Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতের কারণে বিচ্ছিন্ন বাংলাদেশ

করোনার ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ ও ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ দায় সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস প্রবেশ বন্ধ করতে পারলে এবং বিদেশ ফেরতদের যথাযথ কোয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ মে, ২০২১, ১২:০২ এএম

প্রতিবেশী ভারতের কারণে বহির্বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এরই মধ্যে কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের বিমান যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে ফের বাংলাদেশের যোগাযোগ শুরু হচ্ছেÑ আবারও বন্ধ হচ্ছে। করোনার ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ গোটা বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে। এ ছাড়াও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামের নতুন ভাইরাস দেশটিকে বিপর্যয়কর অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। নতুন নতুন ওই সব ভাইরাস থেকে দূরে থাকতেই মূলত ওই সব দেশের এই যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা। ভারতের প্রতিবেশী হওয়ায় বাংলাদেশের সঙ্গেও অনেক দেশ আকাশপথ বন্ধ করে দিচ্ছে। কারণ বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্ত বন্ধ থাকলেও সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন মানুষ যাতায়াত করছে। আর ওই সব মানুষ করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভাইরাস শরীরে বহন করে নিয়ে আসছে বাংলাদেশে। আর বাংলাদেশে ‘দুর্বল কোয়ারেন্টিন’ ব্যবস্থা বুঝতে পেরে বাংলাদেশিরা ওইসব দেশে গেলে সেখানে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়াতে পারে, সে আশঙ্কায় আকাশপথ বন্ধ করে দিচ্ছে। গত দুই মাসে প্রায় অর্ধশতাধিক দেশ কয়েক দফায় বাংলাদেশিদের সেখানে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে করে বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। আর করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের দায় বহন করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে।

ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের কারণে বিশ্বের যেসব দেশে বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করছে, সেসব দেশের কয়েকটিতে বাংলাদেশের বহু প্রবাসী শ্রমিক কাজ করে থাকেন। যোগাযোগ বন্ধ হওয়ায় নতুন করে কর্মী যাওয়া দূরের কথা, যারা আগে থেকে কাজ করেন তারাও যেতে পারছেন না। এতে করে রেমিট্যান্স এবং অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতের সঙ্গে সীমান্ত যোগাযোগ কঠোরভাবে বন্ধ করা গেলে অনেকে দেশই বাংলাদেশিদের সে দেশে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেবে। ভারতের ভয়াবহ নতুন করোনাভাইরাস ও ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের মধ্যে দুই দেশের সীমান্ত দিয়ে অবাধ যাতায়াত অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশিদের ওই সব দেশ প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করছে। মূলত ভারতপ্রেমই বাংলাদেশের সর্বনাশ করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজ নাগরিকদের উদ্দেশে ১১৬টি দেশে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার সুপারিশ করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। এ তালিকায় রয়েছেÑ ভারত, বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, ইসরাইল, মেক্সিকো, জার্মানি, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, আফগানিস্তান, ফিনল্যান্ড, মিসর, বেলজিয়াম, তুরস্ক, ইতালি, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও স্পেন ইত্যাদি। কারণ হিসেবে বলা হয়, ওই সব দেশ করোনাভাইরাস অতিউচ্চ সংক্রমণের ঝুঁকিযুক্ত। এছাড়া নেপাল, চীন ও জাপানের মতো কয়েকটি দেশে ভ্রমণের বিষয়টি ‘পুনর্বিবেচনা করার’ সুপারিশ করা হয়েছে। শ্রীলংকা ও ভুটানকে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও প্রথম পর্যায়ের ভ্রমণ সতর্কতার তালিকায় রাখা হয়েছে।

এদিকে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় নেপালকে অতি ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে বেবিচক। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার থেকে দেশটির সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। গত রোববার এক সার্কুলারে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন বেবিচক। বেবিচক পরিচালক (ফ্লাইট স্ট্যান্ডার্ড রেগুলেশন অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স) গ্রুপ ক্যাপ্টেন ইমরানুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই সার্কুলারে বলা হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে করোনার সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি থাকায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নেপালের সঙ্গে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ থাকবে। নেপাল ছাড়াও অন্য ১২টি দেশের ওপরও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। দেশগুলো হচ্ছেÑ আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কলম্বিয়া, কোস্টারিকা, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, ভারত, ইরান, মঙ্গোলিয়া, ওমান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও তিউনিসিয়া।

এর আগে বিশ্বব্যাপী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ায় গত ১৪ এপ্রিল আন্তর্জাতিক সব রুটের বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করে দেয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। পরে গত ৩০ এপ্রিল কর্তৃপক্ষ সীমিত আকারে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলের অনুমতি দিয়ে সার্কুলার জারি করে। বেবিচকের ওই সার্কুলারেই করোনার উচ্চ ঝুঁকিযুক্ত ১২ দেশ থেকে বাংলাদেশে যাত্রী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়। তবে করোনার ভারতীয় ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ এবার নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যুক্ত করে বাংলাদেশ। দেশগুলো বলছে, করোনার ভারতীয় ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে আগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছিল আগেই। সর্বশেষ গত বুধবার এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে কুয়েতও। অথচ বাংলাদেশে করেনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ঠেকাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া হলেও সীমান্ত পরিস্থিতি ‘বজ্র আঁটুনি ফসকা গেড়ো’র মতোই। প্রতিদিন সীমান্ত দিয়ে মানুষ নির্বিঘ্নে আসা-যাওয়া করছেন।

কুয়েতের স্থানীয় বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (ডিজিসিএ) বাংলাদেশীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এতে বাংলাদেশ ছাড়াও দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলংকা থেকে আগতদেরও প্রবেশ বন্ধ করে দেয়ার কথা বলা হয়। ওমান সে দেশে বাংলাদেশীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতও (ইউএই) বাংলাদেশসহ চারটি দেশ থেকে যাত্রী ও ফ্লাইট প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। নিষেধাজ্ঞার অধীন অন্য তিন দেশ হলোÑ নেপাল, শ্রীলংকা ও পাকিস্তান। ইতালি বাংলাদেশিদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে গত মাসেই। করোনার নতুন ধরনের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ ও ভারতের ওপর একযোগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভূমধ্যসাগরীয় দেশটি। গত ২৯ এপ্রিল জারি করা এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় বলা হয়, বাংলাদেশ ও ভারতে অবস্থান করেছে, তাদের কেউই ইতালিতে ঢুকতে পারবে না। তবে দেশটির নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই, তৃতীয় এমন কোনো দেশে ১৪ দিন অবস্থানের পর ইতালিতে প্রবেশ করা যাবে।

বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ এসব দেশে বাংলাদেশীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার মূল কারণ করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট। ভারতে করোনার যে ভ্যারিয়েন্টের পাদুর্ভাব ঘটেছে তা খুবই মারাত্মক। দেশটির প্রায় ৩০টি রাজ্যে এ করোনাভাইরাস ছড়িয়েছে। প্রতিদিনই ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে আর প্রতিদিন মারা যাচ্ছেÑ ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ। এর মধ্যে নতুন ভাইরাস ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। দেশটিতে ১০ হাজার মানুষ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকজন মারাও গেছেন। সাদা ফাঙ্গাস ও ইয়েলো ফাঙ্গাসের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। দেশটির কয়েকটি রাজ্যে রাতে কার্ফু জারি করা হচ্ছে। একরাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যাতায়াত সীমিত করে দেয়া হয়েছে। অথচ বাংলাদেশ কাগজে-কলমে সীমান্ত বন্ধ করে দিলেও দেশটি থেকে প্রতিদিন মানুষ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। বিশেষ করে ট্রাক ড্রাইভাররা কোনো বিধি নিষেধ ছাড়াই সীমান্ত দিয়ে আসা যাওয়া করছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কয়েকটি সীমান্ত জেলাসহ ৩৭টি জেলাকে করোনার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ জেলা হিসেবে ঘোষণা করেছেন। অথচ সীমান্ত অরক্ষিতই রয়ে গেছে। বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তে অবাধে মানুষের আসা যাওয়া এবং কোয়ারেন্টিনের দুর্বলতা, কোয়ারেন্টিন থেকে মানুষের পালিয়ে যাওয়া এমনকি ভারতের করোনা ভ্যারিয়েন্ট বহনকারী রোগীদের হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সীমান্ত জেলায় কোয়ারেন্টিনে অবাধে মানুষ যাতায়াত করছে। স্বাস্থ্যবিধি মানছে না; কোথাও পচা দুর্গন্ধযুক্ত খাবার দেয়ায় মানুষ পারিয়ে যাচ্ছে। শুধু চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসা ৭০০ মানুষকে কোয়ারেন্টিনে রেখে পচা দুর্গন্ধযুক্ত খাবার দেয়া হচ্ছে। পচা খাবার দেয়ায় হোটেল সিলগালা করতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পর্যন্ত বসাতে হয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশকে করোনা ছড়ানোর দেশ হিসেবে চিহ্নিত করছে। এমন চিত্র যশোর, খুলনা সব কোয়ারেন্টিনেই। ফলে বাংলাদেশে কোয়ারেন্টিনের মান নিয়ে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার ৮ থেকে ২০ শতাংশে উঠানামা করলেও সীমান্তবর্তী জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনা সংক্রমণের হার ৬৩ শতাংশ এবং পার্শ্ববর্তী জেলা রাজশাহীতে এই হার ৪১ শতাংশে উঠেছে। এ জেলাগুলোতে ভাইরাসের সংক্রমণশীলতা অত্যধিক। এর মধ্যেই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় এক সাপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু লকডাউনের মধ্যেই দেখা যায়, জেলার সোনামসজিদ স্থল বন্দরে ভারতীয় ট্রাক চালক ও বাংলাদেশি ট্রাক চালকরা আসা যাওয়া করছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানা বা সামাজিক দূরত্ব রক্ষা দূরের কথা তাদের কোয়ারেন্টিনে নেয়া হচ্ছে না। এ নিয়ে টেলিভিশনে সরাসরি সরেজমিন খবর প্রচার হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) এবং করোনা সংক্রান্ত মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, সীমান্তবর্তী জেলাগুলো সংক্রমণের হার বেশি। এক্ষেত্রে দেশবাসীকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়বে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান বলেন, সীমান্ত জেলাগুলোতে পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পদক্ষেপ নিতে হবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মতো এলাকাভিত্তিক লকডাউন করা যেতে পারে। ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট যেন আসতে না পারে, সে লক্ষ্যে কার্যকর কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪০ শতাংশের ওপরে সংক্রমণ রয়েছে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও খুলনায়। ২০ থেকে ২৯ শতাংশ সংক্রমণ রয়েছে সিলেট, ঝালকাঠি, রাজশাহী, নাটোর ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা এবং ফরিদপুরে। এছাড়া ১০ থেকে ১৯ শতাংশ সংক্রমণের হার দিনাজপুর, সিরাজগঞ্জ, মৌলভীবাজার, ফেনী, রংপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, বরিশাল, সাতক্ষীরা, গাজীপুর বগুড়া, গোপালগঞ্জ, যশোর, মাদারীপুর চট্টগ্রাম, রাজবাড়ী, মাগুরা, নওগাঁ, কক্সবাজার, ভোলা, নড়াইল, লক্ষ্মীপুর, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নেত্রকোনা এবং টাঙ্গাইল জেলায়। গত ১৮ মে এই জেলাগুলোকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর আগে ৮ মে বাংলাদেশে প্রথম করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত করা হয়। আর গত সাপ্তাহে ভারতের ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ শনাক্ত করা হয়। বাংলাদেশে এই দুই ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
সম্প্রতি করোনার ‘ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট’ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ, নেপাল ও পাকিস্তান থেকে আগতদের প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে থাইল্যান্ড। ওমান ও বাংলাদেশিদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। ২৪ এপ্রিল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে। জনশক্তি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোও বলছে, ভারতের ভ্যারিয়েন্টের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশি প্রবেশে কঠোরতা এবং হঠাৎ ফ্লাইট বন্ধ হওয়ায় নতুন কর্মীরা যেমন শঙ্কায় পড়ছেন, তেমনি বিপদে পড়ছেন ছুটিতে আসা কর্মীরা। কারণ যারা ছুটিতে এসেছিলেন তাদের ভিসা, আকামার মেয়াদ শেষ হওয়ার পথে। তবে সউদী আরবের সঙ্গে এখনো ফ্লাইট চালু রয়েছে। তবে এক্ষেত্রে করোনার টিকা না নেয়া যাত্রীদের প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর খরচও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই বহন করতে হবে। ২০ মে থেকে এ ব্যবস্থা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সউদী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। আপাতত প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ন্যূনতম সময়সীমা রাখা হয়েছে ৭ দিন। এ কোয়ারেন্টিনে থাকা এবং টাকা জমা দেয়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে সোনারগাঁও হোসেলে সাউদিয়া এয়ারলাইন্সের কাউন্টারের সামনে মানুষ ভিড় করছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে উচ্চমাত্রায় করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। সে দেশে নতুন ভাইরাস ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সারাবিশ্বের মানুষের কাছে আতঙ্ক তৈরি করছে। বাংলাদেশ শুধু ভারতে যাতায়াত বন্ধ করতে পারলেই বাংলাদেশিদের এতো দেশে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়তে হতো না। মূলত ভারতপ্রেমের কারণেই বিদেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারের সর্বনাশ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।



 

Show all comments
  • Sayma Akter ২৮ মে, ২০২১, ১২:৫৮ এএম says : 0
    আল্লাহ আপনি আমাদের সকলকে রক্ষা করুন, সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুন। যাদের এই রোগ হয়েছে তাদের সুস্থ করে দিন আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Sajeda Samad ২৮ মে, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
    ব্ল্যাক ফাংগাস কোন রোগ নয়।এটি এক ধরনের ছত্রাক। এই ছত্রাক কোটি কোটি বছর থেকেই আমাদের আশেপাশে আছে আর থাকবে। আর এই রোগটির নাম মিউকরমাইকোসিস। এটি ৩ ধরনের ছত্রাক দিয়ে গঠিত।রাইজোপাস,এপসিডিয়া,আর মিউকর এই ৩ ধরনের ছত্রাকের স্পোর দিয়ে গঠিত। পাউরুটি ৩/৪ দিন রেখে দিলে যে ছত্রাক টি আক্রমণ করে এটি সেই ছত্রাক।বাতাসে হাত ঘোরালেও ১০/১২ টা ধরা যাবে।তবে এটি ছোয়াচে নয়। এটি মারাত্মক একটি রোগ। করোনার হবার কারনে মোটামুটি সবাইকে স্টেরয়েড দিচ্ছেন ডাক্তাররা।এটির কারনে মূলত এটি বেশি ছরাচ্ছে।সাধারণ মানুষের আতংকিত হবার কোন কারন নেই। যাদের ইমিউন পাওয়ার কম, ক্রনিক ডিজিজ আছে এমন, স্টেরয়েড নিচ্ছেন এমন হাই সুগার রোগীদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি।
    Total Reply(0) Reply
  • Azim Sisir ২৮ মে, ২০২১, ১২:৫৯ এএম says : 0
    আল্লাহ ভরসা আল্লাহ সবাইকে রক্ষা কর।
    Total Reply(0) Reply
  • MD FOKHRUL ISLAM ২৮ মে, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
    করোনা আর ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নামক এই আল্লাহর গজব কে ভয় না করে.. যিনি এই গজব দিয়েছেন তাকে ভয় করুন..আর তার এবাদত করুন. অবশ্যই এই গজব মুমিন এর জন্য নয়.. ইনশাআল্লাহ আল্লাহ এই রোগ থেকে আমাদের সবাইকে হেফাজত
    Total Reply(0) Reply
  • Amar Ami ২৮ মে, ২০২১, ১:০১ এএম says : 0
    আর বন্যার পানি আসছে চোরাই পথে কোরবানির গরু আসবে এসব মাথায় রাখাও দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • Valiant Younker ২৮ মে, ২০২১, ১:০৪ এএম says : 0
    হে আমাদের রব! আমাদের সকলকে,,, কঠিন রোগ বিমার এবং মহামারী থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Shahed Sorder ২৮ মে, ২০২১, ১:০৬ এএম says : 0
    ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ভয়ে আমরা আতঙ্কিত নই মাফিয়া ফাঙ্গাসের হাত থেকে জাতি মুক্তি চায়
    Total Reply(0) Reply
  • MD FOKHRUL ISLAM ২৮ মে, ২০২১, ১:০৮ এএম says : 0
    পৃথিবী আর কখনও মহামারী শূন্য হবে না এখন একটার পর একটার সাথে লড়তে হবে
    Total Reply(0) Reply
  • Md Faruque Ahmed ২৮ মে, ২০২১, ১:০৯ এএম says : 0
    একেই বলে মরার উপর খারার ঘা।একদিকে করোনা,অন্যদিকে ব্লাক ফাঙ্গাস- হোয়াইট ফাঙ্গাস, আরেকদিকে সাইক্লোন -সত্যি ভীষণ বাজে সময় পার করছে মানুষ।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdul Kader Abdul Kader ২৮ মে, ২০২১, ১:১০ এএম says : 0
    আল্লাহ পারেন সব কিচু করিতে, তাই এক মাত্র আল্লাহ আমাদের রব তিনিই আমাদের রহ্মা করিবেন,ইনশাআল্লাহ
    Total Reply(0) Reply
  • মেঘদূত পারভেজ ২৮ মে, ২০২১, ১:১০ এএম says : 0
    ভারতের সাথে সীমান্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হোক। এমনিতেই আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ+দুলাল+মিয়া ২৮ মে, ২০২১, ২:০১ এএম says : 0
    সাবধান বাংলার গর্ব বডার গাড,নিজের মাতৃ ভূমি আপনাদের মায়ের মতো সরণ করবেন ,এখন পযন্ত আপনাদের সহযোগিতায় বডার ঠিক থাকাতে আমাদের দেশকে আল্লাপাক রক্ষা করিয়াছে।
    Total Reply(0) Reply
  • iqbal ২৮ মে, ২০২১, ৯:৩৮ পিএম says : 0
    we should closed india border immediatly Otherwise we can not survive.All important countries closed flights from bangladesh.So we loosing our remitence day by day.
    Total Reply(0) Reply
  • iqbal ২৮ মে, ২০২১, ১০:২০ পিএম says : 0
    We should close border immediatly.Otherwise we will loose our remitence.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ