বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
৫ রিমান্ডে নেয়া হয়েছে সিলেট গোয়াইনঘাটে স্ত্রী ও দুই সন্তানের ঘাতক হিফজুরকে। চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারের নায়ক হিফজুর চিকিৎসাধীন ছিলেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। আজ রোববার (২০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল হাসপাতালের ছাড়পত্র নেয়ার পর হিফজুরকে নেয়া হয় পুলিশ হেফাজতে। এরপর দুপুর দেড়টার দিকে আদালতে তুলা হয় তাকে। এসময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়াইনঘাট থানার ওসি (তদন্ত) দিলীপ কান্ত নাথ আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানী গোয়াইনঘাট আমলী আদালতের বিচারক অঞ্জন কান্তি দাস ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জর করেন হিফজুরের। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল আহাদ। তিনি জানান, আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত শুনানী শেষে মঞ্জুর করেন ৫ দিনের রিমান্ড। এদিকে, হিফুজরকে আটক ও রিমান্ডে নেয়ার মধ্যে দিয়ে ট্রিপল মার্ডারের রহস্য উদ্ঘাটনের পথ পরিস্কার হয়েছে বলে মনে করছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা। ঘটনার পর হিফজুরের রহস্যজনক আচরনেই প্রাথমিক ভাবে পুলিশ ধারনা করেছিল, হত্যকান্ডের সাথে সর্ম্পক রয়েছে হিফজুরের। সেকারনে শনিবার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। তদন্ত সংশিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যাকান্ডের সাথে সরাসরি জড়িত হিফজুর। বাইরে থেকে কেউ হত্যার জন্য এলে সঙ্গে করে অস্ত্র নিয়ে আসতো। তাদের ঘরের বটি, দা দিয়েই খুন করত না। বিরোধের কারণে খুনের ঘটনা ঘটলে প্রথমেই হিফজুরকে হত্যা করা হতো কিংবা স্ত্রী সন্তানদের প্রথমে হামলা করলেও হিফুজর তা প্রতিরোধের চেষ্টা করতেন। এতে স্বভাবতই সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হতেন তিনি। গত বুধবার রাতের কোনো এক সময় এ নির্মম হত্যাকান্ড ঘটেছিল। ওই রাতে মামার বাসায় থাকায় বেঁচে যায় ওই দম্পতির পাঁচ বছরের ছেলে আফসান। জিজ্ঞাসাবাদ ও হিফজুরের মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে ওই দিন এ বাড়িতে কোনো বহিরাগত লোক প্রবেশের আলামত পাওয়া যায়নি। স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া এবং স্ত্রী ও দুই সন্তানের অসুস্থতা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরেই হিফজুর এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। ঘটনার আগের দিন সাহেববাজার এলাকার কালাগুলে আতা নামের এক মোল্লার কাছে যান হিফজুর। হিফজুর আতা মোল্লার মুরিদ ছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে তিনি ওই মোল্লর কাছে যাওয়া আসা করতেন। ঘটনার দিন সেখান থেকে হিফজুর বাড়ি ফিরেন। স্ত্রীকেও ওই মোল্লার কাছে নিয়ে যেতেন তিনি। হিফজুর রহমান পান ব্যবসা করতেন। প্রতিদিন সন্ধ্যায় পানের টাকা সংগ্রহ করার জন্য তিনি বাজারে যেতেন। কিন্তু ওইদিন তিনি আর বাজারে যাননি। এমনকি ঘটনার ভোর রাতে তিনি তিন জন মানুষের সাথে যোগাযোগ করেন ফোনে। এর মধ্যে একজন অটোরিকশা চালক। তার কাছে ফোন করে হিফজুর অসুস্থতার কথা বলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। এ ঘটনায় বুধবার রাতে নিহত নারীর বাবা আয়ুব আলী বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ২২ (১৬/০৬/২০২১)।
উল্লেখ্য, গত বুধবার সকালে গোয়াইনঘাট উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের নিজ ঘর থেকে হিফজুরের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩০), তার দুই সন্তান মিজান (১০) ও আনিছার (৩) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘর থেকেই হিফুজরকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয় গৃহকর্তা হিফজুরকে। এরপর থেকে হিফজুর পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন ছিলেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।