Inqilab Logo

সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ১৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড রোগীর গড় খরচ ৫ লক্ষাধিক টাকা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০২১, ১২:৩৬ পিএম

দেশের ৮০ শতাংশ জনসংখ্যাকে কিভাবে কত সময়ের মধ্যে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আজ মঙ্গলবার সকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটি এ আহ্বান জানিয়েছে। ‘করোনা ভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক কোভিড-ডেডিকেটেড হাসপাতাল বন্ধ করার ফলে আইসিইউসহ চিকিৎসা সংকট ছিল। করোনা সংক্রমণের একবছর তিনমাস অতিবাহিত হলেও পরিকল্পনা অনুযায়ী আইসিইউ, ভেন্টিলেটর ইত্যাদি চিকিৎসা সুবিধার সম্প্রসারণ করা হয়নি। সারাদেশে কোভিড-১৯ এর জন্য নির্ধারিত ৬৬৪টি সরকারি আইসিইউ শয্যার মধ্যে ঢাকা শহরে ৩৭৪টি, চট্টগ্রাম শহরে ৩৩টি এবং বাকি ৬২ জেলায় ২৫৭টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। বাজেট এবং যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও সকল জেলায় ১০টি করে আইসিইউ শয্যা প্রস্তুতের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হয় নি। অনেক যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করে ফেলে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৩০০ আইসিইউ শয্যা, ১৬৬ ভেন্টিলেটর, ৩৩৫ হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানুলা।

সরকারি হাসপাতালের আইসিইউ সংকটের কারণে বেসরকারি হাসপাতালে ব্যয়বহুল চিকিৎসা গ্রহণে বাধ্য হয়েছে সাধারণ জনগণ এবং একজন কোভিড-১৯ রোগীর গড় খরচ ৫ লক্ষাধিক টাকা।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, টিকার প্রাপ্তি, মজুদ ও টিকা প্রদানের মধ্যে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা যায়। বাফার স্টক সংরক্ষণে দূরদর্শিতার ঘাটতি ছিল, ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৩ লাখের বেশি টিকাগ্রহীতার দ্বিতীয় ডোজ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। টিকা পরিকল্পনায় বিশেষজ্ঞ/কর্তৃপক্ষের বাইরে নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রবণতাও লক্ষণীয়।
যথাযথভাবে এলাকাভিত্তিক টিকার চাহিদা যাচাই করা হয়নি, ফলে সরবরাহ না থাকায় কোনো এলাকায় আকস্মিক সংকট এবং কোনো এলাকায় টিকার উদ্বৃত্ত থাকা ও ফেরত দেওয়ার ঘটনা লক্ষ্য করা গেছে বলে গবেষণায় উঠে এসেছে।

এতে আরও বলা হয়েছে, প্রচারে ঘাটতির কারণে প্রথম দিকে টিকাগ্রহীতার স্বল্পতা ছিল। পরবর্তীতে ষাটোর্ধ্ব ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের (যাদের মৃত্যুহার বেশি) পরিপূর্ণভাবে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে বিশেষ কোনো উদ্যোগ না নিয়েই নাগরিক নিবন্ধনের বয়সসীমা হ্রাস করা হয়। যথাযথভাবে চাহিদা যাচাইয়ের মাধ্যমে প্রবাসী জনগোষ্ঠীকে যথাসময়ে টিকার আওতায় আনা হয় নি।

একইসাথে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও সমন্বয়হীনতার কারণে প্রবাসী যাত্রীদের ব্যাপক দুর্ভোগ ও কর্মক্ষেত্রে ফিরতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, এবং টিকা সনদ না থাকায় প্রত্যেকের গড়ে ৬০-৭০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়।
এছাড়া কোনো পেশা/জনগোষ্ঠীর সকল সদস্যকেই পরিপূর্ণভাবে টিকার আওতায় আনা হয় নি। বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রচারে ঘাটতি, নিবন্ধন প্রক্রিয়া জটিল ও তাদের অনুকূলে না থাকায় নাগরিক নিবন্ধনের আওতায় স্বল্প আয়ের ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তির হার খুবই কম দেখা গেছে। টিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে নারীদের হার ছিল ৩৭ শতাংশ।
প্রচারে ঘাটতি, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধনের ব্যবস্থা না করায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মরত সকল কর্মীকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয়নি বলে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বেসরকারি হাসপাতাল, জরুরি পরিষেবা, ব্যাংক, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি পেশার জনগোষ্ঠী কোভিডকালীন সময়ে দায়িত্বরত থাকলেও টিকায় অন্তর্ভুক্তির হার কম। অধিকাংশ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে ৩য়-৪র্থ শ্রেণির কর্মী (৫৬%), পরিচ্ছন্নতা কর্মী (২৬.৬%), মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের টিকার আওতায় আসেনি। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানে টিকা গ্রহণে অনাগ্রহ বা ভীতির কারণে (৬১.৬%) এবং ৪০ বছরের কম বয়স থাকার (৫১.৬%) কারণে কর্মীরা টিকা গ্রহণ থেকে বিরত থাকছে বলে দেখা যায়, এবং অনাগ্রহ বা ভীতি দূর করতে উদ্যোগেরও ঘাটতি রয়েছে। ৯.১% অগ্রাধিকার প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান কর্মীদের নিবন্ধন ও টিকা গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি; বাকি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রে কর্মীদের শুধুমাত্র মৌখিকভাবে নির্দেশ প্রদান (৬৮.১%) করেছে।

টিআইবির জরিপে দেখা যায়, অনলাইনভিত্তিক নিবন্ধন প্রক্রিয়ার কারণে ৭৪.৪% টিকাগ্রহীতাকে অন্যের সহায়তায় নিবন্ধন নিতে হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে বিকল্প নিবন্ধনের উদ্যোগ ছাড়াই স্পট রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ বাতিল করা হয়েছে।

 



 

Show all comments
  • Dadhack ৮ জুন, ২০২১, ১:১৪ পিএম says : 0
    If our country rule by Quranic law then ruler sacrifice his life for general people. In our country due to Taghut ruler people are not getting proper health care, who has the ability to 5 Lak taka for treatment of Covid???????? those who are rich or ruler they will get all the facility where as in Islam every body is equal, it doesn't distinguish who is ruler or who is rickshaw puller they will get equal right for all the fundamental things.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ