Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘চলে যাও রেহাই দাও দেশকে’ : আন্দোলনের প্রস্তুতি সম্পর্কে ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০২১, ১২:০২ এএম

নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলনের জন্য দলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এখন আর সময় নেই। আগামী দিনের জন্য তৈরি করে ফেলেন। শক্ত হয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়াই, জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। দাবি একটাই- চলে যাও, চলে যাও, রেহাই দাও বাংলাদেশকে। আমাদের পরিস্কার কথা, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তা হলে না হলে এই বাংলাদেশের মানুষ কিভাবে তাদের অধিকার আদায় করতে হয় তারা তা জানে। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ক্ষমতাসীন অপকর্মের কথা বলতে গিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ওদের একজন এমপি কিছুদিন আগে পার্লামেন্টে বলেছেন, বড় চোরদের চুরি দেখে ছোট চোররা এখন লজ্জা পাচ্ছে। বড় চোর হচ্ছে ওদের মন্ত্রী, বড় বড় নেতারা। করোনা মানুষের জীবন নিয়ে যাচ্ছে, জীবনের প্রশ্ন, বাঁচা-মরার প্রশ্ন। সেখানেও তারা চুরি করছে। টেস্টে চুরি, মাস্কে চুরি, পিপিইতে চুরি, ডাক্তার-নার্সদের টাকা দেয়ার বেলা চুরি, আইসিইউ বেডে চুরি। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল চুরি, একটা হাসপাতাল নেই, উধাও হয়ে গেছে। চিন্তা করতে পারেন। আবার নতুন করে একটা হাসপাতাল তৈরি করবে, আবার ওখানে চুরি করবে, আবার কমিশন নেবে। আর ওই টাকা পাঠাবে কানাডা, মালয়েশিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। আমার কথা নয়, আপনারাই (সরকার দলীয়রা) এখন বলতে শুরু করেছেন পার্লামেন্টে, বিভিন্ন জায়গায়। এই যে অর্থ পাঁচার হচ্ছে-এটা ভয়াবহ। আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলছেন যে, ৬ লাখ কোটি টাকা গত কয়েক বছরে দেশ থেকে পাঁচার হয়ে গেছে। এটাই আওয়ামী লীগ।

তিনি বলেন, আপনাদের আশে-পাশে তাঁকিয়ে দেখবেন- আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, বড় নেতা-ছোট নেতা-পাতি নেতা, তাদের চলাফেরা, চাল-চলন দেখেছেন নিশ্চয়। রাতারাতি সব আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এদের হাতে যদি দেশ বেশি দিন থাকে এই দেশের অস্তিত্ব থাকবে না, এদেশ টিকবে না। ছোট বেলা আমরা পড়তাম, গানও শুনেছি- ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে। এই সেই বর্গী এরা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এদের ভয়ে সব পালিয়ে যাচ্ছে এখন। কাউকে কোনো কথা বলতে দেবে না। কথা বললেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট। আর বেশি কথা বললে নিপুণ রায় চৌধুরীর মতো মিথ্যা অডিও ক্লিপ তৈরি করে তাকে নাশকতার মামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরকম নজির অসংখ্য। সাংবাদিক ভাইয়ের কিছু শক্ত করে লেখতে পারে না। লিখলে তো জেল, মামলা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, মেরেও ফেলতেছে, হত্যাও করতেছে। জিয়াউর রহমানের জীবনাদর্শ দলের নেতা-কর্মীদের জন্য ‘গর্ব’ উল্লেখ করে তা অনুসরণ করার আহবান জানান বিএনপি মহাসচিব।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দলের নেতা-কর্মীরা জেলখানায়, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বন্দিবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিদেশে মাটিতে। এমনি অবস্থায় আমরা ভার্চুয়ালি ও এমন আলোচনার মধ্য দিয়ে কথাই বলে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, জিয়ার কথায় চলতে হবে- কথা কম কাজ বেশি। এখন কথা বলার চেয়ে বেশি জরুরী সরকারের পতন কিভাবে করাবো? সেই পতনের ডাক দেন, সেই আন্দোলনের ডাক দেন। অতীতের ইতিহাসে আমরা থেকেছি, আগামীর ইতিহাসেও আমরা থাকবো। আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টি করবো।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, এই করোনার সাথে সম্ভবত এই সরকারের আতাঁত রয়েছে। ওনাদের (সরকার) প্রচার করা মৃতের ও আক্রান্তের সংখ্যা দেখেন। যখনই তাদের প্রয়োজন পড়ে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে, আবার যখনই প্রয়োজন পড়ে মৃত্যু এবং আক্রান্তের সংখ্যা কমে যায়। এই সমস্ত ভন্ডামি করে কত দিন? ভেবেছেন অনেক তো পার পেয়েছি, এবার করোনার ওপর দিয়ে যদি কিছুদিন পার পাওয়া যায়। যখন পার না পাওয়ার চক্করে পড়বেন কোনো আব্বাজান এসে আপনাকে বাঁচাতে পারবে না।

তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরের থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দকে বলব, সারা বাংলাদেশের মানুষ ঢাকার দিকে তাঁকিয়ে আছে। প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড সংগঠনের শক্তি বাড়ান। আগামীতে এই শক্তি নিয়ে আমাদের মাঠে নামতে হবে। আমরা দেখতে চাই, ওদের কত শক্তি আছে, আমাদের জনতার শক্তিকে মোকাবিলা করার।
মহানগর দক্ষিনের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, গত নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ১১ জুন, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
    কি ভাবে দুর হবে যেখানে মিলিয়ন বিলিয়ন টাকা আর টাকা,কে চায় এই গুলি ছেড়ে চলে যাবে।????????????'বাড়ি গাড়ি ????????????????????????✈,টাকার লাগিস বিমানে আমেরিকা লন্ডনে। ???????? নাগরিক,???????? নাগরিক। (????????×)।এতো সুযোগ সুবিধা পালাইয়া যামু আগে ছেলে মেয়েদের জন্য ঐ গুলো শেষ করি পরে দুরে চলে যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • প্রবাসী-একজন ১১ জুন, ২০২১, ৪:১৩ এএম says : 0
    সব অরণ্যে রোদন। এতো শক্তিধর লাঠিয়াল আর আমোদ-প্রমোদের সুযোগ থাকতে কেন চলে যাবে? বছরের পর বছর আন্দোলনের প্রস্তুতি তো কত দেখলাম, ডান্ডার বাড়িতে সব ঠান্ডা করে দিলো। আল্লাহ তরফ থেকে গজব না আসা পর্যন্ত যদি ছাড়ার কোনো সম্ভাবনা আছে বলে মনে হচ্ছে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Sayed, Freedom Fighter ১১ জুন, ২০২১, ৩:৩২ পিএম says : 0
    বলেন, এখন আর সময় নেই। আগামী দিনের জন্য তৈরি করে ফেলেন। শক্ত হয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়াই, জনগণকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে আসি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি। দাবি একটাই- চলে যাও, চলে যাও, রেহাই দাও বাংলাদেশকে।-------- Do we need another HOWA BHABON?
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফখরুল


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ