বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনায় মারা গেছেন স্বামী বিধান চন্দ্র মন্ডল (৩৭)। অসহায় স্ত্রী শৈবা রানী মন্ডল তার ছোট দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে লাশের পাশে বসে কাঁদছেন। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী কেউ আসেননি সৎকার করতে। ততক্ষণে লাশ পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে।
অবশেষে খবর পেয়ে শ্যামনগর মহসীন ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী হাফিজ, মিলন ও জামাল বাদশা জাতি-ধর্ম বিবেচনায় না এনে সৎকার করলেন করোনায় মৃত হিন্দু যুবক বিধান চন্দ্র মন্ডলের।
শুক্রবার (১১ জুন) বিকেলে এই মুসলিম যুবকেরা অসাম্প্রদায়িকতার এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের গৌরীপুর গ্রামে।
এলাকাবাসী জানান, গৌরীপুর গ্রামের দিনমজুর বিধান চন্দ্র মন্ডল করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হন সাতক্ষীরা সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কয়েক দিন পর তাকে বাড়িতে নিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার দিয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিলো। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতেই মারা যান বিধান।
শ্যামনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন জানান, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবি সংস্থা সিডিও’র সদস্যরা মুসলিম হয়েও তাকে সমাধি করে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।
তিনি জানান, চোখের সামনে স্বামীর মৃত্যু দেখেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন, স্ত্রী শৈব রানী মন্ডল। তিনি তার দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে প্রতিবেশীদের কাছে যান। আত্মীয়-স্বজনদের খবর দেন লাশের সৎকার করার জন্য। কিন্তু ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি। রাতভর লাশ ঘরেই পড়ে থাকে।
শুক্রবার দুপুরে এই খবর আসে শ্যামনগরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিওর কাছে। এরপর কলেজ শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান, আনিসুর রহমান মিলন ও জামাল বাদশা পিপিই পরে চলে যান ঘটনাস্থলে। সেখানে গিয়ে দেখেন মৃতদেহের পাশে বসে কাঁদছেন স্ত্রী শৈবা রানী মন্ডল, সাড়ে চার বছরের মেয়ে কৃষ্ণা মন্ডল ও দুই বছরের ছেলে সৌরদিপ মন্ডল।
নিহতের স্ত্রী তাদের জানান, করোনায় মারা গেছেন এমন খবরে বাড়ির অন্য লোকজন বা প্রতিবেশীরা কেউ সৎকারের জন্য আসেনি। বিধান যেখানে মারা গিয়েছিল, ঠিক সেখানেই পড়ে ছিল তার নিথর মরদেহ। তারা লাশটি পলিথিন পেপার দিয়ে মুড়িয়ে সেখান থেকে নিয়ে চলে যান বাড়ির নিকটবর্তী একটি স্থানে। স্থানীয় এক ব্যাক্তিকে সাথে নিয়ে কবরের আকৃতিতে মাটি খুঁড়ে তাকে সেখানেই সমাধি করে ফিরে আসেন ওই যুবকেরা। পরে বাড়িটি লকডাউন করে দেয়া হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।