Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টিআইবি আগাগোড়া ভুল তথ্য দিয়েছে- স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুন, ২০২১, ৭:২৯ পিএম

স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআিইবি’র প্রকাশিত রিপোর্টটি মিথ্যা ও ভুল তথ্য সংবলিত বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, করোনাকালীন সংকটকালে দেশের স্বাস্থ্যখাত যখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত তখন টিআইবি দেশের স্বাস্থ্যখাতকে নিয়ে একটি অসত্য রিপোর্ট তুলে ধরেছে। টিআইবি’র রিপোর্টটি আগাগোড়াই ভুল তথ্য সংবলিত।

শনিবার (১২ জুন) রাজধানীর জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে করোনা যুদ্ধে শহীদ জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মনোয়ার এর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে টিআইবি স্বাস্থ্যখাত নিয়ে মনগড়া সমালোচনা করেছে। করোনার দুঃসময়ে টিআইবি মাঠে নেমে কোন কাজ করেনি। মাঠে কাজ করেছে দেশের স্বাস্থ্যখাতের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য ফ্রন্টলাইন যোদ্ধারা। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমে বসে তারা মুখস্থ বিদ্যার মতো ঢালাওভাবে স্বাস্থ্যখাতের সমালোচনা করেছে। টিআইবি’র করা কিছু সমালোচনা উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবি বলেছে দেশে কোভিড পরীক্ষার সুবিধা বাড়ানো হয়নি। অথচ দেশে কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্র মাত্র ১ টি থেকে এখন ৫১০টি করা হয়েছে। টিআইবি বলেছে, হাসপাতালগুলিতে করোনা শয্যা বাড়ানো হয়নি, অথচ এখন দেশে করোনা বেড সংখ্যা ১৫ হাজারেরও বেশি। কিছুদিন আগেও ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশন হাসপাতালে প্রায় ১০০০ নতুন শয্যা বাড়ানো হয়েছে। যেখানে প্রায় সব শয্যাই সেন্ট্রাল অক্সিজেন সুবিধাপ্রাপ্ত এবং অর্ধেক সংখ্যকেই শয্যাই আইসিইউ সুবিধা রয়েছে। টিআইবি বলেছে, দেশে আইসিইউ শয্যা বাড়েনি। অথচ করোনার শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ৩০০ ভাগ আইসিইউ শয্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে দেশে মাত্র ২০০টির মতো আইসিইউ শয্যা ছিল। আর এখন আইসিইউ শয্যা ১০০০টিরও বেশি। টিআইবি ভারতের সাথে টিকা ক্রয় চুক্তিতে অস্বচ্ছতার কথা বলেছে যা মোটেও সত্য নয়। ভারতের সাথে চুক্তি থেকে শুরু করে সবকিছু ছিল স্বচ্ছ পানির মত পরিষ্কার ও উন্মুক্ত। দেশের সব মানুষই জানে ভারতের সাথে কি ছিল চুক্তিতে এবং কেন ভারত চুক্তির অবশিষ্ট টীকা দিতে পারেনি।

এছাড়াও টিআইবি বসুন্ধরা আইসোলেশন সেন্টার প্রসঙ্গে, টীকার প্রায়োরিটি সেট করা বা বিদেশগামী যাত্রীদের সেবা দানের যে সমালোচনা করেছে। তা আগাগোড়াই মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এমনকি টিকা প্রদান কার্যক্রম যখন গোটা দেশেই প্রশংসিত হয়েছে। কিন্তু টিআইবি সেটি নিয়েও সমালোচনা করেছে। তিনি বলেন, করোনার শুরুতে দেশে মাত্র একটি হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা ছিল। সেটি এখন ১৩৪ টি হাসপাতালে স্থাপিত হয়েছে। টেলিমেডিসিন সেবার মাধ্যমে মানুষ ঘরে বসেই করোনা চিকিৎসা পেয়েছে। ওষুধে কখনই দেশের কোন ঘাটতি হয়নি। পর্যাপ্ত অক্সিজেন মজুদ রাখা হয়েছে। কোথাও কোন দুর্নীতি হলে সেটিতে দ্রুত গতিতে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। স্বাস্থ্যখাত নিয়ে টিআইবি কেবল সমালোচনা করার জন্যই সমালোচনা করেছে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, তারা করোনা নিয়ন্ত্রণে কোন প্রচারণা বা ভূমিকাই রাখেনি। দেশের হাসপাতাল গুলির সমস্যা গত ৫০ বছরের। রাতারাতি সব সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে এটি প্রত্যাশা করাটা বিজ্ঞতার পরিচায়ক নয়। চিকিৎসা সেবায় গত এক বছরে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে হাসপাতালগুলিকে চিকিৎসা বান্ধব করা হয়েছে। প্রায় ২০ হাজার চিকিৎসক, নার্সসহ নতুন লোকবল নিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, টিকা বিষয়ে চীনের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। চীনের পক্ষ থেকে দ্রুতই এ বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হকে জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের সাথেও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।

স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ করাটা এখন অনেকেরই একটি ‘ফ্যাশনে’ পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বেসরকারী হাসপাতালের টেস্টিং জালিয়াতি, একজন ড্রাইভার বা নিম্ন পদস্থ কর্মচারীর দুর্নীতি বা বিচ্ছিন্ন কোন কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্বচ্ছতার খবর ছাড়া কেউ স্বাস্থ্যখাতের বড় কোন দুর্নীতি দেখাতে পারেনি। এক্ষেত্রে যারাই স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম করেছে তাদেরকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হয়েছে। সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শহীদ চিকিৎসক ডা. মাহমুদ মনোয়ারের মৃত্যু বার্ষিকীতে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন ও তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মীর জামাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. এবিএম খুরশিদ আলম, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা প্রমুখ।



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ১২ জুন, ২০২১, ৯:৪০ পিএম says : 0
    ভুল সত্য বুঝতে চাই না,বহুত শুনিয়াছি আর না,সরে যাও তোমরা আর হবে না সংসদীয় পদ্ধতি দিন শেষ,আমরা রাষ্ট্র পতি পদ্ধতি চালু করবে,
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ