পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অবশেষে আবারো গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। চীন সরকারের উপহার সিনোফার্মের টিকা সারা দেশে দেয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় এই টিকাদান কার্যক্রম। গতকাল শনিবার সকাল থেকে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা শুরু হয়।
মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের দিয়ে এই টিকা কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খলিলুর রহমান। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, রাজধানী ঢাকা জেলায় ৪টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মাধ্যমে দেয়া হবে সিনোফার্মের ভ্যাকসিন। এই চারটি হাসপাতাল হচ্ছে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এসব হাসপাতালে একটি করে টিকা কেন্দ্র এবং প্রতি কেন্দ্রে দুটি করে বুথ রয়েছে। তাছাড়া ঢাকা জেলা বাদে প্রতি জেলায় একটি করে ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্র এবং প্রতিটি কেন্দ্রে ২টি করে বুথ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তবে বুথ চালু হয়েছে টিকা গ্রহিতার সংখ্যার ওপর নির্ভর করে। ১৫০ থেকে ২০০ জনের জন্য একটি বুথ চালু হয়েছে। দুইশ’র বেশি গ্রহিতা হলে দুটি বুথ চালু করতে হবে।
এছাড়া যে সব জেলায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নেই, সে সব জেলায় সিভিল সার্জন জেলা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে জেলা সদর হাসপাতাল অথবা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের যেকোনো একটিকে জেলা ভ্যাকসিনেশন কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা দেবেন এবং ওই কেন্দ্রে দু’টি বুথ করা হবে। টিকা কেন্দ্র শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত খোলা রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ডোজ চার সপ্তাহ পর : সিনোফার্মের টিকার প্রথম ডোজের সঙ্গে দ্বিতীয় ডোজের ব্যবধান নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ সপ্তাহ (২৮ দিন)। এছাড়া ভ্যাকসিন কেন্দ্রের অন্যান্য ব্যবস্থাপনা আগের মতোই প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহে যারা আগে নিবন্ধন করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন পাননি, তাদের ভ্যাকসিন দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকে এসএমএস’র মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জানাতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে ভ্যাকসিন নেয়ার সুযোগ থাকছে না।
কারা পাচ্ছেন টিকা : ১০ ক্যাটাগরির ব্যক্তিদের সিনোফার্মের এই ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এরমধ্যে ভ্যাকসিনের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রে ইতোমধ্যে যারা ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন পাননি, তাদের এই ভ্যাকসিন দেয়া হবে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ও পুলিশ সদস্যরা যারা আগে ভ্যাকসিন নেননি, অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মী, যাদের বিএমইটি নিবন্ধন কিংবা কার্ড আছে, সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীরা, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস ও সরকারি আইএইচটি’র শিক্ষার্থীরা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা, বিডা’র আওতাধীন ও অন্যান্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলক সরকারি প্রকল্পে (পদ্মা সেতু প্রকল্প, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, এক্সপ্রেস হাইওয়ে প্রকল্প, রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র) সম্পৃক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সারা দেশে কোভিড-১৯ মৃতদের লাশ কবরস্থ করায় নিয়োজিত ওয়ার্ড/পৌরসভার কর্মী এবং বাংলাদেশে বসবাসরত চীনা নাগরিকরা পাবেন সিনোফার্মের এই টিকা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনায় আরো বলা হয়, আগে অন্য কোনো কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নেয়া থাকলে এই ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। নিবন্ধন ছাড়া কেউ ভ্যাকসিন গ্রহণ করতে পারবে না। তাছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন গ্রহণ করে বাংলাদেশে এলে দ্বিতীয় ডোজ হিসেবে এ ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না। সরকারি ও বেসরকারি মেডিক্যাল এবং ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থী, সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি, সরকারি ম্যাটস এবং সরকারি আইএইচটি শিক্ষার্থীরা জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে স্টুডেন্ট আইডি’র তথ্য লিপিবদ্ধ করে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন, কিন্তু দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহণের আগে জাতীয় পরিচয়পত্র সুরক্ষায় ওয়েব পোর্টালে/অ্যাপে নিবন্ধন করে নিতে হবে। তবে সিনোফার্মের এই ভ্যাকসিন ১৮ বছরের নিচে কাউকে দেয়া হবে না। এ ছাড়াও ভ্যাকসিন গ্রহণের সময় জ্বর থাকলে বা অসুস্থ থাকলে, ভ্যাকসিনজনিত অ্যালার্জির পূর্ব ইতিহাস থাকলে, প্রথম ডোজ গ্রহণের পর মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে তিনি এ ভ্যাকসিন নিতে পারবেন না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম জানান, গতকাল জুন থেকে আবারও টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ঢাকায় যেসব মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট-কলেজ আছে সেখানে আমরা আবার প্রথম ডোজের টিকা দেয়া শুরু করেছি।
এর আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ১৯ জুন থেকেই টিকা দেয়া হবে। বাংলাদেশকে মোট ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্মের টিকা উপহার দিয়েছে চীন। গত ১৩ জুন বিমানবাহিনীর দুটি উড়োজাহাজে করে চীনের উপহারের ৬ লাখ ডোড সিনোফার্মের টিকা আনা হয়। এর আগে মে মাসেও সিনোফার্মের পাঁচ লাখ টিকা উপহার হিসেবে বাংলাদেশকে দিয়েছিল চীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।