Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাজেটের অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে

আসছে বাজেটে করণীয় বিষয়ক আলোচনা সভায় সানেম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২১, ১২:০৪ এএম

শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, বাজেটের অর্থ ব্যবহারে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। করোনার কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা দরকার। দারিদ্র্য দূরীকরণ, বৈষম্য নিরসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)।
গতকাল করোনাকালীন সময়ে দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির চালচিত্র তুলে ধরে আসছে বাজেটে করণীয় বিষয়ক আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানায় বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি। করোনার প্রকোপ লাঘব করে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে আসছে বাজেটে মূল নিয়ামক হওয়া উচিত মানুষের জীবন ও জীবিকা। এজন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং কৃষি এ চার খাতে সবোর্চ্চ গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ এ গবেষণাটির।

‘বাজেট ২০২১-২২: বাস্তবতা এবং প্রত্যাশা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সানেমের গবেষণা পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর ড. সায়মা হক বিদিশা। মূল আলোচক ছিলেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান।

ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, প্রতিবছর সম্পদ কর নিয়ে আলোচনা হয়, কর জালের আওতা বাড়ানো নিয়ে আলোচনা হয়, কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। ডিজিটালাইজেশন বা অন্যান্য সংস্কার বাস্তবে হচ্ছে না। ফলে সরকারের রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ছে না। তারা বলেন, বাংলাদেশের কর-জিডিপির অনুপাত ১০ শতাংশের নিচে, বিশ্বে যাদের কর-জিডিপির অনুপাত কম, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। বক্তারা বলেন, রাজস্ব আদায় কম হওয়ার কারণে সরকারের পক্ষে সবাইকে প্রণোদনার আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সবকিছু সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ব্যবসায়িক সংগঠনগুলোর এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা উচিত। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ কেন সরকারের দিকে তাকিয়ে থাকবে, তারা নিজেরাও শ্রমিকের কিছু দায়িত্ব নিতে পারে। তাদেরও দায়বদ্ধতা আছে।

ওয়েবিনারে সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের প্রফেসর সেলিম রায়হান বলেন, এখন প্রবৃদ্ধি নিয়ে বুঁদ হয়ে থাকার সময় নেই। প্রবৃদ্ধি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা জাদুর কাঠি নয়। এটা দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হবে না। এবারের বাজেটের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, বড় বড় খাত ভালো করলেও এসএমই খাত অনেক পিছিয়ে আছে। আবার কোভিডের অভিঘাতে দেশে নতুন দরিদ্র সৃষ্টি হয়েছে। দারিদ্র্য, অসমতা, কর্মসংস্থান এ তিনটিকে প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি নীতি প্রণয়নের আহ্বান জানান। সেলিম রায়হানের মত, সরকার বাজেটেরে ৬-৭ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারে। দরিদ্র লোকদের যে নগদ সহায়তা দেয়া হচ্ছে, তা সারা বছর দিলেও জিডিপির ২ শতাংশের বেশি খরচ হবে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ মানুষদের হাতে টাকা এলে অর্থনীতি গতিশীল হবে। সে জন্য অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে।

মূল প্রবন্ধে সায়মা হক বিদিশা বলেন, এ মহামারিকালেও স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ পর্যাপ্ত নয়। শুধু বরাদ্দ বাড়ালে হবে না, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ব্যয়ের প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, নতুন দরিদ্রদের যুক্ত করতে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়াতে হবে। এখন যে তালিকা আছে, তাও আবার ভুলে ভরা। তাই মনিটরিং বাড়াতে হবে। তার মতে, নতুন দরিদ্রদের নিরাপত্তাজালে নিয়ে আসতে সরকারের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্স বা অনুক্রমিক কর চালু করতে হবে, যে বিষয়ে অনেক দিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বাজেট

১৩ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ