Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বুধবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে দিনাজপুর জেলে স্ত্রী হত্যার আসামীর ফাসি কার্যকর

দিনাজপুর অফিস | প্রকাশের সময় : ১০ জুন, ২০২১, ৮:৩৮ এএম

বুধবার দিনগত রাত (বৃহস্পতিবার রাত ১২ টা ১ মিনিটে) দিনাজপুর জেলা কারাগারে স্ত্রী হত্যার দায়ে দন্ডপ্রাপ্ত আসামী আবদুল হক এর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল। এর মধ্যে ২২ বছর কেটেছে জেলখানায়। বাড়ী রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত ওসিরউদ্দিন আহম্মদ। ২০০০ সালে স্ত্রী বেলী বেগমকে হত্যার দায়ে রংপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত তাকে ফাসির আদেশ দেয় বলে তার নিকট আত্বীয়রা জানায়। পরে জেল আপিলে তার সাজা বহাল থাকে।
দশ বছরের সংসার জীবনে আবদুল হক নিঃসন্তান ছিল। পালিত এক কন্যাকে নিয়েই তাদের সংসার চলছিল। ২০০০ সালের কোন এক সময় তার বাড়ীর ঘরে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে তার শশুর বাদি হয়ে জামাই আবদুল হকসহ ৪জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতনসহ হত্যা মামলা দায়ের করে। চার্জ থেকে অপর তিন আসামী মুক্ত হলেও আবদুল রব একমাত্র আসামী হিসাবে থাকে।
বুধবার জেল গেট এলাকায় পুলিশের আনাগোনা দেখে অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে। রাতে বিভিন্ন সুত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, আজ রাতে একজনের ফাঁসি কার্যকর হবে। তবে কি তার পরিচয় এবং কোন মামলায় ফাঁসি হচ্ছে তা কেউ বলতে পারে না। খবর পেয়ে ইনকিলাব প্রতিনিধিসহ হাতে গোনা কয়েকজন গনমাধ্যম কর্মী মধ্যরাতে জেলগেটে অপেক্ষা করতে থাকে। এসময় জেলা প্রশাসক ও জেল কর্তৃপক্ষের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোন লাভ হয় না। অবশেষে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন বিপিএম ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি নিশ্চিত জানান। তবে অন্যান্য কোন তথ্য জানতে জেল সুপারের সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। তবে মৃত্যুদন্ডের পর মরদেহ গ্রহন করতে আসা ভাতিজা কামরুজ্জামান এবং সর্ম্পকে নাতি আবু হোসেন জানান, আজ থেকে ২০ বছর আগে গ্রামের নিজ বাড়ীর ঘরে স্ত্রী বেলি বেগমের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। বেলীর বাবার বাড়ী রংপুর সদরের সেলিমপুর গ্রামের আবদুল হামিদের মেয়ে বেলী। ২০০০ সালে মেয়েকে হত্যার দায়ে বাবা আবদুল হালিম ৪ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করে। চার্জ থেকে তিন জনকে অব্যাহতি দিয়ে আবদুল হককেই একমাত্র আসামী রাখা হয়েছিল।
সাজাপ্রাপ্ত আবদুল হক রংপুর কারাগারে ছিল। গত ২২ জুন ফাসি কার্যকরের জন্য দিনাজপুর কারাগারে আনা হয়। জল্লাদ হিসাবে ফাঁসি কার্যকর করেন দীর্ঘ মেয়াদী সাজাপ্রাপ্ত আসামী ওবায়দুল। তাকে ৪ দিন আগে রাজশাহী কারাগার থেকে আনা হয়েছিল। দিনাজপুর জেলের ৪ জন আসামী তাকে সহায়তা করেন।
অনেকের মতে স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দিনাজপুরে এই প্রথম কোন ফাসি কার্যকর হলো। ফাসি কার্যকরের সময় জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকি, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন বি্িপএম, সিভিল সার্জন ডাঃ আবদুল কুদ্দুস, জেল সুপার, জেলার ও জেল ডাক্তার সঞ্চয় কুমার উপস্থিত ছিলেন।
ফাঁসি কার্যকরের পর আনুসাঙ্গিক কার্যক্রম সম্পন্ন শেষে রাত ১ টা ১৪ মিনিকে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সিভিল সার্জন কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। রাত ১ টা ৪০ মিনিটে আবদুল হক এর মরদেহ নিয়ে এম্বুল্যান্স বেরিয়ে আসে এবং অপেক্ষমান আত্মীয় স্বজনদের নিয়ে মিঠাপুকুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হোন।



 

Show all comments
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ১০ জুন, ২০২১, ৯:৩৩ এএম says : 0
    পৃথিবীর সব দেশেই আইন আদালত আছে,বিচারে ক্ষেত্রে এবং রায়ের পক্ষে বসর কে বসর দেরী করেন না,তদন্ত শেষ হবার সাথে সাথে রায় কার্যকর হয়ে থাকে।এই জন্য ঐ সমস্ত দেশ গুলিতে অনন্যায় অপরাধ খুন খারাপি কম হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের বেলায় সেটা ভিন্ন। এক দিকে তদন্ত শেষ করতে সময় লাগে,যাক তদন্ত শেষ করে দেওয়ার পরেও ,রায় কার্যকর করতে দেরি হয়ে থাকে ,যেমন আসামি কে আপিল করতে দেওয়া,আপিলের ক্ষেত্রে কিছু সংখ্যক দুষকৃতকারী উকিল ….... আজ এইটা কালকে এইটা এই ভাবে টাকা কামানোর জন্য বসর কে বসর সময় পার করেন। কিন্তু যেমন এই আসামিটির দিকে লক্ষ করুন কয়েক বসর শেষ হয়ে গেল,শেষ পর্যন্ত রায় কার্যকর হলো। মাঝখানে আসামি পক্ষ এবং বাদীপক্ষ এই কয়েক বসরে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা খরছ করেছে ।কিন্তু কয়েক বসর উভয় পক্ষই আশা করেছে রায়ে আমি জীতবে 2য়পক্ষ আশা করে বসে আছে আমি রায় পাবে ।এই ভাবে দুই পক্ষ ক্ষতির মুখেমুখি হলো। সব কিছু দুই পক্ষ হারাইলেন। আম ও গেল চালাও গেল। মাঝখানে লাভ করে গেছেন উকিল এবং .....রা।এবং এই দেরিতে দেশে অনন্যায় আরো বৃদ্ধি পেল। বিচার যদি ঘোরা ঘুরি না হতে দেশে খুন খারাপি কম হতো। এবং ভয় করেও অনন্যায় থেকে দুরে থাকতেন। কিন্তু আমাদের দেশে বিচার কার্যক্রম দেরিতে হওয়ার কারণে অপরাধ খুন খারাপি বেড়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • পাবেল ১০ জুন, ২০২১, ১০:৩৩ এএম says : 0
    দ্রুত সময়ের মধ্যে যেকোনো বিচারের রায় কার্যকর করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply
  • সিরাজুল ইসলাম ১০ জুন, ২০২১, ১০:৩৩ এএম says : 0
    প্রত্যেককে তার প্রাপ্য অপকর্মের সাজা পেতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • খোরশেদ আলম ১০ জুন, ২০২১, ১০:৩৭ এএম says : 0
    মানুষ কতটা নিষ্ঠুর!!!!!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • জহির ১০ জুন, ২০২১, ১০:৩৯ এএম says : 0
    স্ত্রীকে হত্যা করে নিজেকেও মরতে হলো, চাই যে কোন অন্যায় করার আগে চিন্তা করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ