পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতি অর্থবছরের মতো এবারও ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছে সরকার। আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯৪ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। নতুন অর্থবছরে শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ৯ হাজার ১১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে (২০২০-২০২১) এই খাতে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছিল ৮৫ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা। যা ছিল মোট বাজেটের ১৫ দশমিক ১ শতাংশ। শতাংশের হিসেবেও এবার এই খাতে দশমিক ৪ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। যদিও সংশোধিত বাজেটে এই বরাদ্দ কমে দাঁড়ায় ৭৮ হাজার ৬৮৪ কোটি টাকা।
শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে এবারের বাজেট বিগত যে কোন সময়ের তুলনায় এটাই সর্বোচ্চ বরাদ্দ। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন উপলক্ষে বাজেট বক্তৃতায় শিক্ষাখাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়ার কথা জানান। যা বাজেটের মোট বরাদ্দের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ। তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বিশেষ করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে বিবেচনায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নতুন অর্থবছরের ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেটে শিক্ষাখাতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ প্রস্তাব করলেও তা জিডিপির অনুপাতে সামান্যই। আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী, একটি দেশের শিক্ষা খাত জিডিপির ৬ শতাংশ বা বাজেটের ২০ শতাংশ বরাদ্দ পেলে তা আদর্শ ধরা হয়। জাতীয় সংসদে আসন্ন নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে ২৬ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ছিল ২৫হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা (সংশোধিত)। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে প্রস্তাব করা হয়েছে ৩৬ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা, যা চলতি অর্থবছরে ৩২ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা (সংশোধিত)। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে নতুন অর্থবছরে ২১ হাজার ২০৪ কোটি, চলতি অর্থবছরে ১১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে নতুন অর্থবছরে ১ হাজার ৭২০ কোটি, চলতি অর্থবছরে ১ হাজার ৩১ কোটি টাকা। কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে নতুন অর্থবছরে বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা, চলতি অর্থবছরে এটি ৭ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। শিক্ষার্থীদের পাঠক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ‘আমার ঘরে আমার স্কুল’ শিরোনামে বাংলাদেশ টেলিভিশনের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পাঠদান চালু করাসহ অনলাইন, বাংলাদেশ বেতার ও কমিউনিটি রেডিও’র মাধ্যমে পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখা হয়েছে। এতে প্রায় ৪ কোটি শিক্ষার্থীকে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট রাখা, পাঠ চর্চা ও পাঠে মনোযোগী রাখা সম্ভবপর হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষার বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের বিগত ১২ বছরে সরকারের গৃহীত যুগোপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপে প্রাথমিক শিক্ষায় বিভিন্ন সূচকে সাফল্য অর্জিত হয়েছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষার মান আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উন্নিত করার ও প্রায়োগিত শিক্ষার প্রসারে বহুমুখী উদ্যোগ চলমান রেখেছি। এর মধ্যে- প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ, বিদ্যালয়বিহীন এলাকায় বিদ্যালয় ও পিটিআই স্থাপনসহ অন্যান্য অবকাঠামো স্থাপন কার্যক্রম বাস্তবায়নাধীন আছে। এছাড়া উপবৃত্তি প্রদান, স্কুল মিল পলিসি বাস্তবায়নের ফলে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের বিষয়ে বক্তৃতায় বলা হয়, সরকার টেকসই ও মানসম্মত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার সম্প্রসারণে সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করে আসছে। ইতোমধ্যে মাধ্যমিক শিক্ষার হার ও জেন্ডার সমতায় অর্জিত সাফল্য ধরে রাখার লক্ষ্যে সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণের সমন্বয়ে শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ছাত্র ও শিক্ষকদের বৃত্তি-উপবৃত্তিসহ আর্থিক সহায়তা প্রদান, মেধার বিকাশে নানারূপ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, সহায়ক নীতিমালা ও পরিবেশ তৈরি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং অবকাঠামো নির্মাণ ও উন্নয়ন। বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের আর্থিক সুবিধা প্রদান, বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ, ই-বুকের প্রচলণ, উপজেলা আইসিটি ট্রেনিং ও রিসোর্স সেন্টার স্থাপন অব্যাহত থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।