পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে তীব্র যানজটের কবলে রাজধানীবাসী। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ঢাকার ব্যস্ততম সড়কগুলোতে যানজট লাগছে। কোনো দিন বৃষ্টি হলে যানজটের তীব্রতা দ্বিগুণ হয়। বাসে ১০ মিনিটের পথ যানজটের কারণে ঘণ্টার বেশি সময় লাগছে। আবার বাসের যাত্রী হেঁটে গন্তব্যস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করলেও ফুটপাতগুলো হকারদের দখলে থাকায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
রাজধানীর ফার্মগেট, উত্তরা, গুলিস্তান, আসাদগেট ও শনির আখড়ায় ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে যানজটের কারণে বাস চলছে ধীর গতিতে। মতিঝিল-দৈনিক বাংলা মোড় হয়ে পুরানা পল্টন, শাহবাগ-বাংলামোটর হয়ে ফার্মগেট-প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনের সড়ক পর্যন্ত এবং এর উল্টো দিকে ফার্মগেট থেকে রূপসী বাংলা হোটেল, শাহবাগ-মৎসভবন-পুরানা পল্টন পর্যন্ত একটু পর পর যানজটে আটকে থাকতে দেখা গেছে হাজারো যানবাহন। এছাড়া যানজটে অচল হয়ে পড়েছে পল্টন মোড় থেকে কাকরাইল-মালিবাগ মোড় পর্যন্ত সড়ক। মিরপুর সড়ক, মহাখালী, বনানী, রামপুরা, বাড্ডা লিংক রোড, নতুন বাজার এলাকায়ও যানজটের কারণে থেমে থেমে চলছে যানবাহন।
শনির আখড়া থেকে দ্রুত অফিসে যাওয়ার জন্য হানিফ ফ্লাইওভার দিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রবণ বাসে উঠেন সিরাজুল ইসলাম। কিন্তু ফ্লাইওভারেও যানজটের কারণে বাস থেকে নেমে হেঁটে অফিস যাচ্ছেন সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, শনির আখড়া থেকে গুলিস্তানে অফিসে যাওয়ার উদ্দেশে বাসে উঠেছি, এখন ফ্লাইওভারেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, এজন্য বাস থেকে নেমে হেঁটেই অফিসে যাচ্ছেন। শুধু সিরাজুল ইসলাম নয়, রাজধানীর লাখ লাখ যাত্রী প্রতিদিন যানজটের কবলে পড়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় একদিকে নষ্ট করছেন অন্যদিকে ভোগান্তির কবলে পড়ছেন।
এছাড়াও এয়ারপোর্ট-উত্তরা রোডেও প্রতিদিন যানজটে নাকাল মানুষজন। সকালে অফিসগামী মানুষদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। তার ওপর আষাঢ়ের বৃষ্টি ভোগান্তির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। সকাল থেকে মহাখালী-মিরপুর বা বাড্ডার দিক থেকে উত্তরা-আব্দুল্লাপুর-টঙ্গীগামী সব যানবাহনকে দীর্ঘ যানজটে পড়তে হয়েছে। আর এর প্রভাব পড়েছে উল্টো দিকের সড়কেও। রাজধানীর ইসিবি চত্বর থেকে উত্তরায় অফিসগামী রাকিবুল হক নামে এক ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ইসিবি চত্বর থেকে উত্তরা পর্যন্ত (১২.২ কিলোমিটার) রাস্তা পার হতে ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট লেগেছে। ভুক্তভোগী আব্বাস আলী জানান, আমরা আসলে খুবই অসহায়। হাতে অতিরিক্ত নিয়ে বের হওয়ার পরেও সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারি না। সরকারের কোনো চিন্তাতেই নেই আমরা এমন কষ্ট করি রাস্তায়। আসলে কিছু বলার নাই।
জানা গেছে, ভোরের দিকে টঙ্গীতে একটি মিনি ট্রাক রাস্তার গর্তে আটকে যাওয়ায় এ পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে রাস্তার উন্নয়ন কাজ এবং বৃষ্টির কারণে পানিবদ্ধতায় আব্দুল্লাপুর অংশের রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়েছে। এজন্য গাড়ির ধীরগতিও যানজটের অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন এ পথে চলাচলকারী যাত্রীরা। গতকাল সকাল থেকেই এমন যানজটের ভোগান্তি পড়ে অনেককে বাধ্য হয়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দিতে দেখা গেছে।
মহাখালী থেকে আব্দুল্লাহপুরগামী এবং আব্দুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় যাতায়াত করা সব পরিবহনই যানজটে নাকাল অবস্থা। একে তো বৃষ্টি তারওপর যানজট। দুই মিলিয়ে বেশ বেকাদায় যাত্রীরা।
সাইফুল নামের একজন জানান, রাস্তায় শুধু গাড়ি আর গাড়ি। কোন সময়ে গাড়ি একটু সামনের দিকে যাচ্ছে, আবার থেমে যাচ্ছে। অফিসের সময় রাস্তাতেই শুরু হয়ে গেল, কিন্তু অফিসে আর পৌঁছাতে পারা গেল না। শুধু প্রধান সড়কে নয়, উত্তরার বিভিন্ন সংযোগ সড়কেও বেশ যানজট দেখা গেছে।
যানজটের কারণ হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক-উত্তরা) সাইফুল হক বলেন, গতকাল সকাল থেকেই এ সড়কে যানজট তৈরি হয়েছে। মূলত আব্দুল্লাহপুর থেকে গাজীপুর চৌরাস্তা পর্যন্ত সড়কের কাজ হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে রাস্তায় কাদাযুক্ত ও সরু হয়ে গেছে। ফলে এ সড়কে যানজটটা দেখা দেয়।
রূপগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ে সড়কে টানা দীর্ঘ যানজট, দুর্ভোগ চরমে
খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ থেকে জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের উভয় দিকে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। গত সোমবার সকালে থেকে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত টানা ২ দিন সড়কটির উভয় দিকে কমপক্ষে ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে রয়েছে বিভিন্ন যানবাহন। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলগামী বিভিন্ন পণ্যবাহী পরিবহন, যাত্রীবাহীসহ বিভিন্ন যানবাহনের চালকও যাত্রী সাধারন। এদিকে এ যানজট নিরসনে গাজীপুর ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও কালীগঞ্জ থানা পুলিশ কোন সহায়তা করছে না বলে জানান স্থানীয় প্রশাসন।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, গত সোমবার সকালে রূপগঞ্জ থানার পার্শ্ববর্তী কালীগঞ্জ থানাধীন পাঞ্জুরা এলাকায় পূর্বাচল ফ্যাশান নামে একটি রপ্তানিমূখী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সকাল থেকে বেতনভাতার দাবিতে এশিয়ান হাইওয়ে বাইপাস সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এছাড়া এশিয়ান হাইওয়ে(বাইপাস) সড়কটি চারলেন বিশিষ্ট সড়কে উন্নতিকল্পে বিভিন্নস্থানে সড়কের একপাশ বন্ধ করে কাজ শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে সোমবার সকাল থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল হতে মীরেরবাজার পর্যন্ত উভয় পাশে কমপক্ষে ৬০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে উত্তরাঞ্চল থেকে চট্টগ্রাম বন্দরগামী ও চট্টগ্রাম থেকে উত্তরাঞ্চলগামী বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনের চালকেরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। এমনকি এ ভোগান্তি থেকে রেহাই পায়নি যাত্রীবাহী বিভিন্ন যানবাহনে চলাচলরত সাধারন মানুষ। রংপুর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরগামী মালবাহী কাভার্ডভ্যান চালক জামাল মিয়া বলেন, সোমবার সকালে রওয়ানা দিছি। এখন পর্যন্ত কাঞ্চন সেতুর টোল প্লাজা পাড় হতে পারি নাই। জানিনা কতক্ষণ পর এ যানজট থেকে রেহাই পাবো। এমনকি কখন মালামাল নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাবো সেটাও বুঝতে পারছি না।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, পাশ্ববর্তী কালীগঞ্জ থানার পাঞ্জুরা এলাকায় একটি রপ্তানিমূখী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বেতন ভাতার দাবিতে সড়ক অবরোধ করায় ও এশিয়ান হাইওয়ে সড়কটি চার লেন করার জন্য কালীগঞ্জ এলাকায় কাজ শুরু হয়েছে। যার দরুণ এ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কের রূপগঞ্জ থানাধীন এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি, রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ যানজট নিরশনে কাজ করে যাচ্ছে। গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানাধীন এলাকায় সেখানে যানজটের সুত্রপাত হয়েছে সেখানকার দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, থানা পুলিশ শুনেছি তেমন সহায়তা করছে না। যদি সহায়তা করতো তাহলে যানজট এত দীর্ঘ হতোনা। তারপরও আশা রাখি খুব তাড়াতাড়ি যানজট নিরসন করা সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।