বাংলাদেশের জনজীবন ও অর্থনীতিতে ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার ওপর নির্মিত ভারতের ফারাক্কা বাঁধের প্রতিক্রিয়া যেমন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক
মীর আব্দুল আলীম
মন্ত্রী, এমপি, সচিবসহ সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর নিয়ে সরকারের নীতিমালা বা নির্দেশনা রয়েছে। সেইসব নিয়ম-নীতি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানা হচ্ছে না বলে প্রায়শই পত্রিকায় সংবাদ ছাপা হচ্ছে। ‘প্রকল্পের অর্থে বিদেশ সফর’,‘সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত বিদেশ সফর’, ‘শিক্ষা সফরের নামে ২০ কর্মকর্তার থাইল্যান্ডে প্রমোদ ভ্রমণ!’ এজাতীয় সংবাদগুলো সত্যিই সুখকর সংবাদ নয়। বিদেশ সফর নিয়ে গত ২৫ আগস্ট প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম এমনÑ ‘মন্ত্রণালয়ের টাকায় ১৫ সংসদীয় কমিটির বিদেশ সফর’। এ সংবাদে জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, ‘মন্ত্রণালয়ের টাকায় সংসদীয় কমিটির বিদেশ সফর নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়’। অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, ‘মন্ত্রণালয়ের টাকায় সাংসদদের বিদেশ সফরে আর্থিক শৃঙ্খলা নষ্ট হচ্ছে’। অর্থমন্ত্রী বরাবরই মন্ত্রণালয়ের টাকায় সংসদীয় কমিটির সদস্যদের বিদেশ সফরকে নিরুৎসাহিত করেছেন। তারপরও এধরনের সফর বন্ধ হচ্ছে না। উল্টো কীভাবে বেশি বেশি বিদেশ সফরে যাওয়া যায়, তা নিয়ে নাকি সংসদীয় কমিটির বৈঠকে গুরুত্বসহকারে আলোচনা হয়। তাই সরকারি অর্থে বিদেশ সফর কিছুতেই সীমিত হয় না। বরং এখনো যেসব সদস্য কমিটির মাধ্যমে বিদেশে যেতে পারেননি, তাঁরা মন্ত্রণালয়ের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন।
পত্রিকান্তে জানা যা, যে যেভাবে পারছেন বিদেশ সফরের কর্মসূচি বাগিয়ে নিচ্ছেন। প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব থেকে শুরু করে প্রশাসনের মূল কর্তাব্যক্তি সচিব পর্যন্ত প্রত্যেকেই বিদেশ যাওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। বিশেষ করে প্রভাবশালী বা ক্ষমতাবানরা সফর প্রস্তাব আসার সঙ্গে সঙ্গেই লুফে নিচ্ছেন। এমনকি কারো কারো মধ্যে বিদেশ সফরের প্রবণতা এক ধরনের বাতিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বিদেশ থেকে ঘুরে আসার আগেই আরেকটি সফর কর্মসূচি তৈরি করে রেখেছেন। কোনো কোনো কর্মকর্তার বছরে ১২ বারেরও অধিক বিদেশ সফরের রেকর্ড রয়েছে। এসব সফরে তার যাওয়া উচিত কি, উচিত নাÑ নীতিমালায় পড়ে কিনাÑ কিছুই বিবেচনা করছেন না। যেসব সফরে সিনিয়র কর্মকর্তাদের বিদেশ যাবার ব্যাপারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা আছে এবং অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তাদের দিতে বলা হয়েছে সেগুলোতেও অহরহ সিনিয়র কর্মকর্তা অর্থাৎ সচিবরা যাচ্ছেন। কোনো বাছ-বিচার নেই। এমনকি বিদেশ সফর নিয়ে নানান লুকোচুরিও চলছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যে শাখা থেকে সফরের প্রজ্ঞাপন জারি হওয়ার কথা সেটি এড়িয়ে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে অন্য শাখা থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হচ্ছে। যাতে সরকারের খাতায় বিদেশ সফরের সঠিক হিসাব না উঠে।
নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো সরকারি কর্মকর্তা ব্যক্তিগত কারণে তিন বছর পর ৩০ দিন এবং দাপ্তরিক কাজে বছরে চারবারের বেশি বিদেশ সফর করতে পারবেন না। বিদেশ সফরের আগে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ারও বিধান থাকছে। দাপ্তরিক কাজে বিদেশে গেলে তার সর্বোচ্চ সময়সীমা হবে ১০ দিন। বিদ্যমান বিধিমালায় বছরে ছয়বার সরকারি খরচে বিদেশ সফরের নিয়ম রয়েছে। এছাড়া ব্যক্তিগত কারণে তিন বছর পর ৩০ দিন ছুটি নিতে পারেন তারা। এমন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয় না। প্রশিক্ষণ বা সরকারি কাজে কর্মকর্তারা বিদেশে যাবেন এটা ঠিক, তবে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে এ সুযোগ বেশি নিলে, তা খুবই খারাপ কথা। কর্মকর্তারা যত দক্ষ ও অভিজ্ঞ হবেন, যত বেশি প্রশিক্ষণ পাবেন, প্রশাসনে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিদেশ ভ্রমণ মন্দ নয়। তবে মন্ত্রী, এমপি, সচিব, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর নিয়ে যে বিতর্ক তাতেই প্রশ্নবিদ্ধ হয় সব।
আমাদের মতো দরিদ্র রাষ্ট্রে এমপি-আমলাদের ঘন ঘন সরকারি অর্থে বিদেশ সফর কতটা যৌক্তিক? উন্নত দেশগুলো কীভাবে চলে তা দেখতে এবং শিখতে বিদেশ সফরের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কিন্তু দেশের অর্থনীতিতে সময়টা সফর আর ভ্রমণের অনুকূলে নয়। তলিয়ে দেখলে বেরিয়ে আসবে বিগত মাসগুলোয় দেশের রেমিট্যান্স বেড়েছে খুবই সামান্য, আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ কমে যাচ্ছে, বৈদেশিক লেনদেনে তৈরি হয়েছে ভারসাম্যহীনতা। ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে তো কমছেই। দেশে চলছে বিনিয়োগ খরা। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, এসইসি এবং সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বহীনতার কারণে শেয়ারবাজারে ইতোমধ্যেই বড় বিপর্যয় ঘটে গেছে। ফলে অর্থনীতিতে বড় ধরনের বিপর্যয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায়ও থেমে নেই এমপি, মন্ত্রী, আমলাদের বিদেশ সফর। কারণে-অকারণেও হচ্ছে এমন সফর। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে বারবার সতর্কতামূলক চিঠি দেয়ার পরও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর। সরকারি কর্মকর্তাদের অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত সফরের কারণে বিদেশ সফরে বরাদ্দের টাকায় টান পড়ছে। এক বছরের টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে কয়েক মাসেই। এজন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হচ্ছে সরকারকে। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজের চেয়ে অপ্রয়োজনীয় সেমিনার ও অভিজ্ঞতা অর্জনের নামে বিদেশ সফরেই উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের আগ্রহ বেশি। অনেক ক্ষেত্রে প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়ে যাওয়ার পরও সরকারি কর্মকর্তারা ওই প্রকল্পের অজুহাতে বিদেশ সফর করছেন। এমনকি মন্ত্রীদের চেয়েও বেশি বিদেশ সফর করেছেন এমপি এবং মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্তারা।
বাংলাদেশে সংসদীয় কমিটির বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে কোনো নীতিমালা নেই। কমিটিগুলো আগে থেকেই মন্ত্রণালয়ের টাকায় বিদেশ সফর করছে। তবে অতীতের যেকোনো সংসদের চেয়ে বর্তমান সংসদের সদস্যদের মধ্যে বিদেশে যাওয়ার প্রবণতা বেশি। জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্যদের মতে, মন্ত্রণালয়ের টাকায় বিদেশে গেলে বিলাসবহুল হোটেলে থাকা-খাওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়। অনেক ঘোরাঘুরি করা যায়। সে জন্যই তারা বিদেশে যেতে চান। তাছাড়া বর্তমান সংসদের ১৪৮ জন নতুন সংসদ সদস্য আছেন। তাঁদের অনেকেই কখনো ইউরোপ-আমেরিকা বা উন্নত দেশে যাননি। এ কারণে কমিটিগুলো থেকে বিদেশ সফরের দাবি জোরালো হচ্ছে। কমিটিগুলোর বিদেশ সফরের ক্ষেত্রে কী পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়েছে, সে তথ্য সংসদ সচিবালয়ে নেই। এসব হিসাব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে থাকে। সংসদ থেকে শুধু জিও (সরকারি আদেশ) জারি করা হয়ে থাকে। সংসদ সচিবালয়ের তথ্য অনুযায়ী উন্নত দেশের নগর উন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানতে ২০১৫ সালের অক্টোবরে ১১ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত কমিটির সভাপতি দবিরুল ইসলাম ও সদস্য নূর জাহান বেগম। অথচ, ফিরে এসে তাঁরা নগর উন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মন্ত্রণালয়কে কোনো পরামর্শ দেননি। এই সফরের ব্যয়ভার বহন করেছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। গত অর্থবছরে বিদেশে ভ্রমণের জন্য দুই কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে বেশিরভাগ টাকা ব্যয় হয়েছে মন্ত্রী-সাংসদ ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের পেছনে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় কমিটির সভাপতি এবি তাজুল ইসলাম ওই কমিটির আট সদস্য নিয়ে জার্মানি, রাশিয়া, পোল্যান্ড ও ফ্রান্স সফর করেন (২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত)। সংসদের নথিতে এটিকে শিক্ষাসফর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, সদস্যরা এসব দেশে সংঘটিত বিভিন্ন যুদ্ধের কারণ ও স্থাপনা পরিদর্শন করে মুক্তিযুদ্ধের স্থাপনা সংরক্ষণে সুপারিশ করবেন। তবে কমিটিতে সেই রকম কোনো সুপারিশ এখনো জমা পড়েনি। তিনটি সফর করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কমিটির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী। গত দেড় বছরে তিনি কমিটির সদস্যদের নিয়ে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও বেলজিয়াম সফর করেছেন। জাপানে তাঁরা একটি ফ্যাশন শো দেখতে যান। তবে ফিরে এসে দুটি ক্ষেত্রে তিনি কমিটিতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। একই সময়ে এই কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন ও ছানোয়ার হোসেন ইতালি সফর করেন। স্কুলের গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে প্রশিক্ষণের নামে মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও সেকায়েপ প্রকল্প কর্মকর্তাসহ ২০ জন সরকারি কর্মকর্তা থাইল্যান্ডে প্রমোদ ভ্রমণের খবর পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। যাদের কেউই স্কুল-কলেজের ইংরেজি ও গণিতে পাঠদান কিংবা প্রশ্ন তৈরি কিংবা কারিকুলামের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পর্কিত নন। নিছকই তা নাকি প্রমোদ ভ্রমণ। এ কথা যদি সত্য হয়, তা হবে অত্যন্ত দুঃক্ষজনক।
প্রকাশিত সংবাদে জানা যায়, দশম জাতীয় সংসদের ৫০টি সংসদীয় কমিটির মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৫টি কমিটির শতাধিক সদস্য মোট ২৪ বার বিদেশ সফর করেছেন। গত দুই বছরের এসব সফরকে ‘অভিজ্ঞতা অর্জন’ ও ‘শিক্ষাসফর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সাংসদেরা বিদেশে গিয়ে কী অভিজ্ঞতা বা শিক্ষা অর্জন করলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সংসদ সচিবালয়ে বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে জানানো হয় না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল নাগাদ বিদেশ থেকে এক হাজার কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন। এর মধ্যে ২০১৫ সালে ৩০০ জন, ২০১৪ সালে ৩৫০, ২০১৩ সালে ২৫০ জন কর্মকর্তা বিভিন্ন দেশ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এতে দেখা গেছে, প্রভাবশালী কর্মকর্তারাই প্রশিক্ষণের নামে ঘুরেফিরে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণের সুযোগ পান। বঞ্চিত হন প্রকল্পসংশিষ্ট কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা। প্রতিবছর কর্মকর্তাদের বিদেশ থেকে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের হার বাড়লেও সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে তার প্রতিফলন কতটুকু পড়ছে, তা নিয়ে সন্দিহান সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিবের একসঙ্গে বিদেশ সফরে বিধিনিষেধ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। অধিকাংশ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের এমন কর্মকর্তাও রয়েছেন, যারা ঊর্ধŸতন কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে বছরের অর্ধেক সময়ই নানা অজুহাতে বিদেশে থাকছেন। মন্ত্রীর ‘কাছের মানুষ’ হওয়ায় কোনো কর্মকর্তাকে এক মাসেই একাধিকবার বিদেশে প্রশিক্ষণ ও সভা-সেমিনারে পাঠানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি এড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে। অনুমতি নেয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় না, আগে ওই কর্মকর্তা কয়বার বিদেশ গেছেন। ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের জন্য বরাদ্দ ছিল ৩০ কোটি টাকা। কিন্তু প্রথম ৩ মাসেই তা খরচ হয়ে গেছে। ২০১০-১১ অর্থবছরে অনুষ্ঠিত প্রায় ৭ হাজার বিদেশি সেমিনার ও ওয়ার্কশপে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ সরকারি কর্মকর্তা অংশ নেন। এর আগের অর্থবছরে ৩ হাজার ৭৫৫টি সেমিনার বা ওয়ার্কশপে অংশ নেন ২ লাখ ২০ হাজার ২৫ জন সরকারি কর্মকর্তা। ২০০৯-১০ অর্থবছরের চেয়ে ২০১০-১১ অর্থবছরে সেমিনার বা ওয়ার্কশপের সংখ্যা বেড়েছে ৩ হাজার ২৩৬টি। একই সঙ্গে এসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সরকারি কর্মকর্তার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৪ হাজার ৩৪৭ জনে। ২০১০ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত বিভিন্ন বিভাগ ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা ১ হাজার ৯৮ দিন বিদেশ সফর করেছেন। বিপরীতে মন্ত্রীরা দেশে সফর করেছেন ১ হাজার ৬৫৪ দিন। পাশাপাশি প্রতিমন্ত্রীরা সরকারি কাজে ৪২৭ দিন বিদেশ সফর ও ১ হাজার ৩৩৭ দিন দেশে সফর করেছেন। ২০১০-১১ অর্থবছরে সচিবরা ১ হাজার ৫০৫ দিন বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। বিপরীতে দেশে সফর করেছেন ১ হাজার ১৩১ দিন। অর্থাৎ দেশের চেয়ে সচিবরা বিদেশ সফর করেছেন ৩০০ দিন বেশি। কাজের প্রকৃতির কারণে কোনো কোনো মন্ত্রণালয় বিদেশ সফরের প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ সফরের তুলনায় বেশি হয়ে থাকে। নানা প্রয়োজনেই বিদেশ সফরে যেতে হয় পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের। ফলে ওই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিদেশ সফরের এক বছরের বরাদ্দ শেষ করে ফেলেছেন ৩ মাসেই। অথচ এসব সফরে দেশের খুব একটা লাভ হয়নি।
লেখক : সাংবাদিক ও কলামিস্ট
[email protected]
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।