Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

মঠবাড়িয়ায় আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধে সম্মিলিত নাগরিক অধিকার ফোরাম গঠন

মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২১, ২:২৪ পিএম

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরশহরের বহেরাতলা হতে থানাপাড়া বাস ষ্ট্যান্ড পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্ণীতি ও নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে নিন্দার ঝড় বইছে। দক্ষিণাঞ্চলের জনগুরুত্বপূর্ণ এ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মানে সকল অনিয়ম, দুর্ণীতিরোধ ও সিডিউল অনুযায়ী করার লক্ষে লাগাতার আন্দোলনের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এমাদুল হক খানকে আহবায়ক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ উদ্দিন পলাশকে সদস্য সচিব করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট নামে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানাযায়, মঠবাড়িয়া পৌরশহরের বহেরাতলা হতে থানাপাড়া বাস ষ্ট্যান্ড পর্যন্ত ১৬৬০ মিটার ড্রেনসহ আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে সংশ্লিষ্ট সড়ক ও জনপদ বিভাগ ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়। প্রধানমন্ত্রীর একান্ত প্রচেষ্টায় একনেকের ওই টাকা বরাদ্ধ পাওয়ার পর ওয়েষ্টার কনষ্ট্রাকশন এ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিঃ নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ পায়। কার্যাদেশ পেয়ে ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সম্প্রতি ড্রেনসহ ৩ ইঞ্চি সিসি ও ৯ ইঞ্চি আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। কাজের শুরুতেই সিডিউল মাফিক কাজ না করে নি¤œমানের সিমেন্ট, পাথর ও রডসহ নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়ম দুর্ণীতির অভিযোগ উঠে। বিশেষ করে স্থানীয় একটি সুবিধাবাদী চক্র ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধির যোগসাজশে এই সড়কের পাশে ড্রেন নির্মাণে পাশর্^বর্তী ভবন ভাঙ্গা নিয়ে মালিকদের নিকট হতে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে। যা বিভিন্ন আইডি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম আজাদী বলেন, সড়ক ও জনপদের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছাড়াই গভীর রাতে এ ব্যস্ততম সড়কে ঢালাইয়ের কাজ করে। যাতে জনমনে কাজের মান নিয়ে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়।
জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের আইনজীবী এ্যাডভোকেট ফজলুল হক অভিযোগ করেন, ড্রেন নির্মানে উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মার্কেটের উকিল চেম্বারে লাল চিহ্ন দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দ্রুত সরানোর জন্য নির্দেশ দেয় ঠিকাদার ও স্থানীয় ফারুক হোসেন নামের এক সহযোগী। মালামাল সরিয়ে আমরা চেম্বার ভাড়া নেই। কিন্তু ঠিকাদারের লোকজন ও তাদের সহযোগীরা কতিপয় মালিকদের সাথে বৈঠক করে মোটা অংকের টাকা আদায় করে রাস্তা ও ড্রেন সংকোচ করে নির্মান কাজ শুরু করে। এতে বাঁধা দিলে তার সাথে দূর্ব্যবহার ও হুমকি প্রদানের অভিযোগ করেন। তিনি এ বিষয়ে মামলা দায়ের করেছেন বলে জানান।
সম্মিলিত নাগরিক অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব ও প্রেসক্লাবের সভাপতি জাহিদ উদ্দিন পলাশ বলেন, ডিজাইন মোতাবেক কাজ না হওয়ার অভিযোগ উঠলে সঠিক ভাবে কাজ বাস্তবায়নের দাবিতে মঠবাড়িয়ার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের ডাক দেই।
সম্মিলিত নাগরিক অধিকার ফোরামের আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা মো: এমাদুল হক খান বলেন, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্ণীতি ও সড়কের পাশে ভবন না ভাঙ্গার অজুহাতে মালিকদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ ওঠায় সর্বস্তরের জনগণকে নিয়ে মানসম্মত কাজ করার দাবিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। ইতিমধ্যে স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, সওজ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা সিডিউল মাফিক কাজের আশ^াস দিয়েছেন।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওয়েষ্টার কনষ্ট্রাকশন এ্যান্ড শিপিং কোম্পানি লিঃ এর প্রতিনিধি মো: মাহবুবুর রহমান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা সিডিউল মাফিক কাজ করছি। তবে কাজ করতে গিয়ে আমরা পৌরসভার মাটির তলদেশে অপরিকল্পিত পানির লাইনের পাইপ ও সওজ এর জমিতে অবৈধ স্থাপনা ভবন মালিকরা অপসারণ করে না নেওয়ায় কাজে কোন অগ্রগতি হচ্ছে না।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন বলেন, মহাসড়কের কাজ সিডিউলের বাহিরে করার কোন সুযোগ নেই। মঙ্গলবার আমি মঠবাড়িয়ায় চলমান সড়কের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সার্বক্ষনিক সড়ক ও জনপদের প্রকৌশলীর উপস্থিতিতে ঢালাইসহ সকল কাজ করার সংশিষ্ট ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ