পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজেটে প্রতিবন্ধী মানুষের চাহিদার প্রতিফলন না আসার জন্য সরকারের আমলাতান্ত্রিক উদাসীনতাকে দায়ী করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী মানুষের দাবির নূন্যতম প্রতিফলন প্রস্তাবিত বাজেটের চূড়ান্ত বাজেট আইনে না আসলে, পথে নামা ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রস্তাবিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তর অবিলম্বে বাস্তবায়ন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল বাজেট বাস্তবায়ন ও বাজেটে সরকারের জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র-২০১৫-এর কার্যকর প্রতিফলন যাতে থাকে তার দাবি করেন। তাই সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব অবস্থানকে সুসংহত করতে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণের জোর দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীর কাছে বেকার প্রতিবন্ধী মানুষেরা চাকরির সংস্থানের জন্য আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার (৮ জুন) প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের নিয়ে কাজ করা সংগঠন - বাংলাদেশ ডিজেবেল্ড ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (বিডিডিটি), বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্যা চেঞ্জ এন্ড অ্যাডভোকেসি নেক্সাস (বি-স্ক্যান), ডিজএবল্ড চাইল্ড ফাউন্ডেশন (ডিসিএফ), কমিউনিটি বেজ ডিসেবিলিটি এন্ড চাইল্ড প্রোটেকশেন অরগানাইজেশেন (সিবিডিসিপিও), ডিজএবল্ড ডেভেলপমেন্ট এন্ড রিসার্চ সেন্টার (ডিডিআরসি), হিউম্যান রাইটস ডিজেবিলিটি এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এইচডিডিএফ), প্রতিবন্ধী নারীর জাতীয় কাউন্সিল (এনসিডিডব্লিউ), জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা (এনজিডিও), উইম্যান উইথ ডিজেবিলিটি ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (ডব্লিউডিডিএফ) এর আয়োজনে প্রস্তাবিত ২০২১-২০২২ সালের বাজেটের উপর প্রতিবন্ধী মানুষদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাজেট প্রতিক্রিয়া এ অভিযোগ করা হয়। ইনোভেশন টু ইনক্লোশন কর্মসূচির কৌশলগত সহায়তায় একসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন (এবিএফ), লিওনার্ড চেশিয়ার (এলসি) এর সহযোগিতায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনটি অনলাইনের পাশাপাশি ফেসবুক লাইভ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। আশরাফুন্নাহার মিষ্টি, নির্বাহী পরিচালক ডব্লিউডিডিএফ-এর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনটির সভাপতিত্ব করেন নাসরিন সুলতানা, নির্বাহী পরিচালক, ডিসিএফ। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সাজ্জাদ, নির্বাহী পরিচালক, ডিডিআরসি। মূল প্রবন্ধ ও প্রস্তাব উপস্থাপন করেন সালমা মাহবুব, সাধারণ সম্পাদক, বি-স্ক্যান। সভার সমাপনী ঘোষণা করেন মহুয়া পাল, ভাইস চেয়ারম্যান, এবিএফ।
অংশগ্রহণকারী প্রতিবন্ধী নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন-
# নারী ও শিশু সংবেদনশীল বাজেটের মতো প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংবেদনশীল মন্ত্রণালয় ভিত্তিক বাজেট প্রণয়ন
# সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০২০ সালের মধ্যে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জন্য ভাতা ১৫০০ টাকায় উন্নীত করা এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সার্বজনীন ভাতা হিসেবে প্রতিবন্ধী ভাতার নামকরণ ‘সমসুযোগ ভাতা’ হিসেবে পরিবর্তন করা। নিউরো ডেভেলপমেন্ট ডিজেবেলিটি ট্রাস্ট (এনডিডি ট্রাষ্ট), জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (জেপিইউএফ) ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট-এর মাধ্যমে গুরুতর প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য ব্যক্তি সহায়তাকারী (কেয়ারগিভার/পারসোনাল এ্যাসিসটেন্ট) ভাতা চালু করা। বেসরকারি চাকরিতে নিয়োজিত সকল প্রতিবন্ধী চাকরিজীবিদের জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কর্মহীন বীমা চালু করা।
# প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কমসংস্থান তৈরির জন্য বানিজ্যিক সংস্থায় ১০ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিয়োগ করলে ৫ শতাংশ কর ছাড়ের বিধানটি সংশোধন করে, ২ শতাংশ নিয়োগ করলে ৩ শতাংশ কর ছাড়ের বিধান করা। যদি কোন প্রতিষ্ঠান এই ২ শতাংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি নিয়োগে ব্যর্থ হয় তাহলে সেই বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ৩ শতাংশ অর্থ জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন (জেপিইউএফ) এর ‘সহায়ক উপকরণ তহবিল’- এ জরিমানা হিসেবে প্রদান করা। এই তহবিলের মাধ্যমে জেপিইউএফ উন্নতমানের সহায়ক উপকরণ প্রতিবন্ধী মানুষকে বিনামূল্যে প্রদান করা।
# কর্মহীন বেকার গ্রামীন ও নগর দরিদ্র প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ন্যাশনাল স্কীম-এর আওতায় এনে বছরে কমপক্ষে ২০০ দিনের জন্য মজুরি ভিত্তিক কাজের ব্যবস্থা করা। তা না হলে ১৫০ দিনের জন্য বেকার ভাতা প্রদান করা।
# প্রতিবন্ধী ব্যক্তি স্ব-কর্মসংস্থানকে উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকার পূণঅর্থায়ন তহবিল সৃষ্টি করা এবং সেখান থেকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিনা জামানতে ৪ শতাংশ সুদে ঋণ প্রদান করা। কোটা পূরণে সফল ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে ‘বঙ্গবন্ধু আর্থিক অন্তর্ভুক্তি পুরষ্কার’ চালু করা।
# বাংলাদেশের সকল গণস্থাপনা ও গণপরিবহন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল মানুষের উপযোগি করতে তহবিল বরাদ্দ এবং প্রবেশগম্যতা নিশ্চিতে প্রতিটি তহবিলপ্রাপ্ত স্থাপনা ও পরিবহনের তালিকা প্রকাশ করা এবং এই তালিকাভ‚ক্ত পরিবহন ও স্থাপনাসমূহে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠন (ডিপিও)-এর মাধ্যমে প্রবেশগম্যতা নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা।
# অবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি উন্নয়ন অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সংগঠন ও অভিভাবক সংগঠনের কার্যক্রমকে বেগবান করতে এবং প্রতিবন্ধী মানুষদের আরো সংগঠিত করতে সংগঠনসমূহের প্রতিটি কার্যক্রমের ব্যাপকতা অনুযায়ী সরকারি তহবিল থেকে প্রতিবছর ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত অনুদান প্রদান করা।
# এছাড়াও অংশগ্রহণকারিদের ভাষায় নিম্নিলিখিত কিছু সুপারিশ উত্থাপিত হয়।
# ২০১৩ সালে ইশারাভাষা ইনস্টিটিউট গঠনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাজেট বরাদ্দের পাশাপাশি ইশারা ভাষা-ভাষী শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য দোভাষীর স্বীকৃতি ও তাদের জন্য বাজেট বরাদ্দ।
# প্রতিবন্ধী ব্যক্তি জন্য শ‚ল্কমূক্ত সহায়ক উপকরণ ও প্রযুক্তি পন্য আমদানি।
# কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য অগ্রাধিকার প্রণয়ন ও বাজেট বরাদ্দ।
# অবিলম্বে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য স্বাস্থ্য বীমা চালু করা
# ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সকল প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী ডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরির জন্য বাজেট বরাদ্দের ও মাই গভ-এর মতো সকল সরকারি এপস দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তি এবং গুরুতর প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য উপযোগী করতে বাজেট বরাদ্দ।
# প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ভাতা পেলে যেন শিক্ষা উপবৃত্তি, বয়ষ্ক ভাতা, লেকটেটিং মাদার ভাতা, সুদমুক্ত ঋণ, সহায়ক উপকরণ, অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা সহায়তা এবং জরুরি আর্থিক বা খাদ্য সাহয্য থেকে যেন বঞ্চিত না হয় তা নিশ্চিত করতে দাবি করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।