র সড়কের পাশে যেখানে সেখানে হোটেল রেস্টুরেন্ট ও ছোট বড় দোকান ঘর গড়ে তুলে মোটা অংকের সিকিউরিটির বিনিময়ে ভাড়া দিয়ে আসছেন। সওজের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করেই তারা দিনের পর দিন এসব অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। লালপোলে সড়কের ওপর ডিভাইডারের সাথে মালবাহী কাভার্ডভ্যান, ট্রাক অবস্থান করার জন্য ভাড়া দেয় ওই সিন্ডিকেট।
এ ব্যাপারে ফেনী হাইওয়ে পুলিশ কোন ধরনের কার্যকরী প্রদক্ষেপ না নিয়ে বরং তারা ওইসব সিন্ডিকেট নেতা, হোটেল মালিক ও গাড়ির ড্রাইভারদের কাছ থেকে চাঁদা নিয়ে নিরব থাকেন। তারা বলেন, সড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করাসহ এসব অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ এগিয়ে না আসলে সড়কে যানজট লেগেই থাকবে, ভোগান্তি বেড়ে যাবে, সৃষ্টি হবে অশান্তি, ক্ষতি হবে মানুষের জানমালের।
ফেনী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. আহাদ উল্লাহ ইনকিলাবকে বলেন, মহাসড়কের পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে সাময়িক বন্ধ আছে। তবে দ্রুত এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফেনী হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জাকির হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ সবসময় রাতদিন এক করে কাজ করছেন। কিন্তু সেখানকার স্থানীয় এবং গাড়ির ড্রাইভাররা পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা নেয়ার যে অভিযোগ করেছেন তা সত্য নয়। মহাসড়কে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে তাদেরকে নিয়মিত মামলা দেয়া হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।