পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৬ লাখ ৩ হাজার ৬শ’ ৮১ কোটি টাকার বাজেট আজ বৃহষ্পতিবার ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। কিন্তু এই খরচের ৬৫ শতাংশ অর্থ, আয়ের ব্যবস্থা করা গেছে। বাকি ৩৫ শতাংশ টাকা সরকারকে ধার করতে হবে। আর এর ফলে, দেশের ৫০ তম বাজেটে এসে প্রথমবারের মতো জিডিপির ৬ শতাংশের বেশি ঘাটতিতে থাকতে হচ্ছে সরকারকে।
করোনা মহামারী ভোগাবে আগামী অর্থবছরের পুরোটা সময়। বাজেট তৈরিতে এমন বিবেচনাই সামনে রেখেছে অর্থমন্ত্রণালয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবার যে বাজেট ঘোষণা করবেন তার সম্ভাব্য আকার হচ্ছে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। বিপরীতে আয়ের সংস্থান করতে পেরেছেন ৩ লাখ ৯২ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। যার মধ্যে এনবিআরকে আদায় করতে হবে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার ট্যাক্স-ভ্যাট। এনবিআর এর বাইরের কর থেকে ১৬ হাজার কোটি টাকা পাওয়ার আশা করছেন অর্থমন্ত্রী। আর কর ব্যতিত প্রাপ্তির লক্ষ্য ৪৩ হাজার টাকা। বাজেটে ৩৪৯০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে বিদেশি অনুদান।
আর তাই নতুন বাজেটে কর ব্যবস্থায় নানা কর ছাড় দেয়া হচ্ছে। এতে ধনীদের ওপর করভার বাড়ছে। আড়াই শতাংশ কমবে করপোরেট কর। বার্ষিক লেনদেনে ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত করমুক্ত থাকবেন নারী উদ্যোক্তারা। কৃষিখাতের নতুন বিনিয়োগে আসতে পারে ১০ বছরের কর অবকাশ। তবে মৎস্য চাষের আয়ে বসতে পারে বাড়তি কর। আবার একক মালিকানার কোম্পানির কর হতে পারে ২৫ শতাংশ। এবারেও অব্যাহত থাকছে অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ। বাজেটে আয়ের মূল উৎস রাজস্ব। সেই রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যেই এবার ধনীদের কাছ থেকে বেশি কর আদায়ের পরিকল্পনা করছে সরকার। বর্তমানের সাত স্তর ভেঙে নতুন বাজেটে সম্পদ কর বা সারচার্জের স্তর হচ্ছে পাঁচটি। নতুন নিয়মে সম্পদ কর দিতে হবে না ৩ কোটি টাকা পর্যন্ত। আর ৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদ থাকলে আয়করের ওপর সারচার্জ হতে পারে ৩৫ শতাংশ।
তবে করের দিক থেকে ছাড় পাচ্ছে করপোরেট খাত। বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আসে এই খাত থেকে। নতুন বাজেটে উৎপাদনশীল খাতে কর কমতে পারে আড়াই শতাংশ হারে। অভ্যন্তরীণ উৎপাদন, সরবরাহ ও কর্মসংস্থান বাড়াতে এই সুযোগ দিচ্ছে সরকার। সুখবর রয়েছে নারী উদ্যোক্তাদের জন্যও। ৭০ লাখ টাকা পর্যন্ত কর অব্যাহতি মিলতে পারে বার্ষিক লেনদেনে। এখন যেই সুবিধা মিলছে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত। বাণিজ্যে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে করমুক্ত লেনদেন সীমা বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে নতুন বাজেটে।
আরো বড় খবর রয়েছে কৃষিখাতের নতুন বিনিয়োগে। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে শাকসবজি, ফলমূল, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং কৃষিযন্ত্র তৈরিতে আগামী অর্থবছরে নতুন বিনিয়োগকারীরা পেতে পারেন ১০ বছরের কর অবকাশ সুবিধা। তবে এক্ষেত্রে ন্যূনতম বিনিয়োগ হতে হবে এক কোটি টাকা। রয়েছে আরো কিছু শর্তও।
কৃষিখাতে কর অব্যাহতি থাকলেও মৎস্য চাষের আয়ে কর বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে। মাছ চাষে ৩০ লাখ টাকার বেশি আয় করলেই তার ওপর ১৫ শতাংশ হারে কর দিতে হতে পারে। তবে করমুক্ত থাকবে মৎস্যচাষের আয়ের প্রথম ১০ লাখ টাকা। আসন্ন বাজেটে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এমন প্রস্তাব করবেন বলে জানা গেছে।
আমদানি পর্যায়ে আগাম আয়কর কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। বর্তমানে ২ থেকে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম আয়কর দিতে হয়। যা কমিয়ে ১ থেকে ৩ শতাংশ করতে পারে এনবিআর। অন্যদিকে কাঁচামাল আমদানিতে আছে ৪ শতাংশ ভ্যাট। এ হার হতে পারে ৩ শতাংশ। এতে ব্যবসায়ীদের কাছে নগদ অর্থের পরিমাণ বাড়বে।
ভ্যাট আইনে ফাঁকির জরিমানা ও সরল সুদ হার দুটিই কমতে পারে বাজেটে। এখন ফাঁকি দেয়া পরিমাণের দ্বিগুণ জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। যেটি হতে পারে সমপরিমাণ। আর সময় মতো সুদ না দিলে মাসিক দুই শতাংশ হারে সরল সুদ বাজেটে কমে হতে পারে ১ শতাংশ।
কর রেয়াত সুবিধা কমছে ব্যক্তি বিনিয়োগে। সুযোগ ছিলো দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত করমুক্ত বিনিয়োগের। আসছে বাজেটে এই সুবিধা কমে হচ্ছে এক কোটি টাকা। বাজেটে কমতে পারে ব্যক্তি মালিকানার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ন্যূনতম কর। একই সঙ্গে একক মালিকানা কোম্পানির কর হতে পারে ২৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে এমন ঘোষণা দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
নতুন বাজেটে কর অব্যাহতি পাবে শরিয়াহভিত্তিক বন্ড ‘সুকুক’ এর মুনাফা। ‘সুকুক’ বন্ডে বর্তমানে উৎসে কর ৫ শতাংশ। সেই সঙ্গে কমতে পারে করপোরেট এবং ট্রেজারি বন্ডের করহারও।
চলতি বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে টাকা প্রকাশ্যে এনেছেন ১০ হাজারের বেশি করদাতা। এতে ১৪শ’ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব পেয়েছে সরকার। তাই আগামী বাজেটেও এই সুযোগ বহালের পক্ষে আছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ১০ শতাংশ কর দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ থাকতে পারে পুঁজিবাজার, জমি, ভবন, ব্যাংক ডিপোজিট ও সঞ্চয়পত্র কেনায়।
এছাড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে আগামী বাজেটে বিনিয়োগকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। করোনাকালে পুরোনো শিল্পকে টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি নতুন শিল্প স্থাপনে নানা কর ছাড় দেয়া হবে। এক্ষেত্রে শুধু শিল্প খাতেই নয়; স্বাস্থ্যখাতেও বেসরকারি বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে কর অবকাশ সুবিধা দেয়া হচ্ছে এবারের বাজেটে বলে অর্থমন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।
অবশ্য ইতোমধ্যে নতুন কর আরোপ না করে কর ফাঁকি ও অর্থ পাচার বন্ধ করার পদক্ষেপ নিয়ে সম্প্রসারণমূলক বাজেট করার সুপারিশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।